ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

মেক্সিকোতে আশ্রয় নিয়েছেন মোরালেস

মেক্সিকোতে আশ্রয় নিয়েছেন মোরালেস

বলিভিয়ার নেতা ইভো মোরালেস তীব্র বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করার মাত্র একদিন পর প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকোতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে। তবে তিনি আরো ‘শক্তি ও সামর্থ্য’ সঞ্চয় করার পর আবারও দেশে ফেরার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

এদিকে বলিভিয়ার লা পাস শহরে মোরাভিয়ার সমর্থকদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। দাঙ্গা হাঙ্গামা ঠেকাতে শহরে ব্যাপক সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পদত্যাগ করার একদিন পর সোমবার রাতে মেক্সিকোর পাঠানো বিমানে করে বলিভিয়া ত্যাগ করেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

দেশ ছাড়ার আগে টুইট করে মোরালেস জানান, তিনি মেক্সিকোতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়ার প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন। তবে ‘আরো শক্তি ও সামর্থ্য’ সঞ্চয় করার পর তিনি দ্রুত বলিভিয়া ফিরবেন বলেও জানিয়েছেন।

তিনি দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘প্রিয় বোন ও ভাইয়েরা, আমি মেক্সিকোয় রওয়ানা হয়েছি। আমাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য আমি মেক্সিকো সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। রাজনৈতিক কারণে এভাবে দেশ ছাড়তে আমার বুক ভেঙে যাচ্ছে। তবে আমি সবসময় দেশের জনগণের জন্য উদ্বিগ্ন থাকবো। শীঘ্রই আমি আরও শক্তি ও সামর্থ্য নিয়ে দেশে ফিরে আসব।’

এসময় দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য বলিভিয়ার দুই বিরোধী দলীয় নেতা কার্লোস মেসা ও লুইস ফার্নান্দো কামাচোকে দায়ী করেন মোরালেস। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের মাধ্যমে যে অভ্যুত্থান তৈরি করা হয়েছে তাতে প্রত্যক্ষ ইন্দন যুগিয়েছেন ওই দুই নেতা।

মোরালেসের বলিভিয়া ত্যাগ নিয়ে সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে টুইট করেছেন মেক্সিকোর পরররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এবরার্ড। সেখানে তিনি বলেন, ‘ইভো মোরালে মেক্সিকো সরকারের পাঠানো বিমানে উঠেছেন। আমরা তাকে নিরাপদে মেক্সিকোতে নিয়ে আসার নিশ্চিয়তা দিচ্ছি।’

এদিকে মোরালেস পদত্যাগ করার পরও বলিভিয়ার পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। সেখানকার প্রধান শহর লা পাজে পদত্যাগকারী প্রেসিডেন্টের সমর্থকদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। দাঙ্গা ঠেকাতে শহরে ব্যাপক সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করেছে প্রশাসন। শহরের বাসিন্দাদের ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। মোরালেসের পদত্যাগের ফলে দেশটিতে ক্ষমতার শূন্যতা তেরিরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত তিন সপ্তাহ ধরে একটানা বিক্ষোভের মুখে রোববার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ইভো মোরালেস। টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।’

এর আগেই পদত্যাগ করেন বলিভিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট আলভারো গার্সিয়া লিনেরা এবং সিনেট প্রেসিডেন্ট আদ্রিয়ানা সালভাতিয়েরা। পদত্যাগ করার পরপরই ইভো মোরালসকে আশ্রয় দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল মেক্সিকো সরকার।

রোববার মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এবরার্ড এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘রাজনৈতিক আশ্রয়ের ঐতিহ্য ধরে রেখে বলিভিয়ার ২০ সরকারি কর্মকর্তা ও আইনপ্রণেতার আশ্রয়ের অনুরোধ গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আমরা প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালসকেও রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রস্তাব দিচ্ছি।’

এরপর সোমবার তারা মোরালেসকে আনার জন্য বলিভিয়ায় বিমান পাঠায়। ওই বিমানে করেই দেশ ছাড়েন বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বামপন্থী নেতা মোরালেস। তবে তিনি মেক্সিকোতে পৌঁছেছেন কিনা সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।

শুধু ব্রাজিল নয়, মোরালেসকে আশ্রয় দিতে চেয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন দক্ষিণ আমেরিকায় মোরালেসের বামপন্থি বন্ধু ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ-ও।

রয়টার্স/ গার্ডিয়ান

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত