এবার বিএসএফ জওয়ানকে ‘বিদেশি’ বানালো আসাম
তিনি দিনরাত দেশের সীমান্ত পাহারা দিয়ে চলেছেন, যাতে শত্রু বা কোনো অনুপ্রবেশকারী দেশে ঢুকতে না পারে। অথচ সেই বিএসএফ’র ওই সাব ইনস্পেক্টর এবং তার স্ত্রীকেই ‘বিদেশি’ বানিয়ে দিল আসামের ফরেনার ট্রাইব্যুনাল।
ভারতের এক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, বিএসএফের সাব ইনস্পেক্টর মুজিবর রহমানকে ‘বিদেশি অভিবাসী’ হিসেবে ঘোষণা করেছে আসামের জোরহাটের ফরেনার ট্রাইব্যুনাল। শুধু তিনি নন, তার স্ত্রীকেও বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, তাদের আবেদন ঠিকমত না শুনেই এমন অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফরেনারস ট্রাইব্যুনাল।
জোরহাটের মেরাপানি জেলার বাসিন্দা মুজিবর রহমানের পোস্টিং পাঞ্জাবে রাজ্যে। তিনি ও তার স্ত্রীকে বিদেশি আখ্যা দেওয়া হলেও তাদের বাবা-মা এবং ভাই–বোনের নাগরিকত্ব নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা হয়নি।
জানা যায়, তার মদ্যপান সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছিল সীমান্ত পুলিশ। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই মামলার রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
এ ঘটনার পর রহমান বলেন, ‘আমি একজন প্রকৃত ভারতীয় নাগরিক। আমি বাংলাদেশি বা পাকিস্তানি নই। আসামেই আমার জন্ম। ১৯২৩ সাল থেকে এখানে আমাদের পরিবারের এখানে বসবাসের রেকর্ড রয়েছে। অথচ কেবলমাত্র একটি রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে আমাকে কোনো নোটিসও পাঠানো হয়নি।’
ইতিমধ্যেই এই রায়ের বিরুদ্ধে গৌহাটি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন মুজিবর রহমান। ওই আবেদনে তিনি বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হোক। কিন্তু যারা ভারতের প্রকৃত নাগরিক তাদের এইভাবে অপদস্থ করাটা অযৌক্তিক।
প্রসঙ্গত, ১৯৫১ সালের পরে এবারই প্রথম ভারতের আসাম রাজ্যের নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) হালনাগাদ করা হচ্ছে। ওই তালিকা থেকে কারো নাম বাদ যাওয়ার অর্থ তাকে ভবিষ্যতে বিদেশি বলে চিহ্নিত করা। ভারতীয় নাগরিকত্ব খুইয়ে তারা অচিরেই পরিণত হবেন ওই রাষ্ট্রবিহীন মানুষে। ইতিমধ্যেই বিদেশি বলে বহু মানুষকে চিহ্নিত করেছে আসামের ফরেনার্স ট্রাইবুনালগুলি। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে যে খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল তাতে লক্ষাধিক মানুষের নাম বাদ পড়েছে। প্রায় নয়শো মানুষ আটক রয়েছেন বন্দি শিবিরে।
ট্রাইব্যুনালের কাছে এই মুহূর্তে প্রায় ১৯ হাজার মামলা জমা রয়েছে। এবছরের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ১৭ হাজার মানুষকে অবৈধ নাগরিক ঘোষণা করেছে ফরেনার ট্রাইব্যুনাল ।
সূত্র: আজকাল
এমএ/