ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

১০ রোহিঙ্গাকে হত্যা

বছরের না ঘুরতেই সাজাপ্রাপ্ত মিয়ানমার সেনাদের মুক্তি লাভ

বছরের না ঘুরতেই সাজাপ্রাপ্ত মিয়ানমার সেনাদের মুক্তি লাভ

রোহিঙ্গা হত্যাকারী সাত মিয়ানমার সেনাকে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমার। ২০১৭ সালে রাখাইনের পশ্চিমাঞ্চলে অভিযানের সময় কিশোরসহ ওই ১০ রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছিলো মিয়ানমার সেনারা। ওই হত্যার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত সাত মিয়ানমার সেনাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার বহু আগেই তারা ছাড়া পেয়ে গেছেন।

দুই কারা-কর্মকর্তা, সাবেক দুই বন্দী এবং এক সেনা ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন।

দুই বন্দী জানিয়েছেন, গত বছরের নভেম্বরেই ওই সেনাদের মুক্তি দেয়া হয়। কিন্তু এতদিন তা গোপন রাখা হয়েছিল। ইন দিন গ্রামে রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা করায় তাদেরকে দশ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তারা পুরো এক বছরও সাজা ভোগ করেননি। এর আগেই ছাড়া পেয়ে গেছেন।

অথচ রয়টার্সের যে দুই সাংবাদিক ওই দশ রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রকাশ করেছিল তারা ১৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে কারাবন্দী ছিলেন। আর যেসব সেনারা ওই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিন তারা সবমিলিয়ে এক বছরও সাজা ভোগ করেননি। গত মে মাসের ৬ তারিখে রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমতাবলে মুক্তি পান রয়টার্সের দুই সাংবাদিক-ওয়া লোন এবং কিয়াও সোয়ে ও।

রাখাইনের সিতওয়ে কারাগারের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক উইন নেইং এবং রাজধানী নেইপিদোর এক ঊর্ধ্বতন কারা-কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, গত কয়েক মাস ধরেই কারাগারে নেই ওই সেনারা।

সেনাবাহিনী তাদের শাস্তি কমিয়ে দেয়ায় তারা নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই মুক্তি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

তবে ঠিক কবে ওই সেনারা মুক্তি পেয়েছেন সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি তারা। এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি সেনা মুখপাত্র জাও মিন তুন এবং তুন তুন নি।

এদিকে, জিন পেইং সোয়ে নামে এক ব্যক্তি বৃহস্পতিবার ফোনে রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন যে, সাজা পাওয়া সাত সেনার মধ্যে তিনি একজন এবং তিনি এখন মুক্ত। তবে এ নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের বেশ কিছু পুলিশ ও সেনা চেক পোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। অভিযানের নামে সেখানে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতন করা হয়। রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়, তাদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং নারীদের ধর্ষণ করা হয়। সেনাবাহিনীর এই বর্বর নির্যাতন থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম।

এই ঘটনাকে জাতিগত নিধন বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরেও এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এর মধ্যেই রাখাইনের ইন দিন গ্রামে ১০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যার ঘটনা সামনে আসে। সে সময় মিয়ানমারের তরফ থেকে জানানো হয় যে, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এরই অংশ হিসেবে সাত সেনা সদস্যের বিচার হয় এবং তাদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে বরাবরই রোহিঙ্গাদের ওপর কোন ধরনের অত্যাচার-নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

ইন দিনের বিষয়ে আলাদা করে এক বিবৃতিতে সেনা প্রধান মিন অং হ্লেইং বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাত অপরাধীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। যারা এ ধরনের অপরাধ করেছেন তাদের কোনভাবেই ক্ষমা করা হবে না।

সূত্র: রয়টার্স

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত