বিধিনিষেধে রাতের ঢাকা
আসিফ হাসান কাজল
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২১, ০২:১৭
অফিস শেষে ফেরার সময়। হাসপাতালের সামনে রোগী-এ্যাম্বুলেন্সগুলোর জটলা দেখি। দেখি পণ্য পরিবহনের শো শো শব্দে ছুটে চলা ট্রাক।
রাস্তায় জমে থাকা চেকপোস্টের ড্রাম৷ দেখা যায় পুলিশের অনুপস্থিতি।
শাহবাগ পার হতেই বাম পাশে বারডেম হাসপাতাল। সেখানেও রিকশার জটলা, মানুষের মৃদু কোলাহল।
এরপরেই শূন্যতা ঘিরে ধরে, হিম ঠাণ্ডায় শরীরে শিহরণ জাগে। রমনার সবুজ গাছে।
পাশেই দেখা যায়, যৌনকর্মীদের সরব উপস্থিতি। আর জ্বলন্ত আগুনে গাঁজা সেবন। ধোঁয়ার সঙ্গে মিলিয়ে যেতেই চোঁখে পড়ে কিছু ভ্রাম্যমান পান-সিগারেট ফেরিওয়ালা।
কাকরাইল মসজিদ পার হতেই বাঁয়ে ভিআইপি সড়ক। এসইউভি গাড়ির ছাদ খুলে শিশুর উঁচুমুখ দেখা যায়, দেখি বড়লোকের বিধি-নিষেধ পালন।
এর আগে রমনা পার্ক ঘিরে শুয়ে থাকা মানুষ। আমায় ভাবায়..... ওদের বৃষ্টির ভয় নাই, মেঘের গর্জনে মনে কাপন নাই। ঘুমের কী গভীরতা।
অথচ মানুষ নিরাপদে থাকতে চাই। নিরাপদে থাকবে বলে চারদেয়ালের ঘর বানায়, বড় গেট এবং সুরক্ষা বলয়।
আর ওদের মশা কামড়ায়, এরপরও কি নিখাদ শান্তির ঘুম।
চুরির ভয় নাই, কেউ এসে উঠিয়ে দিয়ে বলবে বেটা ভাগ.. ওরা ভাগবে, কিন্তু বেশিদূর নয়।
অথচ আমরা আরো ভাল থাকার আশায়, বাসা বদল করি, চাকরি বদল করি, দেশ বদলাই।
এগিয়ে চলি। দেখি টুপি মাথায় এক বৃদ্ধ সড়কে একা। কীসের যেনো অপেক্ষা। ফুডপান্ডার ডেলিভারি ম্যানের সাইকেলের টুংটাং।
উড়াল সড়কে উঠতেই, হাতে হাতে পলিথিনে পথশিশুদের খুনসুটি। ওরা ড্যান্ডি সেবনে নেশা করে।একজন অন্যজনের উপরে হেলে পরে।
প্রকারান্তরে ওরাই স্বাধীন, ঘরে ফেরার তাড়া নেই। আইন-কানুনের বালাই নেই।
মুগদা হাসপাতাল। ফটকের সামনে এ্যাম্বুলেন্সের শব্দহীন আলো, যেনো এক মৃত্যুপুরী আবহ। মানুষের আর্তনাদ, দৌড়ঝাঁপ। (ফেসবুক স্ট্যাটাস)লেখক: সাংবাদিক
বাংলাদেশ জার্নাল-ওআই