ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

কুকুরদের খাওয়াতে ৩ লাখ টাকা ঋণ!

কুকুরদের খাওয়াতে ৩ লাখ টাকা ঋণ!

কুকুরদের মাংস-ভাত খাওয়াতে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিলেন ভারতের এক নারী। পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণীর ওই নারী নিজের গয়নাও বিক্রি করে দিয়েছেন।

রাস্তার প্রায় ৪০০টি কুকুরকে প্রতিদিন দুপুরে মাংস-ভাত খাওয়ান তিনি। এজন্য প্রতি মাসে তার ব্যয় হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। তিনি প্রায় কয়েক বছর ধরেই প্রতিদিন কুকুরদের খাইয়ে চলেছেন। এমন কাজে তার পরিবার ও প্রতিবেশীরা বিরোধিতা করেছেন। তবুও তিনি পিছপা হননি।

অন্যদিকে, রয়েছে প্রচুর অর্থব্যয়। তাই তিনি ব্যাংক থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন।

এছাড়াও নিজের প্রায় ২ লাখ টাকার সোনার গয়না বেচে কুকুরদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। রাস্তার কুকুরগুলির চিকিৎসায়ও তিনি প্রচুর অর্থব্যয় করেন। তবে তিনি পথকুকুরদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।

কল্যাণী বি ব্লকের এমএ পাস গৃহবধূ নীলাঞ্জনা বিশ্বাস বড় হয়েছেন খড়গপুরে। তার বাবা খড়গপুর আইআইটির প্রাক্তন অধ্যাপক। পশু-পাখির প্রতি তাঁর ভালবাসা ছোট থেকেই। নিজের ব্যক্তিগত সঞ্চয় তিনি ব্যয় করে চলেছেন পথকুকুরদের জন্য।

নীলাঞ্জনা বিশ্বাস বলেন, পথ কুকুরদের প্রতিদিন দুপুরে মুরগির মাংস ও ভাত খাওয়ানো হয়। এজন্য তিনজন কর্মী রয়েছেন। তাদের সাম্মানিক বাবদ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কর্মী সঞ্জীব দাস টোটো চালিয়ে কল্যাণী শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে কুকুরের খাবার নিয়ে যান।

পাশাপাশি, নীলাঞ্জনাদেবী নিজের স্কুটারে করেও একইভাবে কিছু স্থানে গিয়ে খাবার দেন। কখনও কখনও মায়ের সঙ্গে যায় ছেলে আশুতোষ‌ও।

সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে কুকুরের রান্নার জন্য আলাদা ঘর রয়েছে। রয়েছে মাংস রাখার জন্য ফ্রিজও। অন্যদিকে, কুকুরদের চিকিৎসার দিকটি নিজেই দেখেন নীলাঞ্জনাদেবী। শুধু পশু নয়, দুঃস্থ মানুষকেও সাহায্য করেন নীলাঞ্জনাদেবী। কিছুদিন আগেই তিনি এক বৃদ্ধা ভিখারিকে পোশাক দিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে ভর্তি করে দেন।

অন্য ঘটনায় মাথায় ঘা হওয়া এক পাগলকে দু’দিন চিকিৎসাও করান তিনি। যদিও পরে ওই পাগল ব্যক্তি বেপাত্তা হয়ে যায়। দীপাবলিতে দুঃস্থ পরিবারদের আতসবাজি, মোমবাতি, খাবার এবং পোশাক বিতরণও করেন তিনি।

তিনি বলেন, ঋণ করেও রাস্তার কুকুরদের খাইয়ে চলেছি। কিন্তু আমি হার্টের রোগী। ভবিষ্যতে এদের কী হবে তাই নিয়ে আমি চিন্তিত। কল্যাণী পুরসভার কাছে কুকুরগুলির পুনর্বাসনের আবেদন করে সাড়া পাইনি। যদি পুরসভা এদের জন্য কিছু করে তবে শান্তি পাব।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত