প্রভাস দত্তের কবিতা ‘মূক ভালোলাগা’
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:৪৫
কী ভালো লাগে গো তোমার?
দ্রোহের অনলে বিরলে পোড়াতে?
নাকি পাঁজরের পিঞ্জরে
অনুভবে বোঝা অধরা সত্ত্বায়
অলিন্দ হতে নিত্যবহ কষ্টের আগুনে
মরমী পরশে বারিধারা ঢেলে
ভালো লাগে সে আগুন নেভাতে।
কি ভালো লাগে গো তোমার?
প্রেমীর নয়নে অশ্রু ঝরাতে?
নাকি অবিরাম কর্মক্লান্ত
তোমার শরীর হতে ঝরে পড়া ঘাম
যে আঁচলে মোছ,
নিঝর মমতায় সে আঁচল দিয়ে
ভালো লাগে অশ্রু মোছাতে।
কি ভালো লাগে গো তোমার?
বিদ্রূপের বানে আহত করিতে?
নাকি নিন্দুকের বিষাক্ত নিন্দা
যবে কটাক্ষে বিক্ষত করে,
তবে নীলকন্ঠী হয়ে
নিন্দার ঝড়ে অঙ্গ ভিজিয়ে
ভালো লাগে নীলাম্বরী হতে।
কি ভালো লাগে গো তোমার?
সংস্কারের হোমাগ্নিতে
তিলে তিলে নিঃশেষ হতে?
নাকি কুটিল সমাজ মাড়িয়ে
দূরে বহু দূরে শাল্মলী দ্বীপে
তরু আর লতায় বাঁধা কুটিরে
চন্দ্র-সূর্যের আলোয় নিত্য স্নানে
ছোট্ট তক্তপোষে একই উপাধানে
প্রিয়জনে ললাটে ললাট মাখি
নয়নে নয়ন রাখি
শয়নের ছলে নিবাক মগ্নতায়
ভালো লাগে নয়নের পাতায়
জীবনের রং দিয়ে কাজল পরিতে।
নিরুত্তর তুমি! তুমি অপলক!
হারাতে হারাতে বঞ্চনার ক্ষতে
পাওয়ার ইচ্ছাগুলো মরেছে নিভৃতে।
সবুজের আঙ্গিনায় সরল জীবনে
অনিন্দ্য নয়নে ছিল
খুচরো মূল্যে কেনা
টুকরো টুকরো আশা।
টুকরোগুলো মিলে নিরাশার খন্ডবিশালে
নয়নের কাজল হল কৃষ্ণ অমানিশা।
ছোট ছোট ভালোলাগাগুলো
হীরকের কণা হয়ে অঙ্গার রূপে
হারিয়েছে গহীন খনিতে কয়লার স্তূপে।
তাই তুমি ভাষাহীন মূক
ভালোলাগাগুলো আজ স্তব্ধ বিমুখ।বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ