ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

মার্কিন সরকার নিজেই ধ্বংস করেছে টুইন টাওয়ার!

মার্কিন সরকার নিজেই ধ্বংস করেছে টুইন টাওয়ার!

আজ টুইন টাওয়ার হামলার টুইন টাওয়ারে হামলার ১৮ বছর বা দেড় যুগ। এই দিন উপলক্ষে বুধবার মার্কিনিরা তাদের নিহত স্বজনদের স্মরণ করবে। সরকারিভাবেও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

১৮ বছর আগে এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারসহ এক যোগে চালানো চারটি আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয় অন্তত ৩ হাজার মানুষ। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় এ ঘটনা ঘটে। চারটি মার্কিন যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে এই হামলা চালানো হয়। দুটি বিমান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর ও দক্ষিণ টাওয়ারে আঘাত হানে। ধসে পড়ে ভবন দুটি।

আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ছিনতাই করা আরেকটি বিমান নিয়ে হামলা চালানো হয় মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনে। তবে যাত্রীদের চেষ্টায় নির্ধারিত স্থানে হামলা চালাতে ব্যর্থ হয় বিমানটি।

তবে মজার বিষয় কি জানেন, এখনও বিশ্বের অনেক মানুষ মনে করেন, সন্ত্রাসীদের বিমান হামলায় ধ্বংস হয়নি টুইন টাওয়ার। মার্কিন সরকার বা ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা এ হামলার পেছনে ছিল। ওই আক্রমণে কোন ইহুদি মারা যান নি, আসলে কোন বিমান টুইন টাওয়ারে বা পেন্টাগনে আঘাতই করে নি। আরেকটি বড় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হচ্ছে - ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দুটি টাওয়ার ধ্বসে পড়েছিল বিমানের আঘাতে নয়, বরং ভবনটির ভেতরে বিস্ফোরক বসিয়ে তা উড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।

তবে সবচেয়ে ভয়াবহ ষড়যন্ত্র তত্ত্বটি হচ্ছে, মার্কিন সরকর নিজেই বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছে টুইন টাওয়ার।

ওই ঘটনার ১৮ বছর পরও এসব তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা-বিতর্ক শেষ হয় নি। টুইন টাওয়ারে হামলার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ছড়ায় প্রথম ষড়যন্ত্র তত্ত্ব।

ডেভিড রস্টচেক নামের এক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী লিখলেন, ‘কেউ কি খেয়াল করেছেন যে ওয়ার্ল্ড টেড সেন্টার ভবনটি বিমানের আঘাতে ধ্বংস হয় নি? না কি শুধু আমিই এটা বুঝেছি?’

তার কথা ছিল, ভবনদুটিতে বিমান আঘাত করেছে এবং প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এটা ঠিক কথা। কিন্তু যে ভাবে টাওয়ার দুটি ভেঙে পড়েছে তার জন্য এর ভেতরে সঠিক জায়গায় বিস্ফোরক বসাতে হতো। এ কাজটা করতে হলে কাউকে অনেক সময় নিয়ে করতে হবে। প্রশ্ন হলো: প্লেনগুলোর তাহলে কি কাজ ছিল?

পরে অবশ্য তদন্ত করে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে বিমানের আঘাতের পর আগুনে টাওয়ার দুটির কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ওপরের তলাগুলো ভেঙে পড়তে থাকলে তার চাপে পুরো ভবনটিই ভেঙে পড়ে যায়। কিন্তু এখনো কিছু লোক আছেন যারা এ কথা বিশ্বাস করেন না।

নিউইয়র্কে কিছু একটা ঘটেছে

সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ লানজারোটেতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন ম্যাট ক্যাম্পবেল। তার ত্রী দোকান থেকে কিছুএকটা কিনে ফিরে এসে বললেন ‘নিউ ইয়র্কে কিছু একটা ঘটেছে।’এরপর তারা টিভিতে হামলার খবর দেখেন। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই খবর এলো যে ম্যাটের ভাই জেফ নাকি ওই সময় উত্তর দিকের টাওয়ারে ছিলেন। এর পর থেকে জেফের আর কোন খবর পাওয়া যায়নি।

জেফ তার কয়েক বছর আগে থেকেই নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে বাস করছিলেন, কাজ করতেন রয়টার বার্তা সংস্থায়। নর্থ টাওয়ারে ১০৬ তলায় একটি সম্মেলন চলছিল, সেখানেই ছিলেন তিনি।

নিউইয়র্কে গিয়ে নানা হাসপাতালে ভাইয়ের খোঁজ নিলেন ম্যাট। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। তারা বুঝলেন, জেফ মারা গেছে। শেষে তার কাঁধের হাড়ের একটি অংশ পাওয়া যায় ওয়ার্ল্ড টেড সেন্টারের ধ্বংসস্তুপে, ২০০২ সালে। তবে ওই ঘটনার তদন্ত শেষ হয় ২০১৩ সাল নাগাদ।

এর মধ্যেই ম্যাটের মনে ১/১১ হামলার সরকারি ভাষ্য নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। তবে তিনি কোন একটি নির্দিষ্ট ষড়যন্ত্র তত্বে বিশ্বাসী ছিলেন না, যদিও অনলাইনে এরকম তত্ত্বের কোন অভাব নেই।

ম্যাট নিশ্চিত হলেন, তার ভাইয়ের মৃত্যু ঠিক কিভাবে হয়েছিল তা নিয়ে বহু কিছু আসলে ধামাচাপা দেয়া হয়েছে, অনেক প্রশ্নের তিনি উত্তর পাচ্ছেন না। ‘২০০১ সালের অক্টোবর থেকেই এটা শুরু হয়েছিল। যতই দিন যাচ্ছে, আমি দেখলাম নানা রকম অসঙ্গতির সংখ্যা বাড়ছে।’

ম্যাট বলছেন, তিনি তথ্য জানার অধিকারসংক্রান্ত আইনের আশ্রয় নিয়ে এফবিআই এবং অন্য তদন্তকারী সংস্থার কাছে ওই ঘটনার বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা নানা কারণ দেখিয়ে তথ্য জানায় নি। ফলে তার মনের সংশয় আরো বেড়েছে।

জেফ একা নন। ক্যালিফোর্নিয়ার চ্যাপম্যান বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৬ সালে এক জরিপ চালিয়ে বলেছে, অর্ধেকেরও বেশি আমেরিকান বিশ্বাস করে যে সরকার ৯/১১-র ঘটনা সম্পর্কে তথ্য গোপন করছে। যেসব ষড়যন্ত্র তত্ব অনলাইনে ঘুরছে তার কিছু কিছু চরম নাটকীয়।

কোনো কোনটিতে বলা হয়েছে, মার্কিন সরকার নিজেই ওই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। কেউ বলেন, মার্কিন কর্মকর্তারা ইচ্ছে করেই আক্রমণটি ঘটতে দিয়েছেন। অন্য অনেকে বলেন, ঘটনার পরিকল্পনাতেই মার্কিন সরকার জড়িত ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলো ছড়িয়েছে এই জন্য যে মাত্র কয়েকজন লোক মিলে অতি সাধারণ অস্ত্র দিয়ে এরকম ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাতে পারে, তা লোকজন বিশ্বাসই করতে পারে না।

ডিভিড রে গ্রিফিন নামে দর্শন ও ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক ২০০৪ সালে একটি বই লেখেন - 'দ্য নিউ পার্ল হারবার' নামে। এতে তিনি ৯/১১-র ঘটনায় মার্কিন সরকারের জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন।

২০০৬ সালে রিচার্ড গেগ নামে একজন ক্যালিফোর্নিয়ান স্থপতি ৯/১১র সত্য প্রকাশের জন্য স্থপতি ও প্রকৌশলীদের একটি গ্রুপ গঠন করেন যার নাম এ ই নাইন ইলেভেন ট্রুথ। তারা ওই দিনের ঘটনার সরকারি বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত