চোরের ঘরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:৫০
চোরের ঘরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ উদ্ধার করলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবহার করা পিস্তল। এই অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোহাম্মদ সোহান নামে এক যুবককে। সে ভারতীয় টেলিভিশনের অপরাধ তদন্ত বিষয়ক সিরিজ ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে চুরিতে হাত পাকানোর কথা জানিয়েছে।
সোহানের চুরি করা মালামল নিয়ে রোববার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারের এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ক্যান্টনমেন্ট থানার মানিকদি এলাকার আমিনুল ইসলামের বাসায় চুরির ঘটনার তদন্তে সোহানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সেদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে দরজার তালা ভেঙে আমিনুলের বাসায় চুরি হয়। ওই বাসা থেকে ৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, এক জোড়া স্বর্ণের বালা, দুটি স্বর্ণের ব্রেসলেট, তিনটি স্বর্ণের গলার চেইন, দুটি গলার হার, তিন জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ৮টি স্বর্ণের আঙটি চুরি হয়েছিল।
এ ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা হলে তার তদন্ত করতে গিয়ে সোহানের যোগসাজশ খুঁজে পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ কর্মকর্তা সুদীপ জানান।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সোহান বলেছে, সে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে নিয়মিত ক্রাইম পেট্রোল দেখে চুরিতে লিপ্ত হয়। সেখান থেকেই মূলত চুরির আধুনিক কলাকৌশল রপ্ত করে। সে দিনের বেলায় চুরি করাকে বেছে নিত। প্রথমে দারোয়ানের গতিবিধি লক্ষ্য করতো। এরপর বাসায় প্রবেশ করত। বাসায় দরজায় তালা মারা থাকলে বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে তালা খুলত। সিসি ক্যামেরা নেই, এমন বাসা চুরির জন্য টার্গেট করত সে।
সোহানের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া মালামালের মধ্যে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, এক রাউন্ড গুলি রয়েছে।
এছাড়া ৩০০ গ্রাম গাঁজা, নগদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, তিনটি চাকু, একটি ক্ষুর, ২টি স্ক্রু ড্রাইভার, লোহার তৈরি ৬টি র্যাথ, ২টি রেঞ্চ, ২২টি চাবি ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয় সোহানের বাসা থেকে।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা সুদীপ বলেন, যে বিদেশি পিস্তলটি পাওয়া গেছে, তা সেটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে।
সোহান জানিয়েছে, এক লোকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিদেশি পিস্তলটি কিনেছে। অন্য কারও এই অস্ত্র ব্যবহার করার সুযোগ নেই। সোহান এই অস্ত্র কোথায় পেয়েছে, তা বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে।
অস্ত্রটি কোন বাহিনীর- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সংস্থার সদস্য ব্যবহার করতেন, সে বিষয়ে তালাশ চলছে। অস্ত্রটি কারও খোয়া গিয়ে থাকলে কেউ যোগাযোগ করে কি না, তা জানা যাবে। আবার পিস্তলটি কেউ ভাড়া দিয়েছে কি না অথবা অন্য কেউ সরবরাহ করেছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত বছর শাহবাগ থানা থেকে একজন এএসআইর বিদেশি পিস্তল খোয়া গিয়েছিল।
উদ্ধার করা অস্ত্রটি সেটিই কি না- প্রশ্নে পুলিশ কর্মকর্তা সুদীপ বলেন, অস্ত্রাগারে সিরিয়াল মেলানো হয়েছে। এটি ডিএমপির অস্ত্র নয়।
বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে