ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

১৫ বছরে হাজারটি মোটরসাইকেল চুরি করেছেন তিনি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:০০

১৫ বছরে হাজারটি মোটরসাইকেল চুরি করেছেন তিনি
মোটরসাইকেল চুরি। ছবি: প্রতিনিধি

৭-৮ জন সহযোগী নিয়ে একটি চক্র গড়ে তুলেন মো. খালেক হাওলাদার ওরফে সাগর আহম্মেদ। তার নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা প্রথমে কোনো একটি বাসায় মোটরসাইকেল থাকলে সেটি টার্গেট করেন। পরে সুযোগ মতো বাড়ির গ্যারেজের তালা ভেঙে মোটরসাইকেলের লক খুলে নিয়ে যান। এরপর চুরি করা মোটরসাইকেল দলনেতা খালেককে বুঝিয়ে দেন দলের সদস্যরা।

এই চোর চক্রটির দলনেতা খালেককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (উত্তরা) বিভাগ। এ সময় তার কাছ থেকে ১২টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

ডিবি বলছে, গত মাসে তুরাগ এলাকা থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। ওই ঘটনার তুরাগ থানায় মামলা হলে তা তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা বিভাগ। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জানা যায় মোটরসাইকেল চোর চক্রে প্রধান নারায়ণগঞ্জ জেলায় অবস্থান করছেন। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে খালেককে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেপ্তার খালেক একসময় চাঁদপুরে মোটরসাইকেলের মেকানিকের কাজ করতেন। ওই কাজ করা অবস্থায় চোরচক্রের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং এক পর্যায়ে মোটরসাইকেল চুরি চক্রে জড়িয়ে পড়েন।

তিনি বলেন, মোটরসাইকেল চুরি রোধ করাই যাচ্ছে না। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে। বাসার গ্যারেজ, রাস্তা কিংবা অফিস থেকেও তালা ভেঙে অনেকের মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে।

গ্রেপ্তার খালেকের ৭-৮ জন সহযোগী রয়েছেন। যারা এরই মধ্যে মোটরসাইকেল চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে রয়েছেন। জেল থেকে বেরিয়ে তারা একইভাবে চুরির কাজ করেন। এ চোরচক্রের সদস্যরা প্রথমে কোনো একটি বাসায় মোটরসাইকেল থাকলে সেটি টার্গেট করেন। বাসার গ্যারেজের তালা ভাঙার পর মোটরসাইকেলের তালা খুলে নিয়ে যান।

ডিবি প্রধান আরও বলেন, ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল চুরির পর ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও হাওর অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কম দামে বিক্রি হয়। এসব চোরাই মোটরসাইকেল কাগজপত্র না থাকলেও কিনে নিচ্ছেন অনেকে। আমরা বারবারই বলে যাচ্ছি, কাগজপত্র নেই এমন মোটরসাইকেল কেনা অবৈধ। চোরাই মোটরসাইকেল যার কাছে পাবো তাকেই চোর হিসেবে সাব্যস্ত করবো। কারণ চোরাই মাল কেনাও একটা অপরাধ। কেউ যদি কাগজপত্রবিহীন চোরাই মোটরসাইকেল কেনেন তাদের সবার বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

তিনি বলেন, যে দোকানে নকল চাবি বানানো হয় তারাও চোর চক্রের সঙ্গে জড়িত। কারণ কেউ একজন ডুপ্লিকেট চাবি বানাতে এলে ওই দোকানি একই চাবি বানিয়ে তার কাছেও একটি রেখে দেন। তারা এই কাজটি নিয়মিত করছেন। যারা নকল চাবি বানান তাদের বিরুদ্ধে ডিবির অভিযান চলছে।

অনেক মানুষ ব্যাংক থেকে লোন করে অথবা ধারদেনা করে মোটরসাইকেল কেনেন জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, কষ্টের টাকায় কেনা মোটরসাইকেলটি যার চুরি হয় তিনিই বোঝেন। তাই আমি অনুরোধ করবো, গাড়ি কিংবা মোটরসাইকেল চুরি হলেই তাৎক্ষণিক নিকটস্থ থানায় জিডি করার জন্য। এরপর জিডির কপিটি নিয়ে আমাদের ডিবির টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মোটরসাইকেল উদ্ধারে চেষ্টা করতে পারবো।

গ্রেপ্তার খালেকের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, খালেক গত ১৫ বছরে প্রায় এক হাজার মোটরসাইকেল ঢাকা থেকে চুরি করেছেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার পূর্ব বাজারের একটি গ্যারেজ থেকে ১২টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে একই চক্রের কাছ থেকে গত মাসে আমরা আরও ৪০টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছি।

বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন/রাজু

  • সর্বশেষ
  • পঠিত