ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২১ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত, মৃত সন্তানকে নিয়ে অপেক্ষায় কাশ্মীরি বাবা

মৃত সন্তানকে নিয়ে অপেক্ষায় কাশ্মীরি বাবা
প্রতীকী ছবি

হাসপাতালের মেঝেতে শুকনো মুখে বসেছিলেন বিলাল মাণ্ডু। ডান হাতে আঁকড়ে রেখেছেন ছোট্ট একটা কার্ডবোর্ডের বাক্স। ওই বাক্সের মধ্যেই রয়েছে তার সাত রাজার ধন, সন্তানের মৃতদেহ। দিন চারেক আগে শ্রীনগরের লাল দেদ হাসপাতালে মৃত সন্তান প্রসব করেছেন বিলালের স্ত্রী। কারফিউর কারণে অবরুদ্ধ কাশ্মীরে বিলালের বাড়িতে পৌঁছায়নি সেই দুঃসংবাদ। যেখানে প্রথম নাতি বা নাতনির মুখ দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বৃদ্ধ দাদা-দাদি। বাক্সের গায়ে সস্নেহে হাত বুলিয়ে বিড়বিড় করে উঠলেন কাশ্মীরি যুবক। ‘আমাদের সব স্বপ্ন খানখান হয়ে গেছে। সবই ওপরওয়ালার ইচ্ছা। তবে এমনটা হবে ভাবিনি।’

গত ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ ক্ষমতা লোপ এবং রাজ্যকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে থেকে উপত্যকা জুড়ে চলছে কারফিউ। মোবাইল ফোন, ল্যান্ড ফোন, ইন্টারনেট-সহ যোগাযোগের যাবতীয় মাধ্যম বিচ্ছিন্ন। এই অবস্থায় ৮ আগস্ট শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় বিলালের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রাজ়িয়ার। স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে কুপওয়ারার একটি হাসপাতালে যান বিলাল। অর্ধেকের বেশি রাস্তাই পায়ে হেঁটে। সেখানে থেকে রাজ়িয়াকে শ্রীনগরে পাঠানো হয়। ‘এখানে আসতেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। ততক্ষণে সব শেষ,’ হতাশ গলায় বলেন সন্তানহারা বাবা।

সন্তানের দেহ নিয়ে এবার বাড়ি ফিরতে চান বিলাল ও তার স্ত্রী। কিন্তু সেখানে নবজাতক নাতিকে স্বাগত জানাতে অপেক্ষায় রয়েছেন বিলালের বাবা-মা। তাদের হাতে এই মৃতদেহ তুলে দেব কীভাবে তুলে দেবে বিলাল! এই ভেবে হাউহাউ করে কেঁদে ওঠেন অল্পবয়েসী ছেলেটি। বিলাল জানান, হাসপাতাল থেকে একমাত্র অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়া বাড়ি ফেরার উপায় নেই। কেননা একটি নির্দিষ্ট জেলা থেকে রোগী নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স এলেই ঘোষণা করা হয়। তখন সেই জেলার ছুটি পাওয়া রোগীরা লাইন দেন ওই অ্যাম্বুল্যান্সে করে বাড়ি ফেরার জন্য। তাই অ্যাম্বুল্যান্সের সিরিয়াল পাওয়ার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে বিলালরা। কবে যে শেষ হবে বিলালের অপেক্ষার পালা তা কেউ জানে না!

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত