ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

একজন সফল নারী উদ্যোক্তা তানিয়া

  আলফি শাহরীন

প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২২, ১২:৪৩

একজন সফল নারী উদ্যোক্তা তানিয়া

প্রতিটি নারীর সফলতার পিছনে থাকেন তিনি নিজেই। কারণ তার ইচ্ছা শক্তি এবং মনোবল ,তাকে নিয়ে যেতে পারে বহুদূর। নিজের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজকের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে বহুদূর। তেমনি ভাবে একজন সফল গৃহিণীর পরিচয়ের পাশাপাশি একজন সফল উদ্যোক্তার পরিচয় গড়ে তুলেছে নিজের নামের পাশে তানিয়া।

তার এগিয়ে যাওয়ার সেই সুন্দর গল্পটি বাংলাদেশ জার্নালকে নিজের মুখেই জানালেন তিনি। জেনে নেয়া যাক তার সংগ্রামের গল্প-

“আমি তানিয়া চৌধুরী আমি একজন গৃহিনী। বর্তমানে পড়াশোনা করছি মাস্টার্স, বাংলা সাহিত্য নিয়ে লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ থেকে। পড়াশোনার পাশাপাশি আমার ছোট একটি অনলাইন বিজনেস রয়েছে। যেখানে আমি সাধারণত হোমমেড ফুড ও কেক তৈরি করে সেল করে থাকি।

নারীরা আজ আত্মনির্ভরশীল। আর সেইটা প্রমাণ করার জন্যই আমার এই ছোট উদ্যোগ। শুধুমাত্র একজন সফল গৃহিণী ও মা হিসেবে নয় পাশাপাশি নিজেকে দেখতে চেয়েছি একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে।

খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যায় আমার। সেই সঙ্গে খুব তাড়াতাড়িই প্রথম বেবি কনসিভ করি। অল্প বয়সেই সংসারের সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছিলাম খুব সহজেই। কিন্তু ঘর সামলানোর পাশাপাশি নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলতে চেয়েছিলাম সবসময়। যেহেতু ঘর আর ছোট বাচ্চা সামলানোর পাশাপাশি বাহিরে গিয়ে কিছু করা আমার পক্ষে তেমন সম্ভব হচ্ছিলো না তাই চিন্তা করে ঘরে বসেই কিছু করার।

আমি নানান রকম মজাদার রান্না করতে বেশ পছন্দ করি। এছাড়া আমার মেয়ে আনিশা কেক খেতে বেশ পছন্দ করে। তাই হরেক রকমের কেকও বানাতাম ঘরের সবার জন্য। এবং আমার কেক খেতে সবাই খুব পছন্দ করতেন এবং প্রশংসাও করতেন। সে থেকেই মাথায় আসলো আমি আমার রান্নার স্কিলকে কাজে লাগিয়ে একটি অনলাইন হোমমেড ফুড সার্ভিস খুলতে পারি। এর ফলে যারা বাহিরের অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পছন্দ করেন না এবং হোমমেড স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খুঁজে থাকেন তাদের জন্যও উপকারী এবং আমার জন্য বেশ সহজ ও আনন্দময়ী একটি কাজ হবে।

স্বাবলম্বী হওয়ার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৯ সালে শুরু করি আমার একটু একটু করে পথচলা। Anishas Homemade Foods and Cake Shop নামক একটি অনলাইন পেজ খুলার মাধ্যমেই আমার বিজনেস এর প্রথম যাত্রা শুরু হয়। পেইজ খোলার পর আমার রান্নার ও কেক এর নানান রকম ছবি আমি শেয়ার করতে থাকি। কিছুদিন পরেই আমার অর্ডার চলে আসতে থাকে। এতো স্বল্প সময়ে যে এতো সারা পাবো আমি কখনো ভেবে উঠতে পারিনি। আমার প্রথম কাস্টমার ছিলেন আমারই প্রতিবেশী এক ভাবী।

আমার এই কাজে আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রানিত করেছে আমার পরিবার। তারা আমাকে উৎসাহ দেয় আমার কাজ কে এগিয়ে নেয়ার জন্য। বিজনেস শুরু করার আগে তাদের উৎসাহে আমি ছোট একটি কেক বানানোর উপর কোর্স ও করে থাকি। তারা আমার পাশে না থাকলে আমি সাহস পেতাম না এতো দূর এগিয়ে যাওয়ার।

সবাই যেহেতু আমার পাশে ছিল তাই আলহামদুলিল্লাহ বিজনেসে আমার তেমন কোন বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়নি। সব বেশ ভালো যাচ্ছিলো। কিন্তু কিছুদিন পরই আমি দ্বিতীয় বার কন্সিভ করি। এতে একটু কষ্ট হলেও আমি থেকে থাকিনি। 6 মাসের প্রেগনেনসি নিয়ে প্রচুর কাজ করেছি আলহামদুলিল্লাহ । আমার স্বামী সবসময় আমার পাশে ছিলেন । আমাকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছিলেন সেইসময়। তাই আমাকে আর পিছিয়ে পরতে হয়নি। সবচেয়ে বেশি পাশে ছিল আমার ননদ জলি। ও বাবু দের না দেখলে এতো সুন্দর ভাবে সব কিছু সামলানো অনেক কষ্ট সাধ্য ছিল।

আব্বু-আম্মুর দোয়া ও আমার কাস্টমারদের সাপোর্ট ,ভালোবাসায় এখন আমি স্বাবলম্বী। এখন আমি আমার অনলাইন বিজনেস এর পাশাপাশি নিজেই বেকিং বিষয় নিয়ে কোর্স করিয়ে থাকি। যা আবার বিজনেসের পাশাপাশি আরও একটি নতুন উদ্যোগ। আলহামদুলিল্লাহ্‌ এখন আমি একজন সফল উদ্যোক্তা। এখন আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা একটাই আমার এই হোমমেড ফুড বিজনেজ-এর সঙ্গে আমার এই নতুন উদ্যোগটিকে অনেক দূর নিয়ে যাওয়া। শেখার কোন শেষ নেই, তাই শিখতে চাই আরও অনেক কিছু ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএস/কেএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত