ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলন পুরোটাই রাজনৈতিক

  শেখ তৌফিকুর রহমান

প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২০, ১৫:৩৬  
আপডেট :
 ১৮ ডিসেম্বর ২০২০, ১৬:৫১

ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলন পুরোটাই রাজনৈতিক
রত্ন আহমেদ। ছবি: নিজস্ব।

প্রাচীন ঐতিহ্য, প্রত্নতাত্মিক ঐশ্বর্য্যমণ্ডিত বরেন্দ্রভূমিসংলগ্ন নাটোর জেলার অতিপরিচিত মুখ রত্না আহমেদ। স্থানীয় সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রত্না নাটোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার নেতৃত্বে স্থানীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং দলীয় কার্যক্রম সমান গতিতে এগিয়ে চলছে।

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ও পুত্রবধূ রত্না আহমেদের রাজনীতি আসা ছাত্রলীগের মাধ্যমে। ১৯৭৪ সালে নবাব সিরাজ উদ-দৌলা কলেজে ভর্তি হয়ে সক্রিয় হন রাজনীতিতে। ১৯৯১ সালে নাটোর সদর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে দায়িত্ব পান নাটোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে। ২০০৯ সালে নাটোর সদর উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে প্যানেল চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে রত্না জেলা মহিলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এবং ২০১৫ সালে নাটোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সংরক্ষিত মহিলা আসন-৪৩ এর সদস্য মনোনীত করেন। রাজনীতির পাশাপাশি এমপি রত্না আহমেদ নাটোর জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি, ব্রহ্মপুত্র দুস্থ নারী কল্যাণ সংস্থার সভাপতি, নাটোর মহিলা পরিষদের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়া গ্রামীণ মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন।

রাজনীতি এবং সামজিক কর্মসূচির পালন করা ছাড়াও সংসার জীবনে এমপি রত্না একজন আদর্শ মা। এক পুত্র এবং এক কন্যা সন্তানের জননী। স্বামী জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আহমেদ হোসেনের মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন তিনি। ছেলে মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলেন। বর্তমানে ছেলে এবং মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। সম্প্রতি দেশের সামগ্রিক অবস্থা, স্থানীয় রাজনীতি, সামাজিক কর্মকাণ্ডসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন তিনি। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জার্নালের নিজস্ব প্রতিবেদক শেখ তৌফিকুর রহমান। সাক্ষাৎকারের মূল অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

বাংলাদেশ জার্নাল: আপনি রাজনীতিতে এলেন কীভাবে?

রত্না আহমদে: আমি একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নববিধান বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলাম। সে সময় বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করি। তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা শহীদ রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। এরপর ১৯৯১ সালে শংকর চৌধুরীর হাত ধরে মহিলা লীগের রাজনীতি শুরু করি। মূলত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশে অনুপ্রাণিত হয়েই মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত হই।

বাংলাদেশ জার্নাল: রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কতটুকু ধারণ করতে পেরেছেন?

রত্না আহমদে: আমি ছোট বেলা থেকেই নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তৈরি করেছি। বঙ্গবন্ধু সত্য ও ন্যায়ের পথে ছিলেন সব সময় অবিচল। কখনো তিনি অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি। আমিও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী এবং সত্যের পথে ছিলাম, আছি এবং থাকবা।

দুস্থ-অসহায় নারীদের পাশে রত্না আহমেদ। ছবি: নিজস্ব।

বাংলাদেশ জার্নাল: আপনি তো নাটোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, তো আপনার ইউনিটের সাংগঠনিক অবস্থা কেমন?

রত্না আহমদে: আমি নিজে সম্মেলনের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। এছাড়া বিভিন্ন থানা ইউনিটের সম্মেলন করেছি। এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলে নাটোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে অনেক শক্তিশালী। ইউনিটের প্রতিটি নেতাকর্মী সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম জনগণের মাঝে প্রচারের পাশাপাশি বিভিন্ন গুজব প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের নেতাকর্মীরা নিয়মিত উঠান বৈঠক করে থাকেন। এর ফলে গ্রামগঞ্জসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাংগঠনিক কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন গুজবের বিরুদ্ধে গ্রামীণ নারীরা সোচ্চার হতে পারেন। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন সেবা সম্পর্কেও মানুষ জানতে পারে।

বাংলাদেশ জার্নাল: সম্প্রতি দেশে ভাস্কর্য নিয়ে নানা বিতর্ক দেখা গেছে। বিষয়টি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

রত্না আহমদে: মূর্তি ও ভাস্কর্য কখনই এক নয়। এই ইস্যু নিয়ে এক শ্রেণির মানুষ দেশে জল ঘোলা করতে চায়। বিশ্বের সব রাষ্ট্রেই ভাস্কর্য রয়েছে। ইসলামিক রাষ্ট্র, যেমন মিসর, সৌদি আরব, ইরাক, ইরান, কাতার, দুবাই, আবুধাবি সব জায়গায় ভাস্কর্য রয়েছে। কোথাও ভাস্কর্য ইস্যু নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে না। দেশে আগেও ভাস্কর্য তৈরি হয়েছে। বিএনপি আমলে জিয়ার ভাস্কর্য তৈরি হয়েছে, তখন কিন্তু এরা আন্দোলন করে নাই। সুতরাং বুঝতে হবে, ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলন পুরোটাই রাজনৈতিক।

বাংলাদেশ জার্নাল: করোনার ক্রান্তিলগ্নে কীভাবে জনগণের পাশে ছিলেন?

রত্না আহমদে: বৈশ্বিক মহামারিতে নিজে থেকেই সার্বিকভাবে এলাকার মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছি। নিজের ও সরকারি অনুদানের পাশাপাশি পরিচিতদের কাছ থেকে পর্যন্ত সাহায্য নিয়ে অসহায় ও কর্মহীনদের পাশে ছিলাম। বিশেষ করে মহিলারা সরকারের সেবা থেকে যেন বঞ্চিত না হন সেজন্য কাজ করে গেছি। সব প্রকার সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি সচেতেনতা তৈরিতে কাজ করে গেছি।

বাংলাদেশ জার্নাল: রাজনীতির পাশাপাশি আর কী করছেন?

রত্না আহমদে: রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আমি জড়িত। জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করছি। নারীদের আত্মনির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত