ঘুমন্ত শিশুকে জানালা থেকে ছুড়ে ফেলে হত্যা, আটক দাদি
দু বছর বয়সী এক অবোধ শিশুকে রান্নাঘরের জানালা দিয়ে নিচে ছুড়ে ফেলে হত্যা করেছেন তারই দাদি। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মুম্বাই নগরীর মালাদ এলাকায়। শনিবার সকাল সাড়ে ৫টা থেকে ৫টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে শিশুটিকে ছুড়ে ফেলা হয় বলে পুলিশের অনুমান।
স্থানীয় এক সংবাদ মাধ্যম জানায়, মালাদ এলাকার একটি ৬ তলা অ্যাপার্টমেন্টে বাবা-মা আর দাদির সঙ্গে থাকতো ছোট্ট শিশু জিয়া আনসারি। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাতেও বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়েছিলে শিশু জিয়া। শনিবার সকালে প্রতিবেশীদের ডাকে ঘুম ভেঙে যায় জিয়ার বাবা-মায়ের। তারা বাইরে বেরিয়ে দেখেন রাস্তায় নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে দুই বছরের শিশু জিয়া। তারা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে নিকটস্থ এক হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু কর্তৃব্যরত চিকিৎসক জানান, মেয়েটি আর বেঁচে নেই।
এ ঘটনার তদন্তে শনিবারই ওই বাড়িতে অনুসন্ধানে যায় পুলিশের একটি দল। তারা গোটা বাড়ি সার্চ করে নিশ্চিত হয় যে, শিশুটিকে কেউ একজন রান্নাঘরের জানালা দিয়েই ছুড়ে ফেলেছিলো। কেননা যেখানে শিশুটির মরদেহ পড়েছিলো তার ঠিক উপরেই ছিলো ওই অ্যাপার্টমেন্টের জানালাটা। আর ওইটুকুন শিশুর পক্ষে তো একা একা জানালা বেয়ে নিচে পড়ে যাওয়া অসম্ভব। তবে জানালাটা তখন ছিলো বন্ধ।
এরপর তারা পরিবারটিকে জেরা করে এই ব্যাপারে নিশ্চিত হয় যে, শিশুটির দাদিই তাকে জানালা দিয়ে নিচে ছুড়ে ফেলেছিলো।
জিয়ার বাবা-মা পুলিশকে জানায়, জিয়াকে সহ্য করতে পারতেন না তার দাদি। প্রায়ই তিনি শিশুটিকে বকাবকি করতেন। এ নিয়ে দিন কয়েক আগে ছেলে ও ছেলেবউয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে অন্য ছেলের বাড়িতে চলে যান জিয়ার দাদি। সেখানে ২২ দিন কাটানোর পর গত শুক্রবারই বাড়ি ফেরেন তিনি। কিন্তু এতদিনেও তার রাগ পড়েনি। বাড়ি ফিরেও তিনি মেয়েটিকে বকাবকি করেন।
শুক্রবার রাতে ঘুমুতে চাচ্ছিলো না অসুস্থ জিয়া। অসুস্থতা হওয়ায় সে খুব কান্নাকাটি করছিলো। পরে রাত ৩টার দিকে ওষুধ খাইয়ে তাকে ঘুম পাড়ানো হয়। মেয়েকে পাশে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন জিয়ার বাবা-মাও।
এরপর শনিবার ভোরে ঘুমন্ত জিয়াকে তার বাবা-মায়ের পাশ থেকে তুলে আনেন তার দাদি। এরপর শিশুটিকে রান্নাঘরের জানালা দিয়ে নিচে ছুড়ে ফেলেন। এরপর তিনি নিজের বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
এ ঘটনায় সোমবার জিয়ার দাদিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এখনও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
এমএ/
