ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

কাশ্মীরে স্কুল খুলেছে, ভয়ে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা

কাশ্মীরে স্কুল খুলেছে, ভয়ে যাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা

অধিকৃত কাশ্মীরের কিছু কিছু এলাকা থেকে কারফিউ তুলে নেয়ার ঘোষনা দিয়েছে ভারত সরকার। কিন্তু এখনও গোটা উপত্যকায় ভয়ার্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল এবং কারফিউ বলবৎ করার পর সেখানে অস্বাভাবিত পরিস্থিতি তৈরি হয়। এখনও প্রচুর সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতে অনেকটাই যেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে সেখানকার জনজীবন।

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল নিয়ে প্রায় দু সপ্তাহ ধরে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার কিছু স্কুল খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ক্লাসে কোনো ছাত্র-ছাত্রীদের দেখা মেলেনি। তবে যেসব স্কুল খুলে দেয়া হয়েছে এগুলো মূলত সরকারি স্কুল। বেসরকারি স্কুলগুলো এখনো বন্ধই আছে।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীর এখনো অবরুদ্ধ। কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, সবচেয়ে বড় শহর শ্রীনগরে দুশোর মতো স্কুল খুলে দিয়েছে তারা। কিন্তু সাংবাদিকরা অনেক স্কুলে গিয়ে কোনো শিক্ষার্থীদের পাননি। জানা যায়, ছেলেমেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কাশ্মীরের অভিভাবকরা। তাই তারা বাচ্চাদের স্কুলে যেতে দিচ্ছেন না। কেননা এরই মধ্যে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সেনারা কাশ্মীরি যুবকদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে খবর প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।

কঠোর নিরাপত্তা অগ্রাহ্য করে মোদি সরকারের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিদিনই সেখানে বিক্ষোভ হচ্ছে এবং এসব বিক্ষোভে প্রচুর মানুষ হতাহত হচ্ছেন বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ভারত শাসিত অংশ জম্মু ও কাশ্মীর এতদিন বিশেষ মর্যাদা পেলেও সম্প্রতি তাকে দু ভাগ করে রাজ্যের মর্যাদায় নামিয়ে আনা হয়েছে। বিভক্ত অংশ দুটিই এখন সরাসরি দিল্লীর শাসনে রয়েছে।

এদিকে গত তিন দশক ধরে এই কাশ্মীরে চলছে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা, যাতে নিহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।

বিশেষ মর্যাদা বাতিলকে কেন্দ্র করে মূলত কাশ্মীরকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী ধরে এবং সব ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছিল। সম্প্রতি টেলিফোন লাইন কিছুটা চালু হলেও বিক্ষোভ বেড়ে যাওয়ার পটভূমিতে মোবাইল ফোন সেবা ও ইন্টারনেট এখনো বন্ধ আছে।

বিবিসি সংবাদদাতারা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে দেয়ার ভরসা পাচ্ছেন না। তাই তাদের বাসায় রাখতেই বেশি নিরাপদ মনে করছেন। বিশেষ করে মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু না হওয়া পর্যন্ত।

কাশ্মীরের একজন স্কুল শিক্ষক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, এ ধরণের অনিশ্চিত অবস্থায় তারা শিক্ষার্থীদের স্কুলে আশা করেন না।

তিনি আরও জানান, অনেক স্কুল এখনো বন্ধ। তাছাড়া কেবল শিক্ষার্থী নয়, স্কুলে শিক্ষক বা কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপস্থিতিও অনেক কম।

কাশ্মীরে বিরাজমান এ অবস্থায় মধ্যেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রায় প্রতিদিনই কাশ্মীর নিয়ে তাসরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেই চলেছেন। তিনি কাশ্মীরের জনগণকে নানা প্রলোভনও দেখাচ্ছেন। এই বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার সিদ্ধান্তটা যে ওই উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য কতটা কল্যাণকর, বিভিন্ন মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তারাও তা তোতা পাখির মত বলেই চলেছেন। কিন্তু এসব প্রলোভনে তেমন কাজ হচ্ছে বলে মনে হয় না।

কাশ্মীরের জনগণ ও স্থানীয় নেতাদের ভাষায়, এটা বিশ্বাসঘাতকতা এবং এ নিয়ে তারা মোদি সরকারের সঙ্গে কোনোরকম সমঝোতা করতেও প্রস্তুত নয়। এসব কথার জবাবে কেউ কেউ তো আবার মোদিকে মাত্র আট মিনিটের জন্য কাশ্মীরকে মুক্ত করে দেয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। যদিও এইসব চ্যালেঞ্জকে থোড়াই কেয়ার করছেন মোদি।

এদিকে বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগেরে রাত থেকেই বন্দি আছেন সেখানকার অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতারা। তারা ছাড়া পাওয়ার পর পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেটাই দেখার বিষয়।

কেবল কিছু সরকারি স্কুল খুলেছে

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত