ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

গোমাংস খাওয়া নিয়ে পোস্ট দিয়ে গ্রেপ্তার শিক্ষক

গোমাংস খাওয়া নিয়ে পোস্ট দিয়ে গ্রেপ্তার শিক্ষক

ভারতে বিজেপি শাসিত রাজ্য ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী অধ্যাপক জিতরাই হাঁসদা গোমাংস খাওয়ার অধিকার নিয়ে ফেসবুকে একটা পোস্ট দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় ওই অধ্যাপককে কলেজ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিলো। এর দু বছর সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি কলকাঠি নাড়ায় কলেজ থেকে সাসপেন্ডও হয়েছেন ওই অধ্যাপক।

জিতরাইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ফেসবুকে পোস্টটি করেছিলেন ওই অধ্যাপক। তারপরেই তার নামে অভিযোগ দায়ের হয়। ওই অধ্যাপককে থানায় হাজিরা দিতে বলা হলেও তখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ওই ঘটনার প্রায় দু’বছর পরে, রোববার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন তিনি। তার আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক স্বার্থেই ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জিতরাইকে। ভোটের আগে আদিবাসীদের রাগিয়ে দিয়ে তাদের সমর্থন হারাতে চায়নি রঘুবর দাসের নেতৃত্বাধীন রাজ্যের বিজেপি সরকার। ঝাড়খণ্ডে এ বার ১৪টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১২টি-ই পেয়েছে বিজেপি। অনেকেই মনে করছেন, আদিবাসী ক্ষুব্ধ হলে এতটা ভাল ফল করা বিজেপির পক্ষে সম্ভব হত না।

অধ্যাপক জিতরাই নিজে আদিবাসীদের অধিকার রক্ষা নিয়ে কাজ করেন। পাশাপাশি নাট্যব্যক্তিত্বও। ফেসবুকে তিনি লিখেছিলেন, ভারতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে গোমাংস খাওয়ার রেওয়াজ বহু দিনের। এটা তাদের গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার। ভারতে গোমাংস ভক্ষণ বিরোধী আইনের বিরোধী তারা। তিনি আরও জানান, দেশের জাতীয় পাখি ময়ূরের মাংসও খান এই সম্প্রদায়ের মানুষ। ফেসবুকে হিন্দু রীতি অনুসরণ করার অনিচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি।

জিতরাইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, ফেসবুক পোস্টটি করার কিছুদিনের মাথায় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয়। তত দিনে তলায় তলায় জিতরাইকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে এবিভিপি। সংবাদমাধ্যম সূত্রে তা জানার পরে কোলহান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে চিঠি লেখে একটি আদিবাসী অধিকার রক্ষা সংস্থা।

কোলহান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ একটি কলেজের অধ্যাপক জিতরাই। চিঠিতে সংস্থার এক মুখপাত্র লেখেন, ‘আদিবাসীরাও ভারতের নাগরিক। অন্যদের মতো আমাদেরও সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য অনুসরণ করার অধিকার রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার যদি গোহত্যায় নিষেধাজ্ঞা আনে, তবে তা আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করবে।’

যদিও এই চিঠিতে কাজ হয়নি। কিছুদিনের মাথায় বরখাস্ত করা হয় হাঁসদাকে। তবে পুলিশ বলছে, এটা পুরনো ঘটনা। ওই অধ্যাপক বেশ কয়েক মাস নিখোঁজ ছিলেন। খবর পেয়ে রোববার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত