ডাকাতির জন্য শনিবার বেছে নিতো তারা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪:৫৭
সাপ্তাহিক ছুটির দিন বিশেষ করে শনিবারকে ডাকাতির জন্য বেছে নেয় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের একটি গ্রুপ। এই গ্রুপ মানি এক্সচেঞ্জ এলাকায় অবস্থান করে ও যে সকল ব্যবসায়ী অধিক পরিমাণে টাকা বহন করে তাদের টার্গেট করে।
টার্গেটকৃত ব্যক্তির তথ্য ডাকাত দলের সহযোগী মোটরসাইকেলে অবস্থানকারী গ্রুপকে দেয়। ওই গ্রুপ টার্গেট হওয়া ব্যবসায়ীকে অনুসরণ করতে থাকে এবং সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছলে ফাঁকা গুলি করে আতংক সৃষ্টির মাধ্যমে উক্ত ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার মূল্যবান জিনিস ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
সম্প্রতি রাজধানীর মৌচাক ফ্লাইওভার ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় জড়িত অস্ত্রসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা রমনা বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- জলিল মোল্লা, রিয়াজ ও দীপু।
বুধবার ঢাকা মহানগরী, সাভার ও যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা রমনা জোনাল টিম। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত ২টি বিদেশি রিভলবার, ৫০ রাউন্ড গুলি, ২টি মোটরসাইকেল ও ডাকাতির ১ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ২৮ আগস্ট একজন ব্যবসায়ী মতিঝিলের নিহন মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ৬০ লাখ টাকা নিয়ে গাড়িতে রওনা দেন। পথে ছয় ডাকাত মোটরসাইকেল করে উক্ত ব্যবসায়ীর গাড়ি অনুসরণ করে দুপুর আনুমানিক ১টা ২০ মিনিটে মৌচাক ফ্লাইওভার এর উপর গাড়িটির গতিরোধ করে। এসময় ডাকাতরা আতংক সৃষ্টির জন্য ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে এবং হাতুড়ি দিয়ে গাড়ির দরজার গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে। এসময় ডাকাতরা গাড়ির ব্যাকডালা খুলে ভিতর থেকে একটি কালো ব্যাগে রাখা ৬০ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট ডিএমপির রমনা মডেল থানায় একটি মামলা হয়।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও উক্ত ডাকাত দল গত ৪ সেপ্টেম্বর অপর এক ব্যবসায়ী মতিঝিল থেকে একটি ব্যাগে ২৫ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় উক্ত ডাকাত দলের সদস্যরা ৩টি মোটরসাইকেল করে তাকে অনুসরণ করতে থাকে। ওই ব্যবসায়ী বেলা দুপুর ২টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা তার গতিরোধ করে তার কাছে থাকা ২৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। তাৎক্ষনিক পথচারীরা জড়ো হয়ে প্রতিরোধ করতে চাইলে ডাকাতরা পথচারীদের লক্ষ্য করে ২ রাউন্ড গুলি ছুঁড়লে একজন পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়। এই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়। চাঞ্চল্যকর ডাকাতির এই ২টি ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা রমনা বিভাগের রমনা জোনাল টিম।
গ্রেপ্তারদের অপরাধ প্রক্রিয়া সম্পর্কে ডিবি প্রধান বলেন, তারা সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটির দিন বিশেষ করে শনিবারকে ডাকাতির জন্য বেছে নেয়। তারা প্রত্যেকেই পেশাদার ডাকাত দলের সদস্য।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার জলিলের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তাকৃতদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ডিএমপির কোতোয়ালী থানায় মামলা হয়েছে।
ঢাকা মহানগরের যে কোনো এলাকায় ডাকাতি কিংবা কোনো গুলির ঘটনা ঘটলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এমন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।
বাংলাদেশ জার্নাল/এফজেড/কেআই
