ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

সরকারি সংসারে অযোগ্য স্বামী

  রাজীব কুমার দাশ

প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২২, ১৭:৩৩

সরকারি সংসারে অযোগ্য স্বামী

মানসিক নিষ্ঠুরতা শারীরিক পীড়ন হতেও ভয়ঙ্কর! এ দুর্বাসা মনোমিসাইলে নিষ্ঠুর আণবিক শব্দ বাক্য জ্বালানি ভরে ঘণ্টায় হাজার কিলোমিটার বেগে যে কোনো সিসা কংক্রিট মনের গহীন ভাবনার ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার নিমিষে গুঁড়িয়ে দেয়া সম্ভব।

এ দুর্বাসা-দুর্বাক্য মনোমিসাইল একজন সুস্থ মানুষকে তিলে-তিলে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। এ তল্লাটের একজন অক্ষম স্বামী একদিনও স্ত্রীর অর্গাজম ঘটাতে না পেরে নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে যেমন- নিয়ম করে প্রতিদিন তার স্ত্রীকে এক দুই তিন কথা বলে মানসিকভাবে মেরে ফেলেন; একজন শিক্ষক যেমন তার ছাত্রকে অন্য ছাত্রের সামনে ‘তোমাকে দিয়ে কিছু হবেনা,তুমি বরং তোমার বাবা,মাকে সাহায্য করো’ বলে প্রতিদিন অপমান করে নিজের ব্যর্থতাবোধের নির্লজ্জ পরিসংখ্যান

দায় ছাত্রের ঘাড়ে চাপিয়ে দায়মুক্তি নেন; ঠিক সে প্রকারে এ বদ্বীপের সরকারি সংসারে নিয়ম করে উর্ধ্বতন

শিক্ষিত ভয়ঙ্কর গণ্ডমূর্খ দল স্ত্রীর অর্গাজম ঘটাতে না পারার ব্যর্থ স্বামীর দায়, নির্বোধ চরম অযোগ্য শিক্ষকের ব্যর্থতার দায়মুক্তির দায় সরকারি অধস্তন কর্মচারীরা বৃটিশ পাকিস্তান পেরিয়ে এখনও মাথায় নিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছে। উর্ধ্বতন নির্বোধ সময়ের দায় ও পরিস্থিতির সিংহভাগ বলির পাঁঠা হতে হচ্ছে প্রতিদিন।

‘দুর্বাসা’ উর্ধ্বতন নামের এ মুনিবরের সামনে গেলে বিপদ! পেছনে তাকালে আরও মহাবিপদ। ঘোড়া আদর করে আপনি যে মাত্র পেছনে ফিরবেন; আপনার ঘাড়ে ভয়ঙ্কর নিঃশ্বাস অনুভব করবেন। চুপিচুপি পিছনে তাকাবেন জোড় পায়ের লাথি খাবেন।

উর্ধ্বতন যোগ্য স্বামী, যোগ্য শিক্ষক যেমন পরিবার সমাজে সমাদৃত। সরকারি সংসারেও তারা যুগ-যুগ ধরে কিংবদন্তি ভাবনায় পূজনীয় থাকেন।

এ তল্লাটের ঘরে বাইরে সরকারের সংসারে যাঁরা পেশাদার যোগ্য-তাঁরাই দিনরাত খাটুনি করেন, এদিক সেদিক তাকান কম। যারা চরম অযোগ্য অপদার্থ নির্বোধ, যাদের সবসময় দুর্বাসা মন, যারা নির্বোধের আপন, তাদের সামনে যাবেন- দেখবেন এ অযোগ্য ভয়ঙ্কর নির্বোধ আপনার বোধের ঋদ্ধ আচরণ ব্যক্তিত্ব মানতে না পেরে, অর্গাজম ঘটাতে ব্যর্থ স্বামীর মতো কখনো বলছে, ‘তোমার নাস্তা আনতে এতোক্ষণ লাগছে কেন? তোমার চুলগুলো খোলা কেন? আমার আব্বিজান-আম্মিজানকে দাঁতের ব্রাশ এগিয়ে দাওনি কেন? তোমার যোনি কেশের এ কী বিচ্ছিরি অবস্হা!

‘না, আমি আর তোমাকে নিয়ে সংসার করতে পারছি না। তোমার বাবা মা ডেকে বিদায় করে দেবো ভাবছি।’

এ হচ্ছে -সরকারি সংসারের সাতকাহন।

স্ত্রীর অর্গাজম ঘটাতে চরম ব্যর্থ স্বামীগুলোর ম্যাক্সিমাম আচরণ পরখ করলে দেখা যায়, এদের শরীরেরও রয়েছে বিদঘুটে বডি ল্যাংগুয়েজ। ওরা হাসতে চেয়ে হাসে না,কাঁদতে চেয়ে কাঁদে না। ওদের শরীরটা কেন জানি থরহরি কম্প! চোখের ভাষায়: একপাল পাগল মহিষ দাপাদাপি করছে। একথালা খেয়েও বউকে বলছে -কী এমন খাইয়েছ আমাকে? খাবারের বাসনে পেয়েছি, তোমার বেঁটে বেঁটে কোঁকড়া চুলের একগাছি কাছি।

শরীরবৃত্তীয় মতবাদের প্রবক্তা সিজার লোমব্রোসো জন্ম অপরাধীদের অনেক দৈহিক বৈশিষ্ট্যের উদাহরণ উল্লেখ করেছেন। যা সরকারি সংসারেও দেখেছি-

১.ক্ষুদ্র মাথার খুলি ও কপাল

২.ভাঁজপড়া মস্তক

৩.লতিবিহীন বা অতিলম্বা লতিযুক্ত কান

৪.চিবুক বিহীন অথবা অতি লম্বা চিবুক

৫.ভারি ও প্রশস্ত কাঁধ

৬.লোম বিহীন বা অতি লোমযুক্ত দেহ

৭.টেরা চোখ

৮.অতি বৃহৎ চোয়াল

৯.বেদনার প্রতি সহিষ্ণুতা বা বেদনার প্রতি অতি সংবেদনশীলতা।

লোমব্রোসো ছিলেন,ইতালি সেনাবাহিনীর চিকিৎসক। তিনি আরো উল্লেখ করেন, এ মতবাদ অনুসারে জন্ম নেয়া মানুষ, পাশবিক গুণাবলী লালন করে এবং পশু সুলভ হিংস্র প্রকৃতির,নৈতিকভাবে নিচু স্তরের মানুষ।

সিজার লোমব্রোসো ও ড. চার্লস গোরিং বেঁচে থাকলে আর কী হতো জানি না। তবে একটু হতো -নিশ্চিত বলতে পারি- সরকারি সংসারে স্ত্রীর অর্গাজম ঘটাতে ব্যর্থ চরম অযোগ্য ধড়িবাজ ভণ্ড পণ্ডিত, মনো মিসাইলের আবিস্কারক দুর্বাসা ঋষিদের দীর্ঘ অমোচনীয় কালির একটি তালিকা হতো।

উর্ধ্বতন সরকারি সংসারে স্বামী হবেন ঋদ্ধ বহুমুখী যোগ্যতাসম্পন্ন ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। যে হাত পা নেড়ে চেড়ে স্ত্রী,পরিবার পরিজনদের বাঁচিয়ে রাখবেন।

মনোমিসাইল জনক অমার্জিত ধড়িবাজ চরম অযোগ্য পেটুক- সারাদিন শুধু খাই খাই স্বভাবের চোর অযোগ্য দুর্বাসা স্বামীদের অধস্তন স্ত্রীরা আর কতোটা সময় বসিয়ে বসিয়ে অজগরের মতো পুষবেন! তা হয়তো বা একদিন সময়ই বলে দিতে পারবে।

লেখক: প্রাবন্ধিক ও কবি,পুলিশ পরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশ। মেইল:rajibkumarvandari800@

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত