আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে যা বললেন আজহারী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮:৪৮
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ যেমন মেধাবী ছাত্র ছিল, তেমনিভাবে ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ জন আসামিও আবরারের মতোই মেধাবী ছিল। এতো মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের অভাবে, তাদের মতোই আরেকজন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করতে তাদের বুক কাঁপেনি।
বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসে আবরার ফাহাদ হত্যা নিয়ে এসব কথা লিখেন জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। স্ট্যাটাসে তিনি আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড ও তরুণ-তরুণীদের নিয়ে কথা বলেছেন।
স্ট্যাটাসটি বাংলাদেশ জার্নাল পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। যথাযথ শিক্ষা, নৈতিক মূল্যবোধ ও সঠিক পরিচর্যা পেলে মানুষ মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়। জনসংখ্যা হয় জনশক্তি। রুপান্তরিত হয় মানব সম্পদে। আর যথাযথ শিক্ষা ও পরিচর্যার অভাবে এই মানুষগুলোই হয়ে ওঠে সমাজের বোঝা, উশৃঙ্খল, দুরাচারী, হিংস্র, এবং পাশবিক প্রকৃতির।
নতুন আঙ্গিকে ইসলামের ছোঁয়া পেয়ে আজ বাংলাদেশে অনেক তরুণ-তরুণী সময়মতো সালাত আদায় করে, হারাম রিলেশনশিপ বাদ দিয়ে বৈধ বিয়ের পথ খুঁজে, উদ্যোক্তা হয়ে হালাল উপার্জনের চেষ্টা করে এবং সুন্দর সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখে। আর এই ছেলেগুলোই হেরার আলোর এ জ্যোতির্ময় ছোঁয়া না পেলে হয়তো— কিশোর গ্যাং তৈরী, চাঁদাবাজি, মাস্তানি, ইভটিজিং ইত্যাদি করে বেড়াতো। তার মানে, আদতে কোন মানুষই খারাপ নয়। দরকার যথাযথ পরিচর্যা ও দিক নির্দেশনার।
যেমন ধরুন, আবরার ফাহাদ যেমন মেধাবী ছাত্র ছিল, তেমনিভাবে ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ জন আসামিও আবরারের মতোই মেধাবী ছিল। এতো মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের অভাবে, তাদের মতোই আরেকজন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করতে তাদের বুক কাঁপেনি। তাদের বাবা-মায়েরা হয়তো কখনো বুঝতেই পারেনি যে তাদের সন্তান এরকম একজন খুনী সত্ত্বা হয়ে বেড়ে উঠছে।
তাই, জনসংখ্যাকে মানবসম্পদে রুপান্তর করতে, অভিবাবক, শিক্ষকমণ্ডলী এবং সরকার— সবাইকে নতুন করে ভাবতে হবে। দেশে প্রায় ৩ কোটি তরুণ-তরুণী। মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষায় উজ্জীবিত করতে না পারলে, যতো শিক্ষিতই হোক না কেন, তরুণ প্রজন্ম এভাবে নানা বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়বে। নষ্ট করবে তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত। বারবার পিছিয়ে পড়বে আগামীর বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমজে
