ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

সিসির পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল মিশর

সিসির পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল মিশর

মিসরের স্বৈরশাসক জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি-র পদত্যাগের দাবিতে শুক্রবার উত্তাল হয়ে উঠেছিলো মিশরের বিভিন্ন শহর। ২০১৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর জেনারেল সিসি সরকারের বিরুদ্ধে দেশটিতে এ ধরনের বিক্ষোভ দেখা গেলো।

শুক্রবার রাজধানী কায়রো, আলেকজান্দ্রিয়া, সুয়েজের মতো বড় বড় শহরগুলোর রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারী। এ সময় মিছিলকারীদের ‘ভয় নয়, জেগে উঠো, সিসি হটাও’স্লোগানে কেঁপে উঠে মিশরের রাজপথগুলো। রাজধানী কায়রোর ঐতিহ্যবাহী তাহরির স্কয়ারেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

তাহরির স্কয়ার বিক্ষোভকারীদের ঠেকানোর চেষ্টা চালায় সাদা পোশাকের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় দু পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা সদস্যরা। অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়। বিক্ষোভের জের ধরে বন্ধ হয়ে যায় শহরের দোকানপাটগুলো।

মিশরের স্বেচ্ছা নির্বাসিত ব্যবসায়ী ও অভিনেতা মোহাম্মদ আলীর ডাকে শুক্রবারের ওই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয় বলে জানা গেছে। ওই নেতা জেনারেল সিসি-র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের ডাক দিয়েছিলেন। তবে নিজের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করেছেন জেনারেল সিসি।

মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে এই বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী। বৃহস্পতিবারের মধ্যে জেনারেল সিসি পদত্যাগ না করলে মিশরের জনগণকে শুক্রবার রাস্তায় নেমে আসার ডাক দিয়েছিলেন ওই নেতা। তার ডাকে সাড়া দিয়ে শুক্রবার মিশরের বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় নেমে আসে। দেশটির ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত ও আটক করার পর বহু বছর মিশরে এ ধরনের বিক্ষোভ দেখা যায়নি।

২০১৩ সালের ৩ জুলাই সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত ও বন্দি করে ক্ষমতা দখল করেন সেনাপ্রধান জেনারেল সিসি। এর প্রতিবাদে মুরসি সমর্থকরা রাস্তায় নামলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন ব্রাদারহুডের প্রায় হাজারখানেক নেতাকর্মী। সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করা হয়। মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় দলটির প্রায় হাজারখানেক নেতাকর্মীকে। গ্রেপ্তার করা হয় কয়েক হাজার মুরসি সমর্থককে। কারাগারে পাঠানো হয় মিসরের ইতিহাসের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে। বন্দি অবস্থায় কারাগারেই মারা যান মুরসি।

এই ঘটনা পরিক্রমায় গত ৫ বছর ধরে মিশরে কোনো রকম বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ দেখা যায়নি। এবার দীর্ঘদিনের অবরুদ্ধ অবস্থা ভেঙ্গে রাস্তায় নেমে আসলো মিশরের সাধারণ মানুষ। আর তাদের এত বড় বিক্ষোভে উজ্জীবিত করেছেন নির্বাসিত নেতা মোহাম্মদ আলী। শুক্রবারও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে তার কঠোর বক্তব্য সম্বলিত ভিডিও প্রচার করা হয়।

সেখানে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ মহান, আমি মিশরে ফিরতে চাই। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য আমার প্রাণ কাঁদে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে প্রতিবাদ করার শক্তি দিন।’

মিশরের সাধারণ মানুষের কাছে নির্বাসিত এই নেতাই এখন স্বৈরশাসনের যাঁতাকল থেকে মুক্তির দূত। তাইতো প্রবাসে থাকে এই নেতার এক ডাকে রাস্তায় নেমে এসেছিলো লাখ লাখ মানুষ।

সূত্র: আলজাজিরা

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত