ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

কাশ্মীর ‘স্বাভাবিকের’ দাবি নসাৎ করছে যে বিজ্ঞাপন

কাশ্মীর ‘স্বাভাবিকের’ দাবি নসাৎ করছে যে বিজ্ঞাপন
শুক্রবার মাথায় কাঁটাতার জড়িয়ে বিক্ষোভ করেছে কাশ্মীরবাসী

ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে নতুন করে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করে আসছে মোদি প্রশাসন। কিন্তু বাস্তব বলছে ভিন্ন কথা। সেখানকার পরিস্থিতি যে স্বাভাবিক না তার জলন্ত প্রমাণ হচ্ছে সম্প্রতি প্রকাশিত এক সরকারি বিজ্ঞাপন।

বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের কোনো খবরের কাগজের প্রথম পাতায় খবর ছিল না। ছিল জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের পাতাজোড়া একটি বিজ্ঞাপন। ওই বিজ্ঞাপনে স্থানীয়দের প্রতি এই বলে আবেদন করা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের খপ্পরে পড়বেন না, স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করুন।’

এই বিজ্ঞাপন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সেখানকার মিডিয়া। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার মন্ত্রীরা তো অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন কাশ্মীরের উন্নয়নের জন্য ৩৭০ ধারা তুলে নেয়া হয়েছে, সেখানকার লোকজন মোদির উন্নয়নকে সমর্থন দিয়েছে এবং কাশ্মীরের অবস্থা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হচ্ছে, জম্মু ও কাশ্মীরের সবই যদি স্বাভাবিক থাকে তাহলে ৩৭০ ধারা বাতিলের ৬৭ দিন পরে প্রশাসনকে এমন বিজ্ঞাপন দিতে হলো কেন?

জানা যায়, এখনও বাস চলাচল বন্ধ কাশ্মীরে। বিচ্ছিন্ন রয়েছে মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ। বন্ধ ওই রাজ্যের বেশিরভাগ দোকান-বাজারও। এটিএম বুথগুলোতে টাকা নেই। অস্ত্র হাতে টহল দিচ্ছে লাখ লাখ অতিরিক্ত সেনা। কাশ্মীরে স্কুল খোলার ঘোষণা দিলেও ছাত্র-ছাত্রী না থাকায় এখনও ক্লাস শুরু হয়নি। কার্যত ঘরবন্দি উপত্যকার নারী-পুরুষ বৃহস্পতিবার মন দিয়ে সরকারি বিজ্ঞাপন পড়েছেন।

ওই বিজ্ঞাপনে লেখা,‘৭০ বছরের বেশি সময় ধরে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনামাফিক অপপ্রচারের সাহায্যে তাদের জীবনকে সন্ত্রাস, ধ্বংস ও দারিদ্রের নিরবচ্ছিন্ন চক্রাবর্তে আবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। আপনারা কি তা থেকে মুক্তি চান না?’

এতে আরে বল হয়েছে,‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নিজেদের সন্ততিদের বিদেশে পাঠিয়ে লেখাপড়া করান, আর সাধারণ ছেলে-মেয়েদের হিংসা, পাথর ছোড়া আর হরতালের পথে যেতে উত্তেজিত করেন। আবারও সেই পথই নিয়েছেন বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। আপনারা কি এখনও তা সহ্য করবেন? তাঁদের খপ্পরে পড়ে ধ্বংসকে বেছে নেবেন, না কি সাধারণ জনজীবনে ফিরবেন?’’ এর পরেই কাশ্মীরবাসীর প্রতি আবেদন, ‘স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য, জীবনযাত্রা শুরু করুন।’

এর আগে কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখাতে উপত্যকায় ব্লক স্তরে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু বিজেপি ছাড়া কাশ্মীরের সব ক’টি দল সেই নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা করার পরে তা কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দ্বাদশ শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। পরীক্ষা হবে এ মাসের শেষ সপ্তাহে-ই। কিন্তু স্কুলগুলো এখনও বন্ধ, গত আড়াই মাস ধরে স্কুল-কলেজে পড়াশোনা নেই, সিলিবাস শেষ হয়নি। এ অবস্থায় তারা কীভাবে পরীক্ষা দেবে। তাই কাশ্মীরের বাসিন্দারা মনে করছেন, নির্বাচনের মতো এই পরীক্ষার ঘোষণাও একটা প্রহসন।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা দেয়া ৩৭০ ধারা বাতিল বলে ঘোষণা করে মোদি সরকার। এরপর থেকে কার্যত অবরুদ্ধ রয়েছে ওই রাজ্যের বাসিন্দারা।

সূত্র: আনন্দবাজার

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত