ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পসহ বিশ্ব নেতাদের প্রশ্নের মুখে মোদি

কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পসহ বিশ্ব নেতাদের প্রশ্নের মুখে মোদি

অধিকৃত কাশ্মীরের ওপর থেকে মোদি সরকার বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার পর সেখানকার উদ্ভুত পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখছে গোটা দুনিয়া। আর পাকিস্তান তো এ নিয়ে বিশ্বের দরবারে মোদি ও ভারতের বিরুদ্ধাচরণ করেই চলেছে। এ অবস্থায় ফ্রান্সের সমুদ্রপারের বিয়ারিৎজ় শহরে জি-৭ সম্মেলনে একাধিক রাষ্ট্রনেতার প্রশ্নের মুখোমুখি হতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

ওই সম্মেলনে যোগ দিতে রোববার ফ্রান্সে পৌঁছেছেন মোদি। তিনি সেখানে বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বেশ কিছু দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে তার। আর সেই সব বৈঠকে যে ঘুরেফিরে কাশ্মীরের সাম্প্রতিক সঙ্কট উঠে আসবে তা বলাই বাহুল্য। স্বভাবতই এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি।

ইতিমধ্যে রবিবার রাতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মোদি। জনসনের সঙ্গে মোদির বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা এবং শিক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে কাশ্মীর নিয়ে দু’জনের মধ্যে কি কথা হয়েছে সে বিষয়ে কিছুই জানায়নি ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো।

কিছু দিন আগেই পাকিস্তান ও চীনের জোরাজুরিতে কাশ্মীর ইস্যুতে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকের আয়োজন করেছিল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এ নিয়েও তখন উদ্বিগ্ন ছিলো ভারত। তবে রুদ্ধদ্বার হওয়ায় ওই বৈঠকে কি কি আলোচনা হয়েছে তা জানা যায়নি। যদিও এই বৈঠককে নিজেদের কূটনৈতিক জয় হিসাবেই দেখছে পাকিস্তান।

এ অবস্থায় রেবিবার জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসের সঙ্গে মোদির বৈঠককে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে ভারত। দু’জনের মধ্যে ‘সফল আলোচনা’ হয়েছে বলেও দাবি করেছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো।

এদিকে জি-৭ শীর্ষ বৈঠকের ফাঁকে মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলেও জানা গেছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর সঙ্গেও নৈশভোজে কথা হবে তার।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ পাঁচ বার জি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিলেও এই গোষ্ঠীর বৈঠকে এই প্রথমবার আমন্ত্রিত হিসেবে উপস্থিত থাকছেন মোদি।

এই সম্মেলনে বৃহৎ রাষ্ট্রগুলির কাছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোর আবেদন করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তবে বৈঠকের আগেই ট্রাম্প স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, কাশ্মীর সঙ্কট নিয়ে মোদির সঙ্গে আলোচনা করতেই তিনি মুখিয়ে আছেন। এর আগে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে গত দু’সপ্তাহে তিন তিনবার মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

সোমবার ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকের আগে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন,‘কাশ্মীরের দিকে তীক্ষ্ন নজর রাখছেন ট্রাম্প। এর আগে এ নিয়ে শান্তি বজায় রাখতে এবং কোনও প্ররোচনামূলক কথা না বলার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়েছে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে। প্রেসিডেন্ট এই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি গোটা অঞ্চলের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি কমাতে মধ্যস্থতা করতে রাজি।’

মার্কিন কর্মাকর্তা আরো বলেছেন, আঞ্চলিক সংঘাত কমানোর জন্য মোদির পরিকল্পনা সম্পর্কেও জানতে চাইবেন ট্রাম্প। কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো নিয়েও ভারত সরকারের বক্তব্য জানতে চাইবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

প্রসঙ্গত. গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের ওপর থেকে বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন ৩৭০ ধারাটি তুলে নেয় মোদি সরকার। এরপর থেকে কার্যত বন্দি রয়েছে উপত্যকার মানুষ। তাদের ঘর থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে হাজার হাজার কাশ্মীরিকে। সেখানের রাস্তা-ঘাটগুলো দখল করে নিয়েছে লাখ লাখ ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মী। এ অবস্থায় সেখানকার মানবাধিকার লঙ্ঘণ নিয়ে বেশ কয়েকবার বিবৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। কিন্তু কাশ্মীরের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী বা সাংবাদিক তো দূরের কথা, ভারতের বিরোধী দলীয় নেতাদের পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে গোটা কাশ্মীর উপত্যকাকে আজ একটা উন্মুক্ত কারাগারে রূপান্তরিত করেছেন মোদি।

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত