অমর একুশে বইমেলা- ২৩
জীবন ঘনিষ্ঠ উপন্যাস 'অন্ধকারে একা' প্রকাশিত
জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ২৩:৩৫
অমর একুশে বইমেলা- ২০২৩কে সামনে রেখে প্রকাশিত হয়েছে কথা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম মুকুলের জীবন ঘনিষ্ঠ উপন্যাস ‘অন্ধকারে একা’। উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে খ্যাতিমান প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অনন্যা। উপন্যাসটি একুশে গ্রন্থ মেলায় পাওয়া গেলেও তার আগে বিভিন্ন অনলাইন বই বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকেও সংগ্রহ করা যাবে। উপন্যাসটির প্রচ্ছদ করেছেন খ্যাতিমান প্রচ্ছদশিল্পী ধ্রুব এষ।
জন্মের পর থেকে জীবনের লক্ষ্য, মানে, উদ্দেশ্য খুঁজতেই পেরিয়ে যায় সময়। মানুষ তার নিজেকে আবিস্কারের আগেই হারিয়ে যায় সময়ের অতল গহ্বরে। আর পলকে হারিয়ে যাওয়া সময় টুকুতে প্রেম, দ্রোহ, কাম, লোভ-জিঘাংসা সবকিছুকে ঘিরে ছন্দোবধ্য জীবনের গতিময় স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয় মানুষ। এক সময় সেই স্রোতে হারিয়ে যাবার বেলায় পেছন ফিরে তাকাতেই বৃত্ত বন্দি হিসেবে নিজেকে আবিস্কার করে মানুষ। জীবনের চির সত্য আবিস্কারের সেই মুহুর্তে মানুষ বুঝতে পারে সে আসলে ভীষণ একা। তার সেই একাকীত্বের অনুভূতিগুলোর আগের ধুন্ধুমার জীবন-সব কিছুই উঠে এসেছে উপন্যাসটিতে।
মানুষের মনস্তাত্বিকদ্বন্দ এবং নিজের সঙ্গে নিজের বোঝাপড়া করার সূত্রগুলো দারুণ এবং সাবলীল গল্পের ধারাবাহিকতায় উঠে এসেছে উপন্যাসটিতে। সেই সঙ্গে শহুরে আটপৌরে জীবনের সঙ্গে গ্রামের সোঁদামাটিতে মিশে থাকা মানুষগুলোর তুলনা মূলক জীবনালেখ্য উপন্যাসটিকে সমৃদ্ধ করেছে। চল্লিশোর্ধ দুই বন্ধু হারুণ ও মতিকে ঘিরে উপন্যাসের গল্প এগিয়ে গেলেও গল্পের পরতে পরতে উঠে এসেছে হারুণ ও মতির পরিবার, প্রেম, ভালোবাসা-কাম, লোভ, ক্ষমতাশালীদের প্রভাববিস্তার, কুসংস্কার থেকে শুরু করে অনেককিছু। শেষে একটি খুনকে ঘিরে তৈরি হয় রহস্য। আর সেই রহস্য পাঠককে টেনে নিয়ে যায় উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠায়। যেখানে পাঠকও সূত্র মেলাতে পারেন তারজীবন ও খুনের।
অনন্যা প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী মনিরুল হক বলেছেন, জীবন ঘনিষ্ঠ উপন্যাস এবং সায়েন্সফ্যান্টাসি লেখক হিসেবে তরুণদের মধ্যে রকিবুল ইসলা মমুকুল নিজের একটি স্বতন্ত্রঅবস্থান তৈরি করেছেন। তার নিজস্ব লেখার ধরন ছোট ছোট বাক্য এবং সরল কিন্তু সুতোয় গাঁথা গদ্য পাঠককে টেনে নিয়ে যায়। উপন্যাসটি অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্যাভিলিয়নে পাওয়া যাবে। তারআগেও চাইলে পাঠকরা বিভিন্ন অনলাইনবুক-শপ থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।
উপন্যাস থেকে খানিকটনা- মতির বাড়িতে আসলেই লিচু গাছটার শান বাঁধানো গোড়ায় বালিশ পেতে হেলান দিয়ে আধশোয়া হয়ে ঝিম মেরে কাটিয়ে দেই ঘন্টার পর ঘন্টা।এলোমেলো হুহু বাতাস ধানের ডগা ছুঁয়ে, ঢোলকলমির কচি ডগা নাচিয়ে ছুটে আসেশাল মারার ওপার থেকে। শান্ত-শীতল সেই বাতাসে অন্য রকম একটা অনুভূতি হয়। মাঝে মধ্যে নদীর ওপার থেকে সন্ধ্যের পর ভেসে আসে মোহন বাঁশির সুর। সেই সুরে বুকের ভেতরটা হাহাকার করে ওঠে। মতি দিনের বেলায় ব্যস্ত থাকে বলে ওকে ঘাটাইনা। বিকেলের পর থেকে ও আমার সাথে আঠার মতো মিশেথাকে।
লিচু তলায় নয়তো টানা বারান্দায় আধো অন্ধকারে চেয়ার পেতে বসে থাকি। আকাশে মেঘেরা ওড়াউড়ি করে। কখনো ঝকমকে আকাশে তারাদের মিছিলে নিজেদের অস্তিত্ব অনুভব করার চেষ্টা করি। কখনো জোছনার প্লাবনে ভেসে যায় পুরো উঠান। ঝিঁ ঝিঁ পোকাদের ছন্দময় গীতনৃত্য আর জোনাকির ওড়াউড়িতে ভুলে যাই একবিংশ শতকের মানুষ আমরাদু’জন। বিদ্যুতের আলো নিভিয়ে বসে থাকি ঘন্টার পর ঘন্টা।
বাংলাদেশ জার্নাল/জিকে