ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

অসহায়দের মুখে হাসি ফোটাবে ‘কলরব ফাউন্ডেশন’

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:৩১

অসহায়দের মুখে হাসি ফোটাবে ‘কলরব ফাউন্ডেশন’
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘কলরব ফাউন্ডেশন’

পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৬ সালে তিন বন্ধুর মাধ্যমে শুরু হয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘কলরব ফাউন্ডেশন’র যাত্রা। তবে এর অফিসিয়াল কমিটি নিয়ে কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। তখন থেকেই ‘হাসিই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার’ স্লোগান নিয়ে মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে এই ফাউন্ডেশন।

ফাউন্ডেশনটি এখন ৫ বছর পাড়ি দিয়ে এখন পা রেখেছে ৬ষ্ঠ বছরে। এরইমধ্যে তারা সম্পন্ন করেছে প্রায় ২১টি ইভেন্ট যার মাঝে দুইটি মিশন অর্থাৎ দুইজন ব্যক্তি ও পরিবারকে তারা সেটেল্ড করে দিয়েছে। সেইসাথে নিয়েছে ১ জন অসহায় মেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব, যার মা-বাবা দুজনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। এই মিশনের মধ্যে মিশন সোহরাব চাচা ও ইয়াসিন চাচা এর অন্যতম।

এছাড়া টংগীর হায়দ্রাবাদ এক মাদরাসা ও এতিমখানায় ইভেন্ট করা জানুয়ারি ২০২১ এর ১৬ তারিখে এরপর থেকে কমবেশি এই জায়গায় সাহায্য করে যাচ্ছে ফাউন্ডেশন থেকে। ইভেন্ট কম হওয়ার পেছনের কারণ ফাউন্ডেশনের সকল মেম্বার শিক্ষার্থী এবং কোন স্পন্সর নেই। তারা নিজেরাই নিজেদের স্পন্সর। গত বছর এবং এই বছর করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করেছে অনেক। করেছে চারটি ইভেন্ট যেগুলো রিক্সাচালক, নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। সবাইকে লকডাউনের মাঝে পাঠানো হয়েছে উপহার (চাল, ডাল, ডিম, পেঁয়াজ, আলু, তেল ইত্যাদি)। প্রায় ১০০ পরিবারের ৮৫০+ জন মানুষের মুখে শুধু লকডাউনেই হাসি ফুটিয়েছে ‘কলরব ফাউন্ডেশন’।

এ বছরের রোজার ঈদ এ প্রায় ১২০ পরিবারে পৌঁছে দেয়া হয়েছে চাল, ডাল, আলু, তেল, চিনি, সেমাই ও মাস্ক। যাদের মাঝে উপহার দেয়া হয়েছে তারা সবাই রিকশাওয়ালা, ভিক্ষুক ও দিনমজুর।

সংগঠকদের ভাষ্যে, মিশন সোহরাব চাচাঃ গত বছর সেপ্টেম্বর এর ১১ তারিখে শেষ হয় মিশন সোহরাব চাচা। প্রায় ৩০ বছর পর ৯০ বছরের ১ জন চাচার বাড়িতে ফেরার গল্প। বয়সে ভারাক্রান্ত ১ জন পিতা যে কিনা সন্তানের কোন সাহায্য না পাওয়াতে এই বয়সেও রিক্সাচালাতো ঢাকার অলিগলিতে। সেখান থেকে পরিচয় চাচার সাথে,অতঃপর চাচার মনের ইচ্ছা শুনে মিশন এর প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। ২৪ আগস্ট ২০২০ এর মিশনের উদ্যোগ নিয়ে মাত্র ১৭ দিনের মধ্যে অনুদান সংগ্রহ করে মিশনকে পরিপূর্ণ রুপ দেয় ফাউন্ডেশনটি। ১১ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর এ চাচার নিজ বাড়িতে চাচাকে তুলে দেয়া হয় অটোভ্যানটি। ভ্যানটি পেয়ে চাচা অনেক খুশি হয়, জীবনের অবশিষ্ট সময় কাটবে তার বাড়িতে স্ত্রীসহ। এই মিশনের একমাত্র কারণ ছিলো চাচার কষ্ট কমানোর ব্যবস্থা, যা ভ্যানটি দেয়ার মাধ্যমে পূরণ হয়ে গেছে। এভাবেই সফলভাবে শেষ হয় মিশন সোহরাব চাচা।

এই ৫ বছর অনেক ঝড় – ঝাপটা উপেক্ষা করতে হয়েছে ফাউন্ডেশনকে। কারণ, নিজেদের পরিচিতদের মাধ্যমে ডোনেশন করে একটা ইভেন্ট করা অনেক কঠিন ব্যাপার তবুও সেটা সক্ষম করে তুলেছে ফাউন্ডেশনের সবাই মিলে। এভাবেই ফাউন্ডেশন অনেক দূর আগাতে চায় সবার সহযোগিতায়। আগাতে হলে প্রয়োজন সবার সহযোগিতা আর কাংখিত ডোনেশন। কলরব ফাউন্ডেশন যে কারো সহযোগিতা গ্রহণে সর্বদা প্রস্তুত।

‘কলরব ফাউন্ডেশন’ এর প্রতিষ্ঠাতা এম ডি ওয়াসেক মাহবুব জিসান এবং ফিন্যান্সিয়াল অফিসার সাদিয়া আফরোজ। প্রতিষ্ঠাতা এম ডি ওয়াসেক মাহবুব জিসানের ভাষ্য, ‘ছোটবেলায় দেখা স্বপ্নটাকে বাস্তব করতে পথচলা শুরু করা ‘কলরব ফাউন্ডেশন’ আস্তে আস্তে সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা অনেকটা সফল হয়েও গেছি। আমাদের কাজ আমরা সঠিকভাবে করার চেষ্টা করি সবসময়। আমাদের ফাউন্ডেশনের বেশিরভাগ মেম্বার শিক্ষার্থী তাই তাদের অনেকের কাজ করার ইচ্ছেটা প্রবল এবং তারা মন থেকে কাজ করে।

ধীরে ধীরে আমরা আরো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। চাই দেশের মানুষের জন্য কছু করতে, কিছুটা হলেও অভাব দূর করে হাসি ফোটাতে। আশা করি আমরা একদিন আমাদের এই স্বপ্নটাকেও বাস্তবে পরিণত করতে সক্ষম হবো। সামনে এগিয়ে যেতে আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’

বাংলাদেশ জার্নাল/আইএন

  • সর্বশেষ
  • পঠিত