ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

চাকরির প্রলোভনে তিন কোটি টাকা লোপাট

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৪২  
আপডেট :
 ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৫৫

চাকরির প্রলোভনে তিন কোটি টাকা লোপাট

রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ার কার্গোতে বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে তিন কোটি টাকা আত্মসাত চক্রের মূল হোতা আমিনুর ইসলাম লালুকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি মিডিয়া) জিসানুল হক জিসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গ্রেপ্তার আমিনুর ইসলাম লালু দুই শতাধিক চাকরি প্রার্থীর কাছে থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এয়ার কার্গোতে চাকরি দেয়ার নাম করে তিনি এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এর আগে সোমবার তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় মামলা করেন একজন ভুক্তভোগী। মামলার প্রধান আসামি করা হয় আমিনুর ইসলাম লালুকে। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জিসানুল হক জানান, লালু কয়েকটি ভুয়া আউটসোর্সিং কোম্পানি খুলে সেসব কোম্পানির মাধ্যমে বিমানবন্দরে চাকরি দেয়ার জন্য চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন। কোম্পানিগুলো হচ্ছে- এনবিজি এয়ার কার্গো লিমিটেড, নর্থ বেঙ্গল আউটসোর্সিং লিমিটেড, বগুড়া ডেভেলপার অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, বগুড়া ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, মেসার্স হযরত শাহ্ আলী বোগদাদী (রা.) এন্টারপ্রাইজ, নর্থ বেঙ্গল বাজার বিডি লিমিটেড, মেসার্স নুরে মুজেসসুম কর্পোরেশন, এনবিও সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড ও মেসার্স গরিবে নেওয়াজ এন্টারপ্রাইজ।

সিআইডি কর্মকর্তা জিসানুল হক জানান, লালু এসব কোম্পানি খুলে এখান থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এয়ার কার্গো বিভাগের বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়ার নাম করে দুই শতাধিক চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ভিকটিম পার্থ পালকে (মামলার বাদী) পিয়ন পদে চাকরি দেয়ার জন্য দুই লাখ টাকা নেন।

এছাড়া ভিক্টিম অজয় রায় ও অনুতম বর্মনের কাছ থেকে সুপার ভাইজার পদের জন্য দুই লাখ ১৫ হাজার, লোডার পদের জন্য পলাশ চন্দ্র থেকে এক লাখ ৫০ হাজার, প্রিয় রঞ্জনেরর কাছ থেকে জুনিয়র এক্সিকিউটিভ পদের জন্য দুই লাখ ৫০ হাজার, নাঈম রানা ও পবিত্র পালের কাছ থেকে অ্যাসিসটেন্ট পদের জন্য দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীরা প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে সিআইডি'র সহায়তা চান। এরই ধারাবাহিকতায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে আমিনুর ইসলাম লালুকে গ্রেপ্তার করা হয়।

লালুকে গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ৭৩টি ইসলামী ব্যাংক লি. এর ডেবিট কার্ড, নর্থ বেঙ্গল আউট সোর্সিং লিমিটেডের ইস্যু করা বিভিন্ন কর্মচারীর নামে ৯০টি আইডি কার্ড, একটি কম্পিউটার সিপিইউ, একটি প্রিন্টার, লালুর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে সাতটি ব্যাংকের চেক বই, দুটি পাসপোর্ট, নর্থ বেঙ্গল আউটসোর্সিং লি. এর ফর্মে বিভিন্ন পদের জন্য চাকরিপ্রার্থীদের আবেদপত্র ৮৪টি, লালুর নিজের তিনটি এটিএম কার্ড, এনবিজি এয়ার কার্গো লিমিটেডের প্যাডে আসামি আমিনুর ইসলাম লালু স্বাক্ষরিত পুলিশ তদন্ত রিপোর্টে অতিরিক্ত আইজিপি স্পেশাল ব্রাঞ্চ মালিবাগ, ঢাকা বরাবর প্রেরিত আবেদনপত্র ১১টি।

এদিকে লালুর গ্রেপ্তারের সংবাদ পেয়ে ৫০-৬০ জন ভুক্তভোগী সিআইডি অফিসে হাজির হন। যাদের কাছ থেকে প্রতারক চক্রটি ইতোমধ্যে প্রায় দুই থেকে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

আরো পড়ুন পাসপোর্ট-ভিসা জালিয়াতির হোতা মাসুম আটক মানবপাচার চক্রের হোতা গ্রেপ্তার

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত