ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

খাবারের টাকা বাঁচিয়ে মেগাবাইট!

  রিয়াজুল হক

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২০, ২১:৪১

খাবারের টাকা বাঁচিয়ে মেগাবাইট!

সন্ধ্যার পর রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। রাস্তা প্রায় ফাঁকা। একজন অল্পবয়সী রিকশাওয়ালা ছেলে রাস্তার পাশে রিকশা রেখে মোবাইল নিয়ে খুব ব্যস্ত। আমি কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, যাবে কিনা?

ছেলেটি তার হাতের স্মার্টফোন আমাকে দেখিয়ে বলল, ২ জিবি কেনার জন্য মেসেজ পাঠাইলাম। টাকাও কাইটা রাখছে। কিন্তু এমবি আসে নাই। তাই কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিতাছি। কিন্তু কাজ হইতাছে না।

আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, তুমি যাবে? ছেলেটি উত্তর দিল, উঠেন।

প্যাডেল ঘুরাতে ঘুরাতে ছেলেটি বলতে লাগলো, এমনিতেই প্যাসেঞ্জার কম। আয় অনেক কইমা গেছে। এখন ২ জিবি যদি চালু না হয়, তাহলে টাকা পানিতে গেল। আবার কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিয়া টাকা নষ্ট হইল। রিকশা চালাতে চালাতেই ছেলেটি তার এক বন্ধুকে ফোন দিয়ে বলল, মেসেজ পাঠাইছি, টাকাও কাইটা রাখছে কিন্তু নেট তো চালু হয় নাই। টাকা কাইটা রাখলে এমবি দেবে না, এইটা কেমন কথা। আচ্ছা আমি প্যাসেঞ্জার নামাইয়া আইতাছি। তুই থাকিস।

ছেলেটার কথা শুনে বুঝতে পারছিলাম, ইন্টারনেট হয়তো তার খুবই জরুরি। তাই তাকে জিজ্ঞেস করলাম, জিবি দিয়ে কি করবা? কোন জরুরি কাজ আছে?

ছেলেটি উত্তর দিল, সকালের থাইকা এখনো ফেসবুক লগ ইন করতে পারি নাই।

এই উত্তর শোনার পরে আমার আর কোন নতুন প্রশ্ন ছিল না। তারপরও জিজ্ঞেস করলাম রিকশা কি তোমার নিজের নাকি ভাড়া করা? ছেলেটি জানালো, ভাড়ার রিকশা। দিনে আড়াইশো টাকা ভাড়া দিতে হয়।

বুঝতে পারছি, নেশা এখন শুধুমাত্র বস্তুগত নয়। ফেসবুকের ব্যবহার আমাদের সকল শ্রেণীর মানুষের মধ্যে একটা ভয়ঙ্কর নেশার মত হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই নিজেদের খাবারের টাকা বাঁচিয়ে মেগাবাইট কিনছি। এরপর সারাটা দিন ৫/৬ ইঞ্চি মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আমরা বুঁদ হয়ে থাকছি। এগুলো কিন্তু ভালো লক্ষণ নয়।

লেখক: রিয়াজুল হক, যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত