ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

যাদের ভালোবাসার কাছে হার মেনেছে করোনা

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২০, ১২:৫২

যাদের ভালোবাসার কাছে হার মেনেছে করোনা
সীমান্তে মুখোমুখি বসে আছেন প্রেমিক যুগল

করোনাভাইরাসে নাকি বয়স্করাই বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। তুলনামূলকভাবে মৃতের সংখ্যাও কিন্তু তাদের মধ্যেই বেশি। কিন্তু করোনাকে বৃদ্ধেোঙ্গুলি দেখিয়ে দিব্যি চুটিয়ে প্রেম করে চলেছেন বয়স ৯০ ছুঁই ছুঁই এক যুগল। এমনকি সীমান্তের বাধা পেরিয়ে তারা রোজ দেখাও করছেন। কীভাবে সম্ভব? ঘটনাটা তাহলে খুলেই বলি।

পঁচাশী বছর বয়সী ইনগা রাসমুসেন থাকেন ডেনমার্কে। আর ৮৯ বছর বয়সী কার্স্টেন টুচসেন হ্যানসেন থাকেন জার্মানিতে। এই লকডাউনের মধ্যেও তারা প্রতিদিন সীমান্ত শহর আভেনটফটে এসে দেখা করেন। গল্প করেন, পানাহার করেন। তবে অবশ্যই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে।

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর জার্মানি এবং ডেনমার্ক তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল প্রায় দুই সপ্তাহ আগে।

জার্মানিতে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে এমন করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭২ হাজার। অন্যদিকে ডেনমার্কে এই সংখ্যা ২ হাজার ৮৬০।

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে যে ভিসাবিহীন চলাচলের ব্যবস্থা চালু আছে, তার ফলে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্য সীমান্ত প্রায় উঠেই গিয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সীমান্ত আবার ফিরে আসছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সীমান্তে কড়াকড়ি ফিরেছে প্রায় ২৫ বছর পর। কিন্তু এই প্রবীণ দম্পতির ভালোবাসাকে আটকাতে পারেনি এই মহামারি কিংবা সীমান্তের বাধা।

জার্মানির সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান ডয়েচে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষা‌কারে রাসমুসেন বলেন, ‘এটা খুবই খারাপ, কিন্তু আমরা তো এটা বদলাতে পারবো না।’

সীমান্তের দুই দিকে নিরাপদ দূরত্বে বসে থাকা এই দম্পতিকে দেখতে পেয়েছিলেন নিকটবর্তী শহর টন্ডের এর মেয়র। তিনি তখন বাইক চালিয়ে সেই পথে যাচ্ছিলেন।

এ প্রবীণ দম্পতির প্রথম দেখা হয়েছিল দুবছর আগে। গত এক বছর ধরে তারা প্রায় প্রতিদিন দেখা করে একসঙ্গে সময় কাটিয়েছেন।

রাসমুসেন থাকেন ডেনমার্কের শহর গেলেহাসে। অন্যদিক তার প্রেমিক হ্যানসেন থাকেন জার্মান শহর সাডারলাগামে।

যখন হ্যানসেন তার প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে আসেন তখন কখনও কখনও সাথে নিয়ে আসেন এক বোতল লেমনেড। যদিও রাসমুসেনের কফিই বেশি পছন্দ। কারণ তাকে দীর্ঘপথ গাড়ি চালিয়ে সেখানে আসতে হয়। আর কেনা জানে কফি ঘুম বা ঝিমুনি কাটাতে সহায়তা করে। একটি ড্যানিশ সংবাদপত্রকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন বৃদ্ধা রাসমুসেন।

রাসমুসেন ও হ্যানসেন এক সঙ্গে বেড়াতেও গেছেন আগে। পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক হবে, তখন তারা আবার এক সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

করোনাভাইরাসের বিশ্বমহামারী বিশ্বজুড়ে মানুষের স্বাভাবিক জীবনে বিরাট উলট-পালট ঘটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেও এই যুগল নিজেদের ভালোবাসা সজীব রাখার অভিনব উপায় খুঁজে বের করেছেন।

আর দুজনের প্রতি দুজনের এই টান আর ভালোবাসাই আজ তাদের রীতিমত তারকায় পরিণত করেছে। আমরা চাই এই প্রেমিক যুগল আরও অনেকদিন বেঁচে থাকুন এবং দুজন দুজনের সান্নিধ্য উপভোগ করুন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এমএ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত