ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

সত্তর বছরের পুরনো কুয়োর ঐতিহ্য ধরে রেখেছে পরিবারটি

  আতাউর ফারুক, মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৯ মে ২০২১, ১৫:২১  
আপডেট :
 ০৯ মে ২০২১, ১৬:৪৬

সত্তর বছরের পুরনো কুয়োর ঐতিহ্য ধরে রেখেছে পরিবারটি
সত্তর বছরের পুরনো সেই কুয়ো।

ঠিক সত্তর বছর আগে কুয়োটি খনন করিয়েছিলেন আব্দুল বাতেনের পিতা আব্দুল কাদির। তার পিতার আমল থেকেই এ কুয়োর পানিতে তাদের সব পারিবারিক নির্ভরশীলতা। সেই থেকে আজও এ পাকা কুয়োর পানিতে পরিবারটির সমস্ত গার্হস্থ প্রয়োজন পূরণ হচ্ছে। রান্না-বান্না, অজু, গোসল থেকে শুরু করে খাবার পানির প্রয়োজনেও পরিবারটির একমাত্র নির্ভরশীলতা এ কুয়োটিই।

নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার খিদিরপুর ইউনিয়নের পূর্ব মনতলা গ্রাম। এ গ্রামের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ নিশাতের মাধ্যমে প্রথমে এ কুয়োর সন্ধান মেলে।

এ গ্রামের একমাত্র কুয়োর মালিক আব্দুল বাতেন (৭২) জানান, তার শৈশবে পিতা আব্দুল কাদির পারিবারিক পানীয় জলসহ সব রকম গার্হস্থ প্রয়োজনে এ কুয়ো খনন করান। শৈশবে খেলাচ্ছলে খননকারীদের সাথে তিনি নিজেও এর খননকাজে অংশ নেন। আব্দুল বাতেনের বাড়িতে এ কুয়োর ধারে বাঁশের মাচায় বসে রোববার দুপুরে আলাপ হচ্ছিলো তার সাথে।

আলাপ প্রসঙ্গ তিনি জানান, পিতার আমলে খননের পর থেকে যেভাবে কুয়োটি তার পারিবারিক পানির প্রয়োজন মিটাতো, আজও তাই মিটছে। পার্থক্য এ টুকুই আগে পাড়া প্রতিবেশীরাও এ কুয়োর উপর নির্ভরশীল ছিলেন। কালের বিবর্তনে আজ সবার বাড়িতেই টিউবওয়েল। কিন্তু তিনি এখনো তার পারিবারিক সব ধরনের পানির প্রয়োজনেই এ কুয়োর ব্যবহার ধরে রেখেছেন। কুয়োর কাছে তার নিজেরই একটি টিউবওয়েল রয়েছে। কিন্তু তা সম্পূর্ণই পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখা গেলো। কিন্তু কি এর কারণ- কেন আজও প্রাচীন কালের মান্ধাতা আমলের কুয়ো ব্যবহার করছেন তিনি। বিশেষত: টিউবওয়েল থাকার পরও-?

জবাবে হাসেন আব্দুল বাতেন বলেন- কারণ কুয়োর পানি সুস্বাদু, সুমিষ্ট, সুপেয়। গরমে আরাম। তাছাড়া পুরনো ঐতিহ্য এবং স্মৃতি নষ্ট হতে দিতে চান না তিনি। তার জীবদ্দশা পর্যন্ত এভাবেই চলুক। পরে যা-ই হোক না কেন তা তিনি দেখবেন না।

সেখানে উপস্থিত আব্দুল বাতেনের ছেলের বৌ তানিয়া জানান, তারা সাংসারিক সব কাজেই এ কুয়োর পানি কাজে লাগাচ্ছেন। যদিও তাদের আশেপাশের সবাই টিউবওয়েল নির্ভরশীল। কিন্তু তারা এ কুয়োর বিকল্প কিছু আর ভাবছেন না এখন।

তাদের পড়শি আনোয়ার হোসেন (৩২) জানান, তাদের গ্রামে আগে ৬/৭টি কুয়ো ছিলো। সর্বশেষ কুয়োটি ছিলো গ্রামের আ. রহমানের। বন্ধ হয়ে যায় মাত্র বছর তিনেক আগে। এখন অত্র এলাকায় প্রাচীন কুয়োর ঐতিহ্য বলতে আছে কেবল এ কুয়োটিই।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত