ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

উত্তরায় বুথে ঢুকে ব্যবসায়ীকে হত্যা

প্রতিবন্ধী সন্তানের চিকিৎসার টাকা জোগাড়েই ছিনতাই চেষ্টা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২২, ১৯:৫৯

প্রতিবন্ধী সন্তানের চিকিৎসার টাকা জোগাড়েই ছিনতাই চেষ্টা

প্রতিবন্ধী সন্তানের চিকিৎসার জন্য টাকা জোগাড়ের জন্যই রাজধানীর উত্তরায় এটিএম বুথের ভেতর ঢুকে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালান আব্দুস সামাদ। এর আগে তিনি এমন কাজ কোনোদিন করেননি।

উত্তরায় এটিএম বুথে ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী শরীফ উল্লাহ নিহত হওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার ছিনতাইকারী আব্দুস সামাদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা জানিয়েছেন।

সেই রাতে বুথের ভেতর প্রবেশ করতেই টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তি বের হচ্ছিলেন। তাকে ঠেলে ভেতরে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকেন আব্দুস সামাদ। ওই ব্যক্তির চিৎকার শুনে বুথের সিকিউরিটি গার্ড এগিয়ে যান। উপর্যুপরি কয়েকবার আঘাত করায় তার শরীরের জামা কাপড় রক্তাক্ত হয়ে যায়।

এদিকে টাকা ছিনতাই করতে না পেরে ছুরি হাতে নিয়ে আত্মরক্ষার্থে পালানোর চেষ্টা করেন আব্দুস সামাদ। এরপর সিকিউরিটি গার্ডসহ কয়েকজন ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলেন।

শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মোহসিন আলী বলেন, আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে অতীতে তেমন কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্য পুলিশ পায়নি। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি তার প্রতিবন্ধী সন্তানের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতেই ছিনতাই চেষ্টার কথা বলেন বলেছেন। তার বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার বিশকাকলী গ্রামে। তিনি গাজীপুরের পূবাইল এলাকার বসুগাঁও ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় থাকতেন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের সোনারগাঁও জনপথ রোডের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথে ঢুকে আব্দুস সামাদ টাকা উত্তোলনকারী ব্যবসায়ী শরীফ উল্লাহকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। তবে তার কাছ থেকে টাকা ছিনতাই করতে পারেননি। বুথ থেকে উত্তোলন করা ৮ হাজার টাকার মধ্যে ১হাজার টাকার ১টি নোট নিহত ব্যক্তির হাতে ছিল। বাকি ৭টি ১হাজার টাকার নোট বুথের মেঝেতে পড়েছিল। এ ঘটনায় পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা আব্দুস সামাদ নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দেয়।

উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ইয়াসিন গাজী বলেন, গ্রেপ্তার আব্দুস সামাদ জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন, ১২ বছর বয়সী তার একমাত্র ছেলে প্রতিবন্ধী। তার চিকিৎসা প্রয়োজন। এর আগে তিনি টঙ্গী এলাকায় ছোটখাট ঠিকাদারি কাজ করতেন। তারও আগে তিনি লিফট মেরামতের কাজ করতেন। করোনা পরবর্তী সময় ধরে বেকার। মানুষের কাছে ধার কর্য করে সংসার চালান। প্রতিবন্ধী সন্তানের চিকিৎসার টাকাও প্রয়োজন। এ কারণে তিনি একটি ছুরি জোগাড় করে বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরার বিভিন্ন বুথের সামনে রিকশায় ঘুরতে থাকেন। ৫/৬টি বুথ ঘুরে কাউকে টাকা তুলতে দেখতে পাননি। সোনারগাঁও জনপদ রোডে ডাচ-বাংলা বুথের সামনে দেখতে পান একজন ব্যক্তি এটিএম বুথে প্রবেশ করছে। তিনি রিকশা থেকে নেমে বুথে ঢুকতে যান। এসময় সিকিউরিটি গার্ড বলেন, ভেতরে লোক আছে। সিকিউরিটি গার্ডের কথা না শুনে তিনি জোর করে দরজা ঠেলে ভেতর ঢুকতে যান। এ সময় ওই ব্যক্তি টাকা তুলে বুথ থেকে বের হয়ে আসছিলেন। আব্দুস সামাদ তাকে ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েই ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি বলেন, আব্দুস সামাদ টাকা ছিনতাই করতে গিয়ে ব্যবসায়ীকে হত্যা করেছেন, এটা তিনি স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলায় শিগগিরই চার্জশিট দেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত