ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

প্রাথমিকের শিক্ষকরা চান খোলা আকাশ

  আয়েশা আকতার

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২০, ১৬:৫৪  
আপডেট :
 ১৮ আগস্ট ২০২০, ১৬:৫৬

প্রাথমিকের শিক্ষকরা চান খোলা আকাশ

যেকোনো কাজের স্বীকৃতি আরো ভালো কাজের রূদ্ধদ্বারকে উন্মোচিত করে। যাও, তুমি পারবে না এ কথাটি মানুষের মনকে ভেঙেচুরে নিঃশেষ করে দেয়। একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শয়নে-স্বপনে, নিদ্রায়-জাগরণে শুধু শিশুর উন্নয়নেরই স্বপ্ন দেখেন। কিভাবে শিশুকে যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা যায় তার জন্য নিরলস পরিশ্রম করেন।

মা যেমন শিশুর মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারেন শিশুর কী প্রয়োজন, ঠিক তেমন প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে কী প্রয়োজন তা শিক্ষক ভালোভাবে বুঝতে পারেন। একজন শিক্ষক হাতে-কলমে শিশুর চাহিদা নিরুপণ করেন। শিক্ষকসম্প্রদায় শুধু শিক্ষাদানই নয়, শিশুর উপযোগী, উন্নয়নে অগ্রগামী, প্রাণবন্ত প্রাথমিক শিক্ষার রূপরেখা প্রণয়নে ও বাস্তবায়নে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত রাখতে সক্ষম।

১৯৮৫ সালের নিয়োগ বিধি মোতাবেক ৭৫% শিক্ষকের বিভাগীয় প্রার্থীতার সুযোগ ছিল, তা ১৯৯৪ সালের নিয়োগবিধিতে ৫০% এ নামিয়ে আনা হয়। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে শিক্ষকের প্রাণ ধুকে ধুকে বেঁচে ছিল। আবার ২০১৯ সালের নিয়োগবিধিতে তা আরও সংকুচিত করে সহকারী শিক্ষকদের জীবনের স্বীকৃতি নামক আশার প্রদীপকে চিরতরে নিভিয়ে দেয়া হয়েছে। সহকারী শিক্ষকরা চান প্রাথমিক শিক্ষার খোলা আকাশ।

নতুন সরকারি বিদ্যালয়ে পোস্ট ৫টি, পুরাতন সরকারি অধিকাংশ বিদ্যালয়ে অনুমোদিত পদ ৬-৭ টি। এই কয়জন শিক্ষকের তদারকির জন্য একজন প্রধান শিক্ষকই যথেষ্ট। প্রধান শিক্ষকের অফিসিয়াল কাজ কমাতে অফিস সহকারী প্রয়োজন, সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রয়োজনীয় নয়।

প্রচলিত নিয়মানুসারে সহকারী শিক্ষকদের প্রোমোশন পেয়ে প্রধান শিক্ষক হতেই চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাবে। ফলে সহকারী শিক্ষকরা একটা গন্ডির মধ্যে আটকা পড়ে যাবেন। প্রশাসনিক কার্যে অবদানের যে সুযোগের কথা বলা হচ্ছে তা আদৌ সম্ভব নয়, এ যেন এক শুভঙ্করের ফাঁকি।

এতে প্রাথমিক শিক্ষার গতি হ্রাস পাবে বলে আমি মনে করি। প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রাণের দাবি ছিল প্রধান শিক্ষকদের ১০তম গ্রেড এবং তাদের নিচের ধাপে সহকারী শিক্ষকদের গ্রেড। কিন্তু সহকারী শিক্ষকদের দেয়া হল ১৩ তম গ্রেড যা ফিক্সেশনে শিক্ষকদের বেতন কমে যায়। এ সকল সমস্যা থেকে উত্তরণ ও প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে নিচের বিষয় গুলো বিবেচনায় নেয়ার জন্য কতৃপক্ষের নিকট বিনীত প্রাথর্না করছি।

# শিক্ষকদের ১০০% পদোন্নতি

# বিভাগীয় প্রার্থীতা নিশ্চিতকরণ

# ১৩তম গ্রেডে উচ্চধাপে ফিক্সেশন

# সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ সৃষ্টি না করা

# অফিস সহকারী পদ সৃষ্টি করা

আশা করি কর্তৃপক্ষের হৃদয়ে শিক্ষকদের জন্য যে অসীম, প্রগাঢ়, নিরন্তর ভালোবাসা আছে, তা দিয়ে শিক্ষকদের এ দুঃখ দুর্দশা দূর করবেন। শিক্ষকদের প্রাণের দাবিকে সম্মান দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষায় সার্বিক অবদান রাখতে সহযোগিতা করবেন।

লেখক: বিএসএস অনার্স (অর্থনীতি), রাবি।

সহকারী শিক্ষক

মাটিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহনপুর, রাজশাহী

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত