ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

চেরি ফুলের দেশে

  -শাহজাহান সরদার

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:৫৭

চেরি ফুলের দেশে

১৮. জাপানে শেষ দিন

৯ অক্টোবর শুক্রবার। আমার জাপান সফরের আজ শেষ দিন। শেষ দিনেও আমার দুটো কর্মসূচি। আগের দিন জাপানের শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার সাথে বৈঠক হয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশ থেকে যারা এখানে কাজ করতে আসেন তারা খুব ভাল কাজ করেন। তবে অনেকে অবৈধভাবে আছেন। তাদের খোঁজা হচ্ছে। কর্মকর্তা জানান, জাপানের বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু বাঙালি তরুণ রেস্তোরাঁ খুলে ভালো ব্যবসা করছে। পরদিন জাপান বৈদেশিক সাহায্য সংস্থার কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করতে যাই। বাংলাদেশে প্রদত্ত সাহায্য নিয়ে কথা হয় তার সাথে। সেখান থেকে যাই জাপান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মি. ইতো-এর কাছে। ইতো বাংলাদেশ ডেস্ক দেখে থাকেন। ভদ্রলোক সুন্দর বাংলা বলতে পারেন। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সব খবরই রাখেন তিনি। তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে হোটেলে আসি দুপুরে। সন্ধ্যায় জাপান প্রেসক্লাবে আমাদের বিদায় সম্বর্ধনা। ফরেন প্রেস সেন্টার বিদায় জানাবে। এ সময়টুকুতে কোন কাজ নেই। কাল সকালেই রওনা হব। তাই গোছগাছের পালা।

সন্ধ্যায় আমরা ১০ জন একত্রে জাপান জাতীয় প্রেসক্লাবে যেয়ে পৌঁছি। সেখানে আমাদের সংবর্ধনা জানান এফপিসি’র প্রেসিডেন্ট এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর। সম্বর্ধনায় সবাই আমরা জাপান এবং ফেলোশিপ কোর্স সম্পর্কে যার যার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করি। সবশেষে প্রেসিডেন্ট টি, আকিহিরো বক্তব্য রাখেন এবং আমাদেরকে সার্টিফিকেট দেন। রাত ৮টায় বিদায়ের পালা। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসি হোটেলে। বিদায়ের ক্ষণটি ছিল খুবই করুণ। চার সপ্তাহ এফপিসি’র কর্মকর্তাদের সাথে একত্রে থেকেছি, ঘুরেছি। পরিবারের সদস্যের মতো তাঁরা। তাই স্বাভাবিক ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বিদায় নেই। কিন্তু দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে আসব স্ত্রী, পুত্র, পরিজনের সাথে মিলিত হব-এ আনন্দ সবকিছুকে বিলীন করে পরক্ষণেই খুশির ছটায় উদ্ভাসিত হয় মন। হোটেলে ফিরে এসে গোছগাছের পালা। সব কিছু ঠিকঠাক করি। আর হোটেলের বিল মিটিয়ে দিয়ে প্রস্তুত থাকি। সকাল সাড়ে ৭টায় নারিতা বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হতে হবে।

রাতে তেমন ঘুম হয়নি। ৫টার সময় উঠে গোসল করে সাড়ে ৬টার মধ্যে তৈরি হয়ে যাই। ঠিক ৭টায় গাইড আসে, গাড়ি আসে। আমি, ভারতের সুনীল এবং আফ্রিকান ৫ জন এক মাইক্রোবাসে রওনা দিই। দুপুরে আসবে শ্রীলঙ্কার শান, পাকিস্তানের হাশমী ও নেপালের রাই। তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সাড়ে ৭টায় গাড়িতে উঠে আধা ঘণ্টার মধ্যে টোকিও সিটি টারমিনালে পৌঁছি। নারিতা বিমানবন্দর দূরে বলে সিটি টার্মিনালেই লাগেজ বুকিংসহ চেকইন সেরে নিই। তাই ঝামেলামুক্ত। লিমোজিন বাস সার্ভিসে চেপে নারিতা এসে সেখানে প্রায় ৩ ঘণ্টা ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আফ্রিকানদের লাগেজ বেশি বলে বিমানবন্দরে বিপদে পড়ে। পরে বেশ ক’জন নগদ অর্থ দিয়ে ক্রয় করা জিনিস ফেলে রেখে দেশে যেতে হয়। কেননা যে দাম দিয়ে জিনিস ক্রয় করা এর চাইতে বেশি অর্থ অতিরিক্ত মালের চার্জ ধরা হয়। অগত্যা ফেলেই বিমানে চাপে। যাতে তাদের প্রিয়জন বা সন্তানদের জন্য কেনা জিনিসও পড়ে থাকে নারিতা বিমানবন্দরে। আমার এবং সুনীলের কোন সমস্যা হয়নি। কেননা আমাদের লাগেজ বড় ছিল না। চলবে...

আগের পর্ব (১৭) পড়ুন

বাংলাদেশ জার্নাল/আর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত