ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

এনটিআরসিএ-মাউশির সমন্বয়হীনতা ও সুপারিশপ্রাপ্তদের ভোগান্তি

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:০৮  
আপডেট :
 ২৪ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:১১

এনটিআরসিএ-মাউশির সমন্বয়হীনতা ও সুপারিশপ্রাপ্তদের ভোগান্তি

২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর শিক্ষক নিয়োগের উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় চক্রের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ(এনটিআরসিএ)। জাতীয় মেরিট লিস্ট থেকে নিয়োগের ব্যবস্থা না করে, প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক আবেদনের নিয়ম থাকায় একজন বেকার নিবন্ধিত প্রার্থীরকে ৩০ –১০০টি আবেদন করতে হয়, প্রতিটি আবেদন ফি ছিল ১৮০ টাকা এবং একজন প্রার্থীর প্রায় ৬-২০হাজার টাকা ব্যয় হয়। এতে মোট ২৫ লক্ষের অধিক আবেদন জমা পড়ে এবং এনটিআরসিএ প্রায় ৪৫ কোটি টাকা আয় করে। কোন প্রকার প্রকার পরীক্ষা ছাড়াই কেন এত টাকা নেওয়া হলো বিষয়টি বোধগম্য নয়।

আরো পড়ুন: প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন বহুকাঙ্ক্ষিত টাইমস্কেল

গত ২৪ জানুয়ারি প্রকাশিত ফলাফলে ৩৯ হাজার ৩৩৭ জন প্রার্থী সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। কিন্তু সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও বিপাকে পড়েছে অনেক প্রার্থী। কেননা এনটিআরসিএ সঠিকভাবে যাচাই বাচাই না করেই, চাহিদাকৃত প্রতিষ্টানে প্রার্থী সুপারিশ করেছে। এতে সুপারিশপ্রাপ্ত নানাবিধ সমস্যার কারনে যোগদান করতে পারেনি। এনটিআরসিএ ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের ভুলের কারণে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়ছে। যেসব ভুলের কারণে সুপারিশকৃত প্রার্থী ভোগান্তির শিকার হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

আরো পড়ুন: উত্তীর্ণ নিয়োগপ্রাপ্তদের পাশে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি

১) শারীরিক শিক্ষার পরিবর্তে ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ে চাহিদা প্রদান। অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধান ইংরেজি মিনিং না বুঝেই ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ(শরীরচর্চা)পরিবর্তে ফিজিক্যাল সাইন্স(ভৌতবিজ্ঞান) এর চাহিদা দিয়েছে। ভৌত বিজ্ঞান,ব্যবসায় শিক্ষা,বাংলা/ইংরেজী ইত্যাদি নবসৃষ্ট পদ যার নিয়োগ কার্যক্রম তখন শুরু হয়নি ।

আরো পড়ুন: উত্তীর্ণ ১৮ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের জন্য আশার বাণী

(২) কম্পিউটার সাইন্সের পরিবর্তে কম্পিউটার অপারেশন বিষয়ে চাহিদা প্রদান। কম্পিটার সাইন্স বা আইসিটি হলো সাধারণ কলেজে আবশ্যিক বিষয় আর কম্পিউটার অপারেশন বিএম কলেজে পড়ানো হয়।

(৩) মহিলা কোটায় পুরুষ প্রার্থীকে সুপারিশ করা।

আরো পড়ুন: ১৭তম শিক্ষক বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সুখবর দিলেন এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান

(৪) প্যাটার্ন পুর্ণ থাকা শর্তেও শিক্ষকের চাহিদা প্রদান এবং প্রার্থী সুপারিশ করা।

(৫) এমপিও পোস্ট,নন এমপিও পোস্ট হয়ে যাওয়া। নন-এমপিও পোস্টে বেতন হবে না।

(৬) এমপিও প্রতিষ্ঠান নন এমপিও প্রতিষ্ঠানের সঠিক তথ্য না থাকা।

(৭) ছয়মাস মেয়াদী কম্পিউটার ডিপ্লোমাধারী আইসিটি বিষয়ে নিবন্ধনধারীদের জাতীয় মেরিট লিস্ট অনুযায়ী সুপারিশ করা হলেও, জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ কারণে যোগদানে বাধা প্রদান করা।

আরো পড়ুন: অবশেষে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

(৮) সুপারিশপ্রাপ্ত বিষয় উক্ত প্রতিষ্ঠানে (অনুমতি) বিদ্যমান না থাকা।

(৯) সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষককে প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ পত্র না দিয়ে অর্থ দাবী করা এবং যোগদানে বাধা প্রদাণ করা। সুপারিশকৃত প্রার্থী যোগদান করতে না পারা।

এসব নানা কারণে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ভোগান্তির শিকার হয়েছে এবং এনটিআরসিএ শিক্ষক নিয়োগ করতে গিয়ে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি করে ফেলেছে। আর সুপারিশপ্রাপ্তরা সুপারিশপত্র পেয়েও যোগদান করতে না পারায় চরম হতাশার মধ্যে দিন যাপন করছে।

আরো পড়ুন: অবশেষে সুখবর পেলেন প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা

অবাক করার বিষয় সর্বশেষ ১৪ তম নিবন্ধন সার্কুলারের শর্ত অনুযায়ী প্রভাষক কম্পিউটার অপারেশনে পদে পাস করেও নীতিমালা-২০১৮ কারণে সুপারিশপত্র পেয়েও যোগদান করতে পারেনি অনেক প্রার্থী।

আর যেসব প্রার্থী এসব ভুল পদে যোগদান করেছেন তারা এমপিও ভুক্ত হতে না পেয়ে,বিনা বেতনে চাকুরি করে আসছে। এনটিআরসিএ সমস্যা গুলো সমাধানে আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোন প্রকার সমাধান করেনি। প্রায় এক বছর ধরে এসব জটিলতা চলছে এবং আরও কত দিন অপেক্ষা করতে হবে বা আদোও কোন সমস্যা সমাধান হবে কিনা? বিষয়টি সুস্পষ্ট নয়। এখন এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ বলছে, অভিযোগ গুলো মাউশিতে পাঠানো হয়েছে। মাউশি এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

আরো পড়ুন: প্রাথমিকের সময়সূচি ৯টার পরিবর্তে ১০টা!

এনটিআরসিএ ও মাউশির মধ্যকার সমন্বয়হীনতার কারণে এসব জটিলতা নিরসন হচ্ছে না। কিন্তু এসব সমস্যা সমাধান না করেই, এনটিআরসিএ তৃতীয় চক্রে শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে ই-রিকুইজেশনে শুন্যপদের চাহিদা চেয়েছে। এতে করে বিদ্যমান সমস্যা গুলো আরও বৃদ্ধি পাবে কারণ যেসব সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থী নানা সমস্যার কারণে যোগদান করতে পারেনি,সেসব প্রতিষ্ঠান প্রধান নতুন করে শুন্য পদের চাহিদা দেখাবে। এতে করে সুপারিশকৃত প্রার্থীরা আরও নিয়োগ বঞ্চিত হবে। সুপারিশকৃত প্রার্থীদেরকে অন্য কোন প্রতিষ্টানে শুন্য পদে নিয়োগ দিয়ে,জটিলতা দূর করা একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। সমস্যা সমাধান হওয়ার পর নতুন গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া প্রয়োজন। তাই এসব সুপারিশকৃত প্রার্থীকে সঠিক পদে এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানকে নিয়োগ দিতে বাধ্য করতে, মাউশির মহাপরিচালক ও এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

আরো পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর জরুরি নির্দেশনা

মো: সাইফুর রহমান

সহকারী শিক্ষক(গণিত)

রাসুলপুর দাখিল মাদ্রাসা।

বাহুবল,হবিগঞ্জ

বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত