ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রস্তাবিত বাজেট সাংস্কৃতিক জাগরণের অনুকূল নয়: উদীচী

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৩, ২১:৩৪

প্রস্তাবিত বাজেট সাংস্কৃতিক জাগরণের অনুকূল নয়: উদীচী
ফাইল ছবি

২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট সাংস্কৃতিক জাগরণের অনুকূল নয় বলে মনে করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী।

এক বিবৃতিতে উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে জানান, গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারের বাজেটও আরও একবার দেশের সংস্কৃতি কর্মীদের হতাশ করেছে।

বিবৃতিতে তারা বলেন, একটা সমাজ টিকে থাকে সংস্কৃতির ক্রমবর্ধমান বিকাশ ও উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে। দীর্ঘদিন ধরে দেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে, নানাভাবেতারা এদেশে মৌলবাদী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। এসব অপতৎপরতা রোধ এবং সামাজিক সংকট মোকাবেলায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সংস্কৃতি চর্চা। দেশকে অসাম্প্রদায়িক, মৌলবাদমুক্ত, মানবচেতনা সম্পন্ন ধারায় পরিচালনা করা এবং প্রজন্মেও মানবিক গুণাবলির উৎকর্ষ সাধনেও সংস্কৃতির অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য। কিন্তু সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রটি বরাবরই উপেক্ষিত থাকছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটাতে গেলে যে ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দরকার তার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। প্রতিবছরই বাজেটে সংস্কৃতি খাত অবহেলিত থেকে যাচ্ছে। এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে সংস্কৃতি খাতে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা শিল্পকলা একাডেমিতে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা পরিশোধ আর শিল্পকলা একাডেমি কেন্দ্রিক শহুরে মানুষের চিত্তবিনোদনের কাজেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু দেশের যে বিশাল জনগোষ্ঠী গ্রামে বসবাস করে, তাদেও সংস্কৃতির বিকাশে কর্মরত যেসব ব্যক্তি উদ্যোগ বা প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ রয়েছে সেখানে এই বাজেট বরাদ্দের কণামাত্রও পৌঁছাবে না।

বিবৃতিতে উদীচীর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, এতো কম অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে যে সাধারণ মানুষের সংস্কৃতি চর্চার বা উপভোগের স্থান হিসেবে উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরিতে কোনো বাজেট থাকবে না। এমনকি বর্তমানে যেসব উন্মুক্ত ক্ষেত্রসমূহ রয়েছে সেগুলোও অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, অথবা দখল করে নিচ্ছে অন্যান্য দপ্তর, ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। কোথাও কোথাও আবার স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মুক্তমঞ্চ বা মিলনায়তনগুলোকে নিজের আওতায় নিয়ে সেখানে আরোপ করছে অতিরিক্ত ভাড়া। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এ ভূখণ্ডের সংস্কৃতি বিনির্মাণে গ্রামাঞ্চলের মানুষ তথা প্রান্তিক খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে আমাদের লোক ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি নির্মাণে গস্খামীণ জনপদের মানুষের ভূমিকাই অগ্রগণ্য। শুধু তাই নয়, সংস্কৃতি এবং সংস্কৃতি কর্মীরাই রাষ্ট্রের বহুমাত্রিক সংকটে গণমানুষের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি করেন। প্রেরণা জোগান ঘুরে দাঁড়াতে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কৃতিকর্মীরা সংস্কৃতিখাতে জাতীয় বাজেটের ন্যুনতম এক শতাংশ বরাদ্দ দেয়ার যৌক্তিক দাবি করে আসছে। তাদের সেই দাবি বারংবার উপেক্ষা করা হচ্ছে। উদীচী এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং অবিলম্বে সংস্কৃতি কর্মীদের দাবির আলোকে সংস্কৃতি খাতে জাতীয় বাজেটের ন্যূনতম এক শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানাচ্ছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেন উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।

বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন/এমএস

  • সর্বশেষ
  • পঠিত