ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

রোহিঙ্গা গণহত্যা: অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ চায় গাম্বিয়া

রোহিঙ্গা গণহত্যা: অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ চায় গাম্বিয়া

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সামরিক বাহিনীর গণহত্যার ঘটনায় হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয়েছে এই শুনানি। চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে গাম্বিয়া আইসিজেতে ওই মামলাটি করেছে। রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেওয়া এবং রাখাইনে গণহত্যার আলামত নষ্টের বিভিন্ন উপাদান উল্লেখ করে গাম্বিয়ার করা অন্তর্বর্তী পদক্ষেপের নির্দেশনার বিষয়ে তিন দিনের এই শুনানি হচ্ছে।

গাম্বিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সে দেশের আইন ও বিচার মন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু। মিয়ানমারের নেতৃত্বে থাকছেন দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি। শুনানির শুরুতে আইসিজের প্রেসিডেন্ট আবদুলকোয়াই আহমেদ ইউসুফ শুনানির প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিচার কক্ষে উপস্থিত সুধীজনদের অবহিত করেন।

শুনানির প্রথম দিনে সাক্ষ্য-প্রমাণ দাখিল করছে গাম্বিয়া প্রজাতন্ত্র। আগামীকাল বুধবার একই সময়ে শুরু হওয়া শুনানিতে অংশ নিবে মিয়ানমার। এতে দেশের পক্ষে বক্তব্য রাখবেন নোবেলজয়ী অং সান সু চি।

গাম্বিয়ার প্রস্তাবিত পক্ষে নাভি পিল্লাই এবং মিয়ানমারের ক্লাউস ক্রেসকে এডহক বিচারপতি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এডহক বিচারপতিদের শপথের মধ্য দিয়ে শুনানির প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর আইসিজের রেজিষ্ট্রার ফিলিপ গোতিয়ে অন্তর্বর্তী পদক্ষেপের নির্দেশনা চেয়ে গাম্বিয়া আবেদনে যা বলেছে তা পড়ে শোনান।

এ মামলার রায় পেতে আট সপ্তাহ থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত লাগতে পারে। তবে শুনানির দোষী সাব্যস্ত হলে মিয়ানমার এবং তাদের সেনা কর্মকর্তাদের কি ধরনের শাস্তি দেয়া হতে পারে এখনও তা স্পষ্ট নয়।

গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু কেন মিয়ানমার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে সেই প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। এরপর তিনি জানান আবেদনের পক্ষে কারা কি বিষয়ে কথা বলবেন।

এরপর রাখাইনে গণহত্যা নিয়ে কথা বলেন অধ্যাপক পায়াম আখাভান। তিনি বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) গণহত্যা সনদের ৭০তম বার্ষিকী ছিল। কিন্তু এই সনদের আলোকে গণহত্যা বন্ধ হয়নি। গণহত্যার সনদ কীভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে সেটা তুলে ধরেন তিনি। জাতিসংঘ তদন্তকারীরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানোয় রাষ্ট্রীয় ভূমিকার কথা বলেন। তদন্তে গণহারে হত্যাযজ্ঞ পরিচালনার প্রমাণ মিলেছে যা সনদের লঙ্ঘন। গণহত্যা সনদ ও আইসিসির রায়ে যে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতাকে গণহত্যার মতো অপরাধ গণ্য করা হয়েছে, জাতিসংঘ তদন্তে সে ধরনের অপরাধের বর্ণনা রয়েছে।

গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের পাশাপাশি বাংলাদেশ এবং কানাডার প্রতিনিধিরা শুনানির সময় পিস প্যালেসে উপস্থিত রয়েছেন। বাংলাদেশ-কানাডার পাশাপাশি নেদারল্যান্ডস নেপথ্যে থেকে গাম্বিয়াকে সহযোগিতা করবে।

এদিকে আইসিজের শুনানিতে সরাসরি কোনো পক্ষ না হলেও গাম্বিয়াকে লজিস্টিক সহায়তা দেবে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয়) মাসুদ বিন মোমেন এক প্রতিনিধি দল নিয়ে দ্য হেগে পৌঁছেছেন। ২০ সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া তিন রোহিঙ্গাও রয়েছেন। দলে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিকেও রাখা হয়েছে। তারা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানিতে উপস্থিত থাকবেন।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত