ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

সারোগেট মা

ধনী সেলিব্রিটিরা নিজের জিনসহ রেডিমেড শিশু চায়: তসলিমা নাসরিন

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:৪৯

ধনী সেলিব্রিটিরা নিজের জিনসহ রেডিমেড শিশু চায়: তসলিমা নাসরিন
তসলিমা নাসরিন

জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া গর্ভবতী না হওয়া সত্ত্বেও সন্তানের মা হয়েছেন। সম্প্রতি এ খবর সামনে আসতেই ফের আলোচনায় উঠে এসেছে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ‘সারোগেসি’ নামক সন্তান জন্মদানের অভিনব পদ্ধতিটি।

সারোগেসি এমন এক ধরনের পদ্ধতি যেখানে সন্তান জন্মদানের জন্য গর্ভ ভাড়া নেয়া হয়। এ পদ্ধতিতে একজন নারী তার নিজের গর্ভে অন্যের সন্তান বড় করে ও জন্ম দেয়। একজনের নারীর গর্ভে অন্য দম্পতির সন্তান ধারণের এ পদ্ধতিকেই সারোগেসি বলে। এক্ষেত্রে গর্ভধারণের কাজটি যে নারী করেন তাকে ‘সারোগেট মাদার’ বা ‘সারোগেট মা’ বলা হয়।

এমনই একটি সময় বিজ্ঞানের এই আবিষ্কারের প্রশংসা করেও সারোগেসি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুললেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। যদিও তিনি একজন চিকিৎসক।

এক ফেসবুক পোস্টে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘সারোগেসি বিজ্ঞানের চমৎকার একটা আবিষ্কার বটে। তবে সারোগেসি তত দিন টিকে থাকবে, যত দিন সমাজে দারিদ্র টিকে থাকবে। দারিদ্র নেই তো সারোগেসি নেই।’ এর পর তিনি লেখেন, ‘দরিদ্র মেয়েদের জরায়ু টাকার বিনিময়ে ন’মাসের জন্য ভাড়া নেয় ধনীরা। ধনী মেয়েরা কিন্তু তাদের জরায়ু কাউকে ভাড়া দেবে না। কারণ গর্ভাবস্থায় জীবনের নানা ঝুঁকি থাকে, শিশুর জন্মের সময়ও থাকে ঝুঁকি। দরিদ্র না হলে কেউ এই ঝুঁকি নেয় না।’

সেই পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘গৃহহীন স্বজনহীন কোনও শিশুকে দত্তক নেওয়ার চেয়ে সারোগেসির মাধ্যমে ধনী এবং ব্যস্ত সেলিব্রিটিরা নিজের জিনসমেত একখানা রেডিমেড শিশু চায়। মানুষের ভেতরে এই সেলফিস জিনটি, এই নার্সিসিস্টিক ইগোটি বেশ আছে। এ সবের ঊর্ধ্বে উঠতে কেউ যে পারে না তা নয়, অনেকে গর্ভবতী হতে, সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম হলেও সন্তান জন্ম না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।’

লেখিকা বর্তমান পরিস্থিতে সারোগেসিকে শোষণের প্রতীক হিসাবে তুলে ধরেছেন। তার মতে, ‘সারোগেসিকে তখন মেনে নেব যখন শুধু দরিদ্র নয়, ধনী মেয়েরাও সারোগেট মা হবে, টাকার বিনিময়ে নয়, সারোগেসিকে ভালোবেসে হবে। ঠিক যেমন বোরখাকে মেনে নেব, যখন পুরুষেরা ভালবেসে বোরখা পরবে। মেয়েদের পতিতালয়কে মেনে নেব, যখন পুরুষেরা নিজেদের পতিত-আলয় গড়ে তুলবে, মুখে মেকআপ করে রাস্তায় ত্রিভঙ্গ দাঁড়িয়ে কুড়ি- পঁচিশ টাকা পেতে নারী-খদ্দেরের জন্য অপেক্ষা করবে। তা না হলে সারোগেসি, বোরখা, পতিতাবৃত্তি রয়ে যাবে নারী এবং দরিদ্রকে এক্সপ্লয়টেশনের প্রতীক হিসেবে।’

বাংলাদেশ জার্নার/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত