প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২২:১৬
পার্থ মল্লিক-এর মানুষ রঙের পাখিরা
অশ্রু-ঢল
|আরো খবর
আকাশ কালো হয়ে এল, ঘোর শ্রাবণ!
বাবা বলল, কোথায়?
আমি বললাম, দেখছ না শালিকেরা কদমফুল কুড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে!
আকাশে কান্নার শব্দ, ঈশান কোণে সাঁঝ নেমে এল।তারপর বৃষ্টি এল।
বাবাকে বললাম, দেখো বাবা খুব বৃষ্টি হচ্ছে!
বরষার ঢাল আমাদের উঠোন বেয়ে নদীর দিকে যাচ্ছে।
বাবা আমাকে ছুঁয়ে বলল, ঐ দেখ তোর মা কাঁদছে-
আর তারই অশ্রু, বৃষ্টির জলের মতো ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে আমাদের ঘরবাড়ি।চশমা
যদি মানুষের বদলে চশমা হওয়া যেত, আমি চশমা হতাম;
আব্বা আমায় চোখে পরতেন-
আমি তাঁর চোখের আলো বাড়িয়ে দিতাম।আব্বা আমায় বুকপকেটে রাখলে,
আমি তাঁর নিঃশ্বাস গুনতাম;
তিনি কখনও কাঁদলে,
তাঁর চোখের জল আমার ওপর গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ত।কখনও ভেঙে গেলে, আব্বা আমাকে যত্ন করে জুড়ে দিতেন
আর চোখে পরতেন;
আমি আব্বার চোখের আলো বাড়িয়ে দিতাম।আমার কবি হওয়া
শুনেছি কবিরা শব্দ নিয়ে খেলা করে-
যেহেতু নিজেকে কবি ভাবতে শুরু করেছি
তাই আমিও শব্দ নিয়ে খেলতে শুরু করলাম,
খেলতে খেলতে হঠাৎ
হাত থেকে কয়েকটা শব্দ পড়ে গিয়ে ভেঙে গেল;
জোড়া লাগানোর জন্য অনেক চেষ্টা করলাম,
বাজার থেকে আঠা কিনে আনলাম,
কিন্তু কিছুতেই তারা জোড়া লাগল না-
পরে বুঝতে পারলাম,
কবি হওয়া আমার কম্ম নয়।বেহাগ
তোমার নামে সুর লিখে আমি
হেঁটে গেছি হলুদ সন্ধ্যায়
সেই পথে স্মৃতি ছিল কার
ফেলে গেছি, তবু তুলিনি পাতায়
বিষম আষাঢ়ে মুছে গেছে যার
মুছে গেছে অশ্রুর দাগ
ব্যথা হয়ে তবু থেকে যাও তুমি
কণ্ঠে হও করুণ বেহাগ।অপেক্ষা
আমার জন্য বসে আছে নদী
তাকে বলো চোখে ভীষণ জ্বর
সারাদুপুর বৃষ্টি ভেজায় হেসে
খিল দিয়েছি তাইতো মনের ঘর
খুলব হঠাৎ শরত আসার ভোরে
ডাকবে আমায় শিউলি ফুলের ঘ্রাণ
দূর জানালায় বালিকারা হেসে
আসবে নিয়ে এলোচুলের বাণ
আমার জন্য বসে আছে পাখি
উড়ছে না সে যায় গড়িয়ে বেলা
তার দুচোখে চেয়ে থেকে আকাশ
অবশেষে ভাসায় মেঘের ভেলা
কার জন্যে দাঁড়িয়ে থাকা আমার
সে গিয়েছে পেছন দুয়ার খুলে
মনে আছে তাকে দেওয়া কথা
সে গিয়েছে আমার কথা ভুলে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমএম