ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

স্মৃতিতে অম্লান হয়ে থাকবেন ভাইজান

  অসিত বরণ বিশ্বাস

প্রকাশ : ২৭ জুলাই ২০২০, ০০:৪৯  
আপডেট :
 ২৭ জুলাই ২০২০, ০১:১১

স্মৃতিতে অম্লান হয়ে থাকবেন ভাইজান

সুজা ভাইজান আওয়ামী রাজনীতির জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে প্রমাণ করে গেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভালবাসার প্রতি কতটা অবিচল থাকা যায়। মুক্তিযোদ্ধা বা ৭৫ পরবর্তী করুণ সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করার জন্য তার যে অবদান খুলনাবাসীসহ রাজপথ নির্দ্বিধায় তাকে আজীবন স্মরণ করবে। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে আদালত আর কারাগার ছিল সুজা ভাইজানের নিত্যদিনের সঙ্গী। শত শত মিথ্যা মামলা নিয়েও আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে দিনের পর দিন খুলনা জেলার সকল উপজেলার পথে প্রান্তরে কাজ করেছেন তৃনমুলের নেতা কর্মীদের সঙ্গে। এমন কোন স্থান নাই যেখানে সুজা ভাইজানের পদচারণা পড়েনি। তিনি আজীবন দল ও মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন।

কমার্স কলেজে ছাত্র রাজনীতি করার সময় সুজা ভাইজান এবং খালেক ভাইয়ের খুবই আস্থাভাজন হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার।পরবর্তীতে দক্ষিণ বঙ্গের অবিভাবক শেখ হেলাল ভাই, খালেক ভাই এবং সুজা ভাইজানের সমন্বয় এর সিদ্ধান্তে জেলার রাজনীতি করার সুবাদে সুজা ভাইজানের সান্নিধ্যে থাকার সুযোগ হয়েছিল আমার।

১৯৮৬-৯০ স্বৈরাচারি সরকার, ১৯৯১-৯৬ বিরোধী দল, ১৯৯৬-২০০১ সরকার দলীয় হুইপ থাকাকালীন সময়েও সর্বদায় তার পাশে থেকেছি। তিনি আমাকে খুবই বিশ্বাস করতেন এবং ভালবাসতেন। দল বা নিজ প্রয়োজনে গোপনীয় অনেক বিষয় বা কাজ আমাকে দিয়ে সম্পন্ন করাতেন। আমার জীবনের দীর্ঘসময় কেটেছে সুজা ভাইজানের সাথে। ভাইজানের সাথে মিশে আছে কত স্মৃতি কত কথা।

ছাত্রলীগের সভাপতি থাকাবস্থায় তারই সকল উপদেশ - পরামর্শ আমার দায়িত্ব খুবই সহজ করেছে। তিনি সব সময় ছিলেন সাহসী এবং আপোষহীন নেতা। খুলনাসহ সমগ্রদেশে মানুষ এককভাবে ‘ভাইজান’ হিসাবেই চেনেন। ক্লিনহার্ট অপারেশন নামে বিএনপি- জামাতের যে নরকীয় তাণ্ডব চালিয়েছিল তার প্রথম শিকার ছিলেন ভাইজান। তার উপর যে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছি তা বলার বাহুল্য রাখে না। আমরা সে সময় রংপুর কারগারে গিয়েছিলাম তাকে দেখতে। এখনও রংপুর কারাগারের সে দৃশ্য চোখে ভাসলে গায়ে শিহরণ জাগে। আমরা অবাক হয়েছিলাম সেদিন তাকে সান্তনা দিতেই উল্টো তিনিই আমাদের সান্তনা দিয়েছিলেন। জেলখানায় বসে সাধারণ মানুষের খোঁজ-খবর রাখতেন সর্বদা। অথচ নিজেই জীবন - মরণ সন্ধিক্ষণে।

সুজা ভাইজান সর্বদা দল ও কর্মীদের মূল্যায়ন করতেন। সাধারণ মানুষের সুখ - দুঃখ, ব্যাথা - বেদনা নিজের মতন করে মোকাবেলা করতেন। তার সবচেয়ে বড় গুণ ছিল যে কোন পরিস্থিতি মুহূর্তের ভিতর সামাল দিয়ে দক্ষ রাজনীতিবিদের পরিচয় দিতেন। তার ব্যক্তিত্ব, স্মার্টনেস, স্মরণ শক্তি, দুরদর্শিতা, কর্ম ক্ষমতা ছিলো তুলনাহীন। যে কোন মানুষ প্রথম দর্শনেই মুগ্ধ হয়ে যেত। তার সাংস্কৃতিক এবং ক্রীড়াঙ্গানে অপরিসীম ভূমিকা চিরস্মরনীয়।

তিনি ছিলেন বহু গুনে গুণান্বিত একজন মানুষ। দলের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে সেটা প্রমাণ করেছেন। দলকে তিনি সব কিছু উজাড় করে দিয়েছেন বিনিময়ে কি পেয়েছেন সেটা জানি না তবে তিনি যে লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয়ে মনি কোঠায় আছেন সেটা তার শেষ বিদায়ে প্রমাণিত। লক্ষ হৃদয় জয়ী মানুষের অমর নেতা প্রিয় ভাইজান। স্বচিত্র হৃদয়ে আপনি থাকবেন আজীবন। ভাল থাকুন পরপারে।

আপনি ওপারে বসে দোয়া করবেন ভাইজান, আপনার স্নেহের অসিত হয়ে রাজনীতিতে যেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারি জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে যেন আজীবন কাজ করে যেতে পারি।

লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা এবং তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত