ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাঁচার জন্য লড়ছে কবর থেকে উদ্ধার হওয়া সেই মেয়েশিশুটি

বাঁচার জন্য লড়ছে সেই মেয়েশিশুটি

ভারতে একটি মাটির পাত্রে জীবিত অবস্থায় কবর দেয়া যে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে, সে এখন বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সেপটিসেমিয়া এবং মারাত্মকভাবে কম প্লেটলেট গণনার কারণে শিশুটি সার্বিক পরিস্থিতি ‘গুরুতর’ বলে জানিয়েছেন শিশু বিশেষজ্ঞ রবি খান্না।

বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে আমরা পাঁচ থেকে সাত দিন পরেই নিশ্চিতভাবে সেটা জানাতে পারব।’

পুলিশ ‘অজ্ঞাত ব্যক্তিদের’ আসামি করে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে এবং বলেছে যে তারা এই কন্যা নবজাতকের বাবা-মাকে খুঁজছে।

শিশুটিকে এভাবে কবর দেয়ার পেছনের সম্ভাব্য উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনও কিছু জানতে পারেনি পুলিশ। তবে ধারণা, মেয়ে হওয়ার কারণেই শিশুটিকে এভাবে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলো তার নিকটাত্মীয়রা। লিঙ্গ বৈষম্যের দিক থেকে বিশ্বের মধ্যে ভারতের অবস্থান খুবই খারাপ। সেখানে প্রায়ই কন্যাশিশুর ভ্রুণ হত্যা করা হয়। তাছাড়া মেয়েশিশুদের হত্যার ঘটনাও কম ঘটে না সেখানে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বারেলি এলাকার রীতেশ কুমার সিরোহি সিং নামের এক ব্যক্তি নিজের মৃত সন্তানকে কবর দিতে গিয়েই শিশুটিকে উদ্ধার করেন।

তিনি জানান, মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে আসে মাটির পাত্রে শোয়ানো সদ্যজাত এক কন্যাশিশু। মেয়েটি তখনও বেঁচে আছে, ধুকপুক করছে তার হৃদপিণ্ড। শিশুটিকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে তিনি রাজ্যের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা করান।

রীতেশ কুমার বলেন, ‘তারা যখন মাটির নীচে প্রায় ৩ ফুট [৯০ সেন্টিমিটার] পর্যন্ত খনন করছিলেন, তখন তাদের কোদালটি একটি মাটির পাত্রে আঘাত করে এবং সেই আঘাতে পাত্রটি ভেঙে যায়। তারা একটি শিশুর কান্নার শব্দ শুনতে পান। যখন তারা পাত্রটি টেনে ওপরে তুলে আনেন এবং হাড়ির মধ্যে তারা ওই শিশুটিকে দেখেন।’

প্রধান শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ সৌরভ অঞ্জন বারেইলি থেকে বিবিসিকে জানান, আমার মনে হয় যখন শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হয় তখন তার বয়স প্রায় এক সপ্তাহ ছিল। শিশুটি সময়ের আগেই জন্ম নিয়েছিল, সম্ভবত ৩০ সপ্তাহে জন্মগ্রহণ করেছিল শিশুটি এবং তার ওজন মাত্র ১.১ কেজি।’

ডাঃ অঞ্জন বলেছেন যে শিশুটি হাইপোথেরমিকও ছিল অর্থাৎ তার দেহের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের চেয়ে কম ছিল। এবং হাইপোগ্লাইকেমিয়া ছিল। শিশুটির রক্তে শর্করার পরিমাণ ছিল ৩৫ যেটা কিনা কমপক্ষে ৪৫ হওয়া জরুরি। উন্নততর সুবিধা থাকায় রোববার শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাঃ রবি খান্নার পেডিয়াট্রিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

ডাঃ সৌরভ অঞ্জন মঙ্গলবার বিবিসিকে বলেন, ‘তাকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে রাখা হচ্ছে এবং একটি টিউবের মাধ্যমে তরল খাওয়ানো হচ্ছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার প্লেটলেট সংখ্যা ১০ হাজারে এ নেমে গেছে যেখানে স্বাভাবিক পরিসীমা দেড় লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ হয়ে থাকে, তাই আমরা তার রক্তে সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন।’

এদিকে স্থানীয় রাজ্য বিজেপি নেতা রাজেশ কুমার মিশ্র বাচ্চাটিকে দত্তক নিয়েছেন। শিশুটি ভালো হলে তিনি এবং তার স্ত্রী তাকে নিজ বাড়িতে বড় করবেন বলেও জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে হিন্দু দেবীর নামে কন্যা শিশুটির নাম রেখেছেন সীতা।

আরও জানতে ক্লিক করতে পারেন নিচের লিঙ্কে

যেভাবে বেঁচে গেলো জীবন্ত কবর দেয়া মেয়েশিশুটি

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত