মাকে রোগী সাজিয়ে স্বামীর কিডনি বিক্রি করলো স্ত্রী!
শাশুড়িকে রোগী সাজিয়ে এক যুবকের কিডনি বিক্রি করে দিল তার স্ত্রী। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরে এমন ঘটনা ঘটেছে।
আনন্দবাজার জানায়, কিডনি বিক্রি করতে সুস্থ শাশুড়িকে রোগী সাজিয়েছিলেন ওই যুবকের স্ত্রী।
আলিপুর আদালত সূত্রে জানা গেছে, উত্তম মাইতি একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা। ২০১১ সালে বাগুইআটির বাসিন্দা জুঁই সাহা নামে এক নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই সূত্রে প্রেম। তার পরে বিয়ে। ২০১৪ সালে যমজ মেয়ে হয় তাদের।
গত ২০১৬ সালে জুঁইয়ের মা গীতা অসুস্থ হয়ে ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। তার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বলে জানানো হয়।
উত্তম মাইতি বলেন, শাশুড়ির আর আমার ব্লাড গ্রুপ এক। তাই মাকে বাঁচাতে জুঁই আমার কিডনি চেয়ে চাপ দিতে থাকে।
শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর চাপে শাশুড়ির জীবন বাঁচাতে তাকে একটি কিডনি দানও করেন উত্তম।
বৃহস্পতিবার আদালত চত্বরে তিনি বলেন, ২০১৬ সালের নভেম্বরে আমার কিডনি নেওয়া হয়। ওই সময়ে শাশুড়িও হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। কিডনি দান করার কয়েক সপ্তাহ পর থেকেই সাংসারিক নানা বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে ঝগড়া করে মাঝেমধ্যে বাপের বাড়িতে চলে যেত জুঁই। ২০১৮ সালের আগস্টে দুই মেয়েকে রেখে পাকাপাকি সেখানে চলে যায় ও।’
উত্তমের দাবি, মাস দুয়েক আগে জুঁইয়ের আলমারি থেকে একটি ফাইল খুঁজে পান তিনি। তাতে তার ছবির নিচে লেখা রয়েছে সাবির আহমেদ। সেই সাবির এক মহিলাকে কিডনি দান করেছেন বলে নানা নথি রয়েছে।
বিচারকের কাছে তার অভিযোগ, তিনি সব নথি খতিয়ে দেখে জেনেছেন, তার শাশুড়ির কিডনি আদৌ নষ্ট হয়নি। মা ও মেয়ে মিলে ভুয়ো নামে তার কিডনি সাড়ে তিন লাখ রুপিতে বিক্রি করে দিয়েছেন। এমনকি ওই কিডনির গ্রহীতারও খোঁজ পেয়েছেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে জুঁই বলেন, জোর করে কিডনি বিক্রি করা হয়নি। উত্তম নিজের ইচ্ছায় ওই কিডনি বিক্রি করেছে। আমার মা এ বিষয়ে সবকিছু জানেন। আমি ওই কিডনি বিক্রি করিনি। সংসারে আর্থিক অনটনের জন্যই আমি বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছি।
উত্তমের আইনজীবী অভিষেক হাজরা বলেন, ওই ঘটনায় উত্তমের স্ত্রী, মা ও শ্যালিকার কী ভূমিকা ছিল, সেই সংক্রান্ত নথিও আমাদের হাতে এসেছে। সবকিছুই বিচারকের কাছে পেশ করা হয়েছে।
তার আইনজীবীদের অভিযোগ, উত্তমের শাশুড়িকে দেখিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় অন্য এক মহিলার দেহে। নথিপত্র যাচাই করা হলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
এক আইনজীবী বলেন, উত্তমের স্ত্রী ও শাশুড়ি কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত কি না তা তদন্তসাপেক্ষ। আমরা বিচারকের কাছে গোটা বিষয়টির তদন্তের আরজি জানিয়েছি।
বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই