ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

এসডিজি নিয়ে কাজ করাই তুহিনের লক্ষ্য

  আলফি শাহরীন

প্রকাশ : ২৩ মে ২০২২, ১৬:৫২

এসডিজি নিয়ে কাজ করাই তুহিনের লক্ষ্য

‘পড়াশনা করে যে, গাড়িঘোড়া চড়ে সে’ এমন প্রবাদ আমরা ছোটবেলা থেকেই কমবেশি শুনে এসেছি। জীবনে উন্নতি করতে হলে পড়াশুনার গুরুত্ব অপরিসীম। তবে বর্তমান এই যুগে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে ভালো সিজিপিএ অবশ্যই জরুরি। আবার শুধু সিজিপিএ থাকলেও চলবে না। অবশ্যই একজন শিক্ষার্থীকে ভালো চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে করতে হবে দক্ষতা বৃদ্ধি। থাকতে হবে পড়াশোনার পাশাপাশি কো-কারিকুলাম অ্যাকটিভিটি।

শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় নিজের স্কিল ডেভেলপ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ করে নিচ্ছে এমন একজন মেধাবী শিক্ষার্থী তুহিনের সাথে কথা হয় বাংলাদেশ জার্নালের। আসুন তার মুখেই শুনে নিই তার গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাওয়ার গল্প-

আমি আজিজুল ইসলাম তুহিন। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে (ইউল্যাব) ব্যবসায় অনুষদে ১২তম সেমিস্টারে অধ্যয়নরত। তাছাড়াও বর্তমানে ইউল্যাবের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে যুক্ত।

আমার বেড়ে ওঠা সিলেট শহরে। ২০১৮ সালে যখন ঢাকায় এসে ইউল্যাবে ভর্তি হই আমার জন্য যাত্রাটা ছিলো অনেক দুর্গম। যেহেতু নতুন জায়গা, নতুন মুখ, এসব কিছুর সাথে খাপ খাওয়াতে আমাকে কিছুটা হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু সেখান থেকে নিজেকে বের করার উপায় খুঁজে বের করছিলাম। যেহেতু আমি গান করতে পছন্দ করি, তাই সবসময় খুঁজে বেড়াতাম কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সাথে যুক্ত হতে পারি। এরপর আমি সংস্কৃতি সংসদ ক্লাবের সাথে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করি। স্টেজ পারফর্মেন্স নিয়ে সর্বদা আমার মধ্যে ভয় কাজ করতো। কিন্তু, ভার্সিটির বিভিন্ন প্রোগ্রামে স্টেজ পারফর্মেন্স করার কারণে ভয় থেকে বেরিয়ে এসে নিজেকে সবার সামনে ফুটিয়ে তুলতে পারি।

এক সময় যে ছেলে কারো সাথে কথা বলতেই অনেক ভয় পেত সেই আমি এখন পর্যন্ত ১৮০ টি স্টেজ পারফর্মেন্স করেছি। নিজেকে আরো অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী মনে হতে শুরু হলো। আমি আমার আশেপাশের মানুষগুলোর কাছ থেকে প্রতিনিয়ত শিখতে শুরু করি।

আমি সব সময় চেষ্টা করি নতুন কিছু শেখার। যা আমাকে দিন দিন সাবলম্বী হতে সাহায্য করছে। হঠাৎ গ্রাফিক্সে কাজ করার প্রতি ঝোঁক বেড়ে যায়। আমি যেহেতু এই ফিল্ডে একেবারেই নতুন। তাই কাজের সুযোগটাও কম পাচ্ছিলাম। কিন্তু করোনার প্রভাবে দীর্ঘ সময় ঘরবন্দী থাকার কারণে আমি স্কিল ডেভেলপমেন্ট করার বড় একটি সুযোগ পাই। কোর্সোরাতে চারটি কোর্স করে সময়কে কাজে লাগালাম।

সেই মুহূর্তে অনলাইনে ইউল্যাবের একটি বড় প্রোগাম যেটির নাম ছিলো ইউল্যাব হাল্ট প্রাইজ সেটি থেকে ঘোষণা করা হয় ইভেন্ট অফিসার নেয়া হচ্ছে। আমি সেখানে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে এপ্লাই করি এবং নির্বাচিত হই। এরপর আমাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আমি বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুযোগ পাই। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রোগ্রাম হলো- ঢাকা আন্তর্জাতিক মোবাইল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। বর্তমানে আমি তাদের সাথে ফেস্টিভ্যাল সুপারভাইজার হিসেবে যুক্ত আছি। পাশাপাশি ইউল্যাব ডিফেন্স মেকার, ইউল্যাব কো-কারিকুলার অফিসের সাথে কাজ করে যাচ্ছি।

আমি বিজনেস স্কুলের একজন শিক্ষার্থী হলেও আমার ভবিষ্যত প্লান বা ইচ্ছার জায়গাটা এনজিওর সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করার। করোনাকালে আমি ইউল্যাবের সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টারের বদৌলতে রিসার্চে কাজ করার সু্যোগ পাই। সেখান থেকে আমরা একটি প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগ পাই যেটি ছিলো যমুনা নদীর পাড়ে প্রায় ৩৮টি গ্রামের সাথে। এটা আমার জন্য অনেক বড় একটি সুযোগ ছিলো নিজেকে জানার এবং ভবিষ্যতের পথে একধাপ এগিয়ে যাবার। এরপর থেকেই আমার রিসার্চের প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে যায়।

আমি সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ক্লাবের সাথে কাজ করার ফলে অনেক কিছু শিখতে পারি এবং সেখানে সভাপতি হিসেবে যুক্ত থাকার কারণে আমরা বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজন করে যাচ্ছি এবং ইনশাআল্লাহ আরো অনেক ইভেন্ট নামাতে পারবো সেটাই আশা করছি। পরিবেশ বান্ধব কাজ, মানব উন্নয় লক্ষ্য নিয়ে আমরা ছোট ছোট কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করছি এই ক্লাবের মাধ্যমে। ভবিষ্যতে আমার একটাই লক্ষ্য টেকসই উন্নয়ন বা মানব উন্নয়নের লক্ষ্যসমূহ অর্জনে কাজ করে যাওয়া।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএস/কেআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত