ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

ব্রুনাইয়ে মানব পাচার, কোটি কোটি টাকা লোপাটকারী হিমু গ্রেপ্তার

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২২:৩০

ব্রুনাইয়ে মানব পাচার, কোটি কোটি টাকা লোপাটকারী হিমু গ্রেপ্তার

ব্রুনাইয়ে মানব পাচারের মূল হোতা মেহেদী হাসান বিজনের অন্যতম সহযোগী শেখ আমিনুর রহমান হিমুসহ মানব পাচার চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদসরা। হিমু কখনো সংসদ সদস্য, কখনো বা অক্সফোর্ড থেকে ডিগ্রি নেয়া প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন। নিজের এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য মানুষকে ব্রুনাইয়ে চাকরি দিয়ে থাকেন বলে দাবি করে হাতিয়ে নিতেন মোটা অংকের টাকা।

এমন অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে ৪০০ মানুষের কাছ থেকে তিন কোটি হাতিয়ে নেন শেখ আমানুর রহমান হিমু। বুধবার দুপুরে রাজধানীর কাফরুল এলাকা থেকে এনএসআই ও র্যা ব-৩ এর যৌথ অভিযানে শেখ আমিনুর রহমান হিমু এবং তার সহযোগী আরো দুজন মো. নুর আলম (৩৬) ও বাবলুর রহমানকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হিমুর দেহ তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলিভর্তি ম্যাগাজিন পাওয়া যায়।

র‌্যাব জানায়, ২০১৯ সালে হিমু ব্রুনাইয়ে মানবপাচারের মূলহোতা মেহেদী হাসান বিজনের কোম্পানির নামে ভুয়া ডিমান্ড লেটার সংগ্রহ করে ৬০ জনকে ব্রুনাইয়ে পাঠান। ভুক্তভোগীরা ঋণ করে ও জমিজমা বিক্রি করে ব্রুনাইয়ে গিয়ে কোনো কাজ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে নিজ খরচে দেশে ফিরে আসেন। হিমুর নিজের কোনো রিক্রুটিং লাইসেন্স নেই। তিনি নজরুল ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস ও হাইওয়ে ইন্টারন্যাশনাল আরএল ব্যবহার করে ব্রুনাইয়ে মানবপাচার করেন।

র‌্যাবের দাবি, হিমু বাংলাদেশে মানবপাচারকারী চক্রের মূলহোতা মেহেদী হাসান বিজনের অন্যতম সহযোগী। মাসে ৪০ হাজার টাকার বেতন, থাকা-খাওয়া, সাথে বোনাস-এমন লোভনীয় চাকরির প্রলোভনে ৩-৪ লাখ টাকার বিনিময়ে ব্রুনাইয়ে মানবপাচার করতেন হিমু ও তার সহযোগীরা। বিদেশে গিয়ে চাকরি তো দূরে কথা, নির্যাতন আর ব্রুনাইয়ের জেলে সাজা খাটাই হতো হতভাগ্য মানুষগুলোর নিয়তি।

ভুক্তভোগী একজন জানান, মায়ের গয়না ও জমি বিক্রি করে ব্রুনাই গিয়েছিলাম। আবার নিজের টাকা খরচ করে দেশে ফিরে এসেছি। আমরা এখন নিঃস্ব। সর্বস্ব হারিয়ে দেশে ফিরে আসা মানুষ টাকা ফেরত চাইলে দেয়া হতো জাল চেক আর মামলার হুমকি।

বুধবার বিকালে (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর টিকাটুলিস্থ র‌্যাব-৩ ব্যটালিয়ন হোডকোয়ার্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. কর্নেল রাকিবুল হাসান।

তিনি বলেন, ব্রুনাইয়ে মানব পাচারের ঘটনায় অসংখ্য ভিকটিম র‌্যাব-৩ কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায় যে, ব্রুনাইয়ে মানব পাচারের মূল হোতা মেহেদী হাসান বিজন ও আবদুল্লাহ আল মামুন অপুর অন্যতম সহযোগী হচ্ছে শেখ আমিনুর রহমান হিমু। তিনি দীর্ঘ দিন দেশের বাইরে ছিলেন। মেহেদী হাসান বিজনের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের ব্যবসায়ী সম্পর্ক রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিজনের চাহিদানুযায়ী দেশ থেকে অবৈধভাবে ব্রুনাইতে মানবপাচার করতেন তিনি। তাকে আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত ছিল।

এদিকে নামসর্বস্ব ৩ হাজার ভুয়া এজেন্সির বিরুদ্ধে শিগগিরই প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে বলেও জানায় র‌্যাব।

গত ১০ সেপ্টেম্বর ব্রুনাইয়ে মানবপাচারের শিকার ভুক্তভোগীরা ব্রুনাইয়ে অবস্থানকারী বাংলাদেশি দালাল মেহেদী হাসান বিজনকে গ্রেপ্তারের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত