ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

আপত্তিকর ভিডিও দিয়ে প্রতারণা করতো চক্রটি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:০৭  
আপডেট :
 ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:০৯

আপত্তিকর ভিডিও দিয়ে প্রতারণা করতো চক্রটি
প্রতীকী ছবি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমো ও ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে প্রথমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে। এক পর্যায়ে একান্ত সময়ের ভিডিও আর আপত্তিকর ছবি ধারণ করে রাখে। ভিডিও কলে আপত্তিকর কন্টেন্ট কৌশলে ধারণ করে অনলাইনে ফাঁস করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করে টাকা হাতিয়ে নেয়।

এমন একটি প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার রাজধানীর কাফরুল এলাকা থেকে তমালিকা আক্তার (২৪) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া চক্রের অপর সদস্য আবু সাঈদ রনিকে (২৮) সিআইডি চট্টগ্রামের সহায়তায় খুলসি থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফির কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। সেগুলোতে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পাওয়ার কথা জানিয়েছে সিআইডি।

সিআইডি জানিয়েছে, অনুসন্ধানে তারা জানতে পেরেছে, প্রতারক চক্র প্রথমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে ইমোতে যোগাযোগ করে ঘনিষ্ঠ হয়। সম্পর্কের এক পর্যায়ে তাদের একান্ত সময়ের ভিডিও আর আপত্তিকর ছবি ধারণ করে রাখে। পরে তা অনলাইনে ফাঁস করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। এজন্য তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকগুলো আইডি ব্যবহার করে। টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর তারা আইডিগুলো পুরোপুরি নষ্ট করে দেয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন চিকিৎসক সাইবার পুলিশ সেন্টারের ফেসবুক পেজে অভিযোগ করেন। সেখানে তিনি জানান, অজ্ঞাতনাম ব্যক্তি তার এবং তার সাবেক স্ত্রী মারিয়া ইসলাম নিকিতার একান্ত মুহূর্তের ভিডিও তার টেলিগ্রাম এবং তার বর্তমান স্ত্রীর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠায়। আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছে টাকা দাবি করা হচ্ছে।

সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) অভিযোগ পাওয়ার পর অনুসন্ধান শুরু করে। সত্যতা পাওয়ায় ঘটনায় জেড়িতদের শনাক্ত করা হয়। এরপর অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিআইডি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার তমালিকা ও অভিযোগকারীর সাবেক স্ত্রী মারিয়া ইসলাম নিকিতা পরস্পর বন্ধু। তারা দুজনেই বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে টাকার বিনিময়ে ইমো এবং ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কলের মাধ্যমে আপত্তিকর মুহূর্ত গোপনে ধারণ করে রাখে। অভিযোগকারীর সাথে মারিয়া ইসলাম নিকিতা ভিডিও কলে আপত্তিকর মুহূর্ত গোপনে ধারণ করে এবং সেই রেকর্ড করা ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অভিযোগকারীকে বিয়ে করতে বাধ্য করে।

পরে তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে গেলে মারিয়া ইসলাম নিকিতা তার বন্ধু গ্রেপ্তার তমালিকাকে সংরক্ষণ করা ভিডিওটি সরবরাহ করে। তমালিকা আবার এই ভিডিও চট্টগ্রামে অবস্থানকারী তার প্রেমিক আবু সাঈদ রনিকে সরবরাহ করে। আবু সাঈদ রনি ভিডিওটি অভিযোগকারী এবং তার বর্তমান স্ত্রীকে টেলিগ্রাম ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে তাদের কাছে টাকা দাবি করে ব্ল্যাকমেইল করে।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা আরও জানিয়েছে, তারা ঢাকা এবং চট্টগ্রামে অবস্থান করে সিআইডির কাছে অভিযোগকারী ব্যক্তি ছাড়াও আরও অনেকের সাথে একইভাবে ইমো এবং ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কলে আপত্তিকর দৃশ্য রেকর্ড করে রেখে তাদের ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত