তুমুল হট্টগোলের মধ্যে লোকসভায় নাগরিকত্ব বিল পাস
ভারতে বিরোধী দলীয় সাংসদদের তুমুল হট্টগোলের মধ্যেই লোকসভায় মধ্যেই লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। এর আগে সোমবার সকালে সংসদের বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সকালে বিল উত্থাপনের সময় লোকসভায় দাঁড়িয়ে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘ধর্মের ভিত্তিতে কংগ্রেস দেশভাগ না করলে আজ এই বিলের প্রয়োজনীয়তা হতো না।’
এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী বেঞ্চ থেকে সোচ্চার হয়ে ওঠেন সবাই। বিলের বিরোধিতা করে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো। তখন অমিত শাহ বলেন, ‘এই বিল সংবিধান বিরোধী নয়। এমনকী সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করছে না। এই বিল সংখ্যালঘু বিরোধীও নয়।’
পরে বিলের ওপর ভোটাভুটি হয়। সেখানে বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ২৯৩টি। আর বিপক্ষে পড়ে ৮২টি ভোট। ফলে সহজেই পাশ হয়ে যায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল।
এর আগে গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতের মন্ত্রিসভায় এই বিতর্কিত বিলটি পাশ হয়। ওই বিলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সে দেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু মুসলিম শরণার্থীদের বিষয়ে বিলে কিছু বলা হয়নি। এর অর্থ হচ্ছে, পার্শ্ববর্তী ওই তিন দেশ থেকে আসা মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনকে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হবে না।
নতুন বিলে ওই তিন দেশ থেকে আসা অমুসলিম শরণার্থীরা ভারতে পাঁচ বছর থাকলেই নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। আগের আইনে ভারতের নাগরিকত্ব পেতে হলে শরণার্থীদের সেখানে ১১ বছর বসবাস করতে হতো।
তবে লোকসভায় পাস হলেও রাজ্যসভাতে এটি পাস করাতে বেশ বেগ পেতে হবে মোদির দলকে। কারণ, সেখানে এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)’র। এ বিলের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আন্দোলন শুরু করেছে আসামের ছাত্রসমাজ। বিতর্কিত বিলের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার ১১ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছে আসামের নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। আসামে বন্ধের ডাক দিয়েছে অল কোচ রাজবংশী স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, অল অসম চুটিয়া স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এবং অল মোরান স্টুডেন্টস ইউনিয়ন।
এমএ/