ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইউনাইটেড হাসপাতালে বিদেশি পাইলটের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৩, ১৫:৫৬

ইউনাইটেড হাসপাতালে বিদেশি পাইলটের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানের ইউনাইডেট হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় বিদেশি পাইলট ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ ইউসুফ আল হিন্দির মৃত্যুর অভিযোগে মামলা করেছেন তার বোন তালা এলহেনডি জোসেফানো। মামলায় ইউনাইটেড হাসপাতালের প্রফেসর ড মো. ওমর ফারুকসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়। দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় অবহেলায় মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আরফাতুল রাকিবের আদালতে এই মামলা দায়ের হয়। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ ইউসুফ আল হিন্দি বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা গালফ এয়ারে কর্মরত ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও জর্ডানের দ্বৈত নাগরিক ছিলেন। গত ২২ ডিসেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির পর তার মৃত্যু হয়।

মামলার এজাহারে তালা এলহেনডি লিখেছেন, করোনা মহামারির সময় রোগীদের দগ্ধ হওয়ার ঘটনায় এই হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলের দাবি উঠেছিল। এটি পরিষ্কার যে, তারা চিকিৎসাসেবার মতো মহান দায়িত্ব পালনের অযোগ্য। উক্ত হাসপাতালটিতে আমার ভাইয়ের প্রাণহানির ঘটনাই শেষ না। চিকিৎসা অবহেলায় তাদের অতীত ইতিহাস আছে। কাজেই লাইসেন্স বাতিলসহ ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে প্রচলিত যথাযথ ফৌজদারি কার্যবিধি ও দণ্ডবিধি আইনে আমার ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাচ্ছি।

তিনি আরও লিখেছেন, আমি গত ২২ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে নিয়মিত ইউনাইটেড হাসপাতালে যাতায়াত করে উক্ত হাসপাতালের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ঘটনার দিনের সিসি টিভি ফুটেজ ও চিকিৎসার যাবতীয় তথ্যাদি চাইলে তারা দিনের পর দিন কালক্ষেপণ করতে থাকে এবং পরবর্তীতে কোনো প্রকার তথ্য প্রদান করতে অস্বীকৃতি জানায়। যার প্রেক্ষিতে আমি নিজে তদন্ত করে এই মামলার প্রাথমিক তথ্য উদঘাটন করি।

তালা এলহেনডি গত ৩০ জানুয়ারি এ বিষয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। পরদিন ১ ফেব্রুয়ারি গুলশান থানায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা করতে গিয়ে তিনি ব্যর্থ হন। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরমান আলী ও গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার নিউটন দাস ঘটনা গুরুতর উল্লেখ করে তাকে কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দেন। কোর্ট থেকে থানায় এফআইআর করতে বললে তারা সহযোগিতা করবেন বলে জানান। অবশেষে মঙ্গলবার আদালতে মামলা দায়ের করেন তালা এলহেনডি।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে তালা এলহেনডি বলেছিলেন, গত ২২ ডিসেম্বর সকালে গালফ এয়ারের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করার কথা ছিল ইউসুফের। আগের দিন দিবাগত রাত পৌনে তিনটায় ঘুম থেকে উঠে ফ্লাইটের জন্য প্রস্তুত হন তিনি। এরপর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভোর ৪টা ১০ মিনিটের দিকে ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া শুরু করেন। তখন তিনি নিচে পড়ে নিথর হয়ে যান।

বিমানবন্দরে মোহান্নাদ ইউসুফের প্রথম কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় উল্লেখ করে তালা এলহেনডি বলেন, এরপর ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে তিনি মারা যান।

তালা এলহেনডির অভিযোগ, তার ভাইকে হাসপাতালে ভর্তির পর সকাল নয়টার আগ পর্যন্ত সেখানে কোনো কার্ডিওলজিস্ট সশরীর উপস্থিত ছিলেন না। কার্ডিওলজিস্টের উপস্থিতি ছাড়াই চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল। সকাল নয়টার পরও কোনো কার্ডিওলজিস্ট এসে চিকিৎসা দিয়েছিলেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএ/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত