মোরগের কণ্ঠরোধ করতে মামলা!
মোরগের কণ্ঠরোধ করতে মামলা দায়ের করে এক দম্পতি। আদালত পর্যন্ত গড়ায় এঘটনা। তবে অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে আদালত বলেছে, মরিস নামে ওই মোরগ যখন খুশি গলা ছেড়ে ডাকতে পারবে। এমন ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সে।
ফ্রান্সে আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলবর্তী ওলেরন দ্বীপে নিয়মিত ছুটি কাটাতে যাওয়া অবসরপ্রাপ্ত এক দম্পতি আদালতে ঐ মোরগের ডাক থামাতে মামলা করেছিলেন।
অভিযোগ নাকচ করে ওই দম্পতিকে ক্ষতিপূরণ ও মামলা বাবদ এক হাজার ডলারের বেশি খরচ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এই মামলা ফ্রান্সে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। যারা নিরিবিলি গ্রামীণ পরিবেশ পছন্দ করেন এবং শহুরে ব্যস্ততা থেকে কিছুটা শান্তির খোঁজে গ্রামে গিয়ে সময় কাটাতে চান, তাদের সঙ্গে গ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশ ধরে রাখার পক্ষে যারা তাদের মধ্যে কয়েক দশকের একটা বিরোধকে সামনে এনেছে মরিস মোরগের এই মামলা।
মোরগের মালিক করিন ফেস্যোঁ বলেন, মরিসের ডাক নিয়ে কেউই কখনো অভিযোগ করেননি।
তিনি রয়টার্সকে বলেন, পশ্চিম ফ্রান্সে রশফোর্টের আদালতের আজকের রায়ে মরিসের বিজয় গোটা ফ্রান্সের গ্রামীণ সংস্কৃতির বিজয়।
ফ্রান্সে গ্রামবাসীদের অনেকের অভিযোগ গ্রামে নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য শহরের মানুষ গ্রামে একটা বাড়ি কিনছেন, কিন্তু গ্রামে থাকার বাস্তবতা অর্থাৎ সেখানে পশুপাখি ডাকবে, পোকামাকড় ঘুরে বেড়াবে- এগুলো তারা মানতে রাজি নন।
অবসরপ্রাপ্ত ঐ দম্পতির দ্বিতীয় বাড়ি করিনদের গ্রামে। তারা থাকেন করিনদের পাশের বাড়িতে।
করিন বলেন, শহরের মানুষকে বুঝতে হবে শহরের যেমন নিজস্ব কিছু শব্দ আছে, তেমনি গ্রামেরও নিজস্ব কিছু শব্দ আছে।
তিনি বলেন, আমাদের এভাবে কোণঠাসা করা যাবে না। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মকে মেনে নিতে হবে। গ্রামের প্রকৃতিতে এগুলো স্বাভাবিক শব্দ। এধরনের শব্দ আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। আমাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও আমার পেছনে রয়েছেন।
মরিসের ভোরবেলা ডাকার অধিকারকে সমর্থন করে ১ লাখ চল্লিশ হাজার মানুষ এক পিটিশানে সই করেছেন।
এর আগেও গরুর ডাক বা গরুর গলার ঘন্টার আওয়াজ বন্ধ করতে ফ্রান্সের আদালতে একইধরনের মামলা হয়েছে। কিন্তু মরিস নামে এই মোরগের ডাক বন্ধ করার মামলা নিয়ে যে পরিমাণ আবেগ দেখা গেছে তা আগে দেখা যায়নি।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী মরিসের সমর্থনে টি-শার্ট বিক্রি করেছে।
এছাড়াও সুদূর আমেরিকা থেকে মরিসের সমর্থনে মানুষ চিঠি লিখেছে, পিটিশানে সই করেছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই
