জাতীয় বেতন কাঠামোয় ধাপে ধাপে এতো বৈষম্য কেন?
আহমেদ নূর
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:৫২
২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকার অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলের গেজেট প্রকাশ করে। প্রাথমিক অবস্থায় যখন দেখেছি সরকার চাকরিজীবীদের বেতন আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ করে দিয়েছে, তখন বেতন স্কেলের অন্য দিকগুলো নিয়ে তেমন ভাববার প্রয়োজন মনে হয়নি। যেমন: আগে আট বছর পর যে টাইম স্কেল দেওয়া হতো, তা বাদ দিয়ে নতুন স্কেলে ১০ বছরে একটা গ্রেড বৃদ্ধির নিয়ম করা হয়। অষ্টম বেতন স্কেলের গেজেট প্রকাশের পর আরো অনেকগুলো অসঙ্গতি ও বৈষম্য নিয়ে রাজপথে আন্দোলন হতে এবং পত্রপত্রিকায় লেখালেখি করতে দেখা যায়। কিন্তু তেমন কোনো লাভ হয়নি। আমি নিজে ঐ সময় এ বিষয়ে কিছু লেখার চিন্তাভাবনা করিনি। কিন্তু বিগত কয়েক মাস ধরে বেতন স্কেলের একটা বিষয় আমাকে বেশ ভাবাচ্ছে। এ বিষয়ে নিজের ভাবনাগুলো গোছানোর চেষ্টা করি। শেষে বেতন স্কেলটা সামনে নিয়ে এ বিষয়ে কিছু লেখা খুব জরুরি মনে হয়।
যে বিষয়টা কিছুদিন ধরে আমাকে ভাবাচ্ছে, তা হলো, বেতন স্কেলে মোট ২০ টি ধাপ। আমি আছি ১৪ নং ধাপে। এ বছর আমার একটা ধাপ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু যখন দেখি ১০ বছর অপেক্ষা করার পর একটা ধাপ বৃদ্ধি পাবার পরও বেতন তেমন বাড়বে না, তখন সঙ্গত কারণেই অন্য ধাপগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়। দেখি অন্য অনেক ধাপে ধাপ বৃদ্ধি পেলে বেতন অনেক বেড়ে যায়। বিশেষ করে উপরের দিকের ধাপগুলোতে। কিন্তু নিচের দিকের ধাপগুলোতে ধাপ পরিবর্তন হলে বেতন বৃদ্ধি পাওয়াটা তেমন বুঝাই যায় না। উপরের দিকের ধাপগুলোতে ধাপগুলো ঘোড়ার মতো লাফ দেয় আর নিচের দিকের ধাপগুলোতে ধাপগুলো কচ্ছপের মতো হাঁটে। বিষয়টা আরো পরিষ্কার হবার জন্য আমরা সরাসরি বেতন কাঠামোর দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিই।
২০ তম গ্রেডের বেতন ৮২৫০ থেকে ২৫০ টাকা বেড়ে ১৯ তম গ্রেডে বেতন হয় ৮৫০০ টাকা, ১৯ তম গ্রেড থেকে ৩০০ টাকা বেড়ে ১৮ তম গ্রেডে বেতন হয় ৮৮০০ টাকা, ১৮ তম গ্রেড থেকে ২০০ টাকা বেড়ে ১৭ তম গ্রেডে বেতন হয় ৯০০০ টাকা, ১৭ তম গ্রেড থেকে ৩০০ টাকা বেড়ে ১৬ তম গ্রেডে বেতন হয় ৯৩০০ টাকা, ১৬ তম গ্রেড থেকে ৪০০ টাকা বেড়ে ১৫ তম গ্রেডে বেতন হয় ৯৭০০ টাকা, ১৫ তম গ্রেড থেকে ৫০০ টাকা বেড়ে ১৪ তম গ্রেডে বেতন হয় ১০২০০ টাকা, ১৪ তম গ্রেড থেকে ৮০০ টাকা বেড়ে ১৩ তম গ্রেডে বেতন হয় ১১০০০ টাকা, ১৩ তম গ্রেড থেকে ৩০০ টাকা বেড়ে ১২ তম গ্রেডে বেতন হয় ১১৩০০ টাকা, ১২ তম গ্রেড থেকে ১২০০ টাকা বেড়ে ১১ তম গ্রেডে বেতন হয় ১২৫০০ টাকা, ১১ তম গ্রেড থেকে ৩৫০০ টাকা বেড়ে ১০ম গ্রেডে বেতন হয় ১৬০০০ টাকা, ১০ম গ্রেড থেকে ৬০০০ টাকা বেড়ে ৯ম গ্রেডে বেতন হয় ২২০০০ টাকা, ৯ম গ্রেড থেকে ১০০০ টাকা বেড়ে ৮ম গ্রেডে বেতন হয় ২৩০০০ টাকা, ৮ম গ্রেড থেকে ৬০০০ টাকা বেড়ে ৭ম গ্রেডে বেতন হয় ২৯০০০ টাকা, ৭ম গ্রেড থেকে ৬৫০০ টাকা বেড়ে ৬ষ্ঠ গ্রেডে বেতন হয় ৩৫৫০০ টাকা, ৬ষ্ঠ গ্রেড থেকে ৭৫০০ টাকা বেড়ে ৫ম গ্রেডে বেতন হয় ৪৩০০০ টাকা, ৫ম গ্রেড থেকে ৭০০০ টাকা বেড়ে ৪র্থ গ্রেডে বেতন হয় ৫০০০০ টাকা, ৪র্থ গ্রেড থেকে ৬৫০০ টাকা বেড়ে ৩য় গ্রেডে বেতন হয় ৫৬৫০০ টাকা, ৩য় গ্রেড থেকে ৯৫০০ টাকা বেড়ে ২য় গ্রেডে বেতন হয় ৬৬০০০ টাকা, ২য় গ্রেড থেকে ১২০০০ টাকা বেড়ে ১ম গ্রেডে বেতন হয় ৭৮০০০ টাকা।
২০ তম গ্রেড থেকে ১২তম গ্রেড পর্যন্ত মোট ৮টা গ্রেড মিলিয়ে যেখানে বেতন বাড়ে মাত্র ৩০৫০ টাকা, সেখানে ৭ম গ্রেড থেকে মাত্র ১টা গ্রেড বেড়ে ৬ষ্ঠ গ্রেডে গেলেই বেতন বাড়ে ৬৫০০ টাকা, দ্বিগুণেরও বেশি! একটা গ্রেড পরিবর্তনে যেখানে সর্বোচ্চ বেতন বাড়ে ১২০০০ টাকা, সেখানে শেষের দশটা গ্রেড মিলিয়ে বেতন বাড়ে মাত্র ৭৭০০ টাকা!
বেতন বৃদ্ধির এই ধারা (২৫০<৩০০<২০০<৩০০<৪০০<৫০০<৮০০<৩০০<১২০০<৩৫০০<৬০০০<১০০০<৬০০০<৬৫০০<৭৫০০<৭০০০<৬৫০০<৯৫০০<১২০০০) কি বিজ্ঞানের কোনো সূত্র অনুসরণ করেছে, নাকি গণিতের কোনো সূত্র অনুসরণ করেছে, বুঝতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এটাকে লুডু খেলার মইয়ের সাথে তুলনা করারও সুযোগ নেই। কারণ সেখানে যে-কারো ভাগে বড় মইও পড়তে পারে, ছোট মইও পড়তে পারে। কিন্তু এখানে অন্যদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে শুধু বিভিন্ন আকারের ছোট ছোট মই, আর নিজেদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে সব বড় বড় মই। এখানে প্রতিপক্ষের জন্য বড় মইয়ে ওঠার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি আর যারা খেলাটা আয়োজন করেছে, তাদের ভাগে ছোট মই পড়ার কোনো সম্ভাবনাই রাখা হয়নি। পক্ষপাতিত্ব আর কাকে বলে!
বেতন বৃদ্ধির এই ধারায় ২৫০ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে ২০০ টাকায় নেমে গেছে আবার বাড়তে বাড়তে ৮০০ টাকা পর্যন্ত গিয়ে পা পিছলে হঠাৎ নেমে গেছে ৩০০ টাকায়, আবার বাড়তে বাড়তে ৬০০০ টাকায় গিয়ে শেয়ার বাজারের মতো হঠাৎ নেমে গেছে ১০০০ টাকায়! এভাবে নাটকের পর নাটক হয়েছে মাত্র ২০টা গ্রেডের একটা কাঠামোতে। এটা কি শেয়ার বাজারের দরের উঠানামা?
আমার মনে হয়, যারা এই কাঠামোটা করেছে, তাদের কাছে এই উঠানামার পক্ষে গ্রহণযোগ্য কোনো যুক্তি নেই। এটা সম্পূর্ণ মনগড়া। স্বার্থপরতার সর্বোচ্চ প্রদর্শনী। বিমূর্ত কবিতা সম্পর্কে একটি রম্যরচনা পড়েছিলাম অনেক আগে একটি দৈনিক পত্রিকায়। সেখানে একটি গল্প উল্লেখ করা হয় এরকম, ইংল্যান্ডের একজন প্রসিদ্ধ কবির একটি কবিতার অনুষ্ঠানে এক পাঠক ঐ কবিকে তার একটি কবিতার দু’টি চরণ উল্লেখ করে প্রশ্ন করলো, ‘স্যার, এই দু’টি চরণ দ্বারা আপনি কী বুঝিয়েছেন?’ কবি জবাবে বললেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, কবিতাটি যখন লিখেছিলাম, তখন এই চরণ দু’টির অর্থ শুধু আমি আর ঈশ্বর জানতাম, কিন্তু এখন দেখি শুধু ঈশ্বরই জানেন!’
আমার এক বন্ধু বললো, ‘১২তম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেডে বেতন পায় কর্মচারী ও কামলারা, তাই তাদের গ্রেডে বাড়ে ২০০/৩০০ টাকা করে আর ১ম গ্রেড থেকে ১১তম গ্রেডে বেতন পায় কর্মকর্তা ও আমলারা, এই জন্য তাদের বেতন বাড়ে ৬০০০/৭০০০ টাকা করে।’
আমার মনে হয়, যদি বেতন কাঠামো করার দায়িত্বটা আমলাদেরকে না দিয়ে একজন রিকশাঅলাকেও দেওয়া হতো, সে হয়তো এরচেয়ে আরো গ্রহণযোগ্য ও যৌক্তিক একটা কাঠামো জাতিকে উপহার দিতে পারতো। আমলা ছাড়া যারা এই বেতন কাঠামোর সুবিধার আওতার বাইরে, এমন ১ লক্ষ সচেতন মানুষের মতামত নেয়া হলে এমন ১ জনও খুঁজে পেতে কষ্ট হতে পারে, যে এরকম ধাপ নির্ধারণকে পক্ষপাতহীন ও যৌক্তিক বলে মত দেবে। বাংলাদেশে আমলাদের এক ন্যাক্কারজনক কাজের উদাহরণ হয়ে আমলাতন্ত্রের ইতিহাস যুগ যুগ ধরে কলঙ্কিত করে রাখবে এই বেতন কাঠামো।
বেতন কাঠামোটা এই রকমভাবে প্রণয়ন করে আমলারা প্রমাণ করলো, তারা বাংলাদেশে বৃটিশ বা পাকিস্তানি শোষকদের উত্তরসূরী আর যারা আমলা নয়, তারা তাদের কৃতদাস। আমলাদের এ আচরণ প্রমাণ করলো, তারাই এদেশে সর্বেসর্বা, বাকিরা সব অস্পৃশ্য। আমলারা প্রমাণ করতে চাইলো, তাদের অবদানেই চলছে দেশ, দেশের উন্নতিতে আর কারো অবদান নেই। আমলারা বুঝাতে চাইলো, তারা উল্টাপাল্টা যা-ই করে, তা-ই এদেশের সবাইকে মাথা পেতে মেনে নিতে হবে, দেশে আর কারো কোনো কথা চলবে না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমান সরকার দেশকে উন্নত দেশের কাতারে শামিল করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আমার মনে হয়, দেশের উন্নত হবার পথে এক বড় বাধার নাম আমলাতন্ত্র। জাপানের একটা বিষয় লক্ষ্য করলে আমার এই মতামতের সত্যতা প্রমাণিত হবে। জাপানে শ্রমের মূল্য অনেক বেশি। সেখানে একজন মুচি বা নাপিতের আয়ও দেশের প্রথম সারির পেশাজীবিদের গড় আয়ের অনেকটা কাছাকাছি। দেশের সব নাগরিকের হাতে যেন পর্যাপ্ত টাকা থাকে, সে জন্য জাপান সরকার বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। সেখানে একজন নাপিতের গড় আয় মাসে ২০০০ ডলার। [দেখুন, জাপান কাহিনি ২য় খন্ড, আশির আহমেদ, ঐতিহ্য, পৃষ্ঠা-৬০] অস্ট্রেলিয়ায় যান। দেখবেন, সেখানে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের বেতন যা, একজন সাধারণ শ্রমজীবি মানুষের বেতনও তার প্রায় কাছাকাছি। কিন্তু বাংলাদেশে সব শ্রেণির মানুষের হাতে পর্যাপ্ত টাকা থাক, এটা অন্তত এদেশের আমলারা চায় না। এরা মারাত্মক স্বার্থপর, সঙ্কীর্ণ মনের অধিকারী। যার উৎকৃষ্ট প্রমাণ এই চরম বৈষম্যমূলক বেতন কাঠামো, যেখানে নিচের শ্রেণির এক গ্রেড পরিবর্তনে বেতন বাড়ে ২০০/৩০০ টাকা করে আর উপরের শ্রেণির এক গ্রেড পরিবর্তনে বেতন বাড়ে ৬০০০/৭০০০ টাকা করে। কেন, সব গ্রেডে যদি আনুপাতিকহারে সমানভাবে বেতন বাড়ে, আমলাদের কি মস্ত বড় ক্ষতি হয়ে যাবে বা নিচের শ্রেণির চাকরিজীবীদের বেতন কি আমলাদের চেয়ে বেড়ে যাবে?
বেতন গ্রেডের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন গ্রেডের পার্থক্য বের করে তাকে ১৯ দিয়ে ভাগ করলে যা হয় (৭৮০০০-৮২৫০/১৯=৩৬৭১ বা ৪০০০), প্রতি গ্রেডে পার্থক্য তা হলে অসুবিধা কোথায়? ১৯ দিয়ে ভাগ করার কথা বলা হয়েছে এ কারণে, যেহেতু শেষ গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত ব্যবধান ১৯। আমলারা হয়তো বলতে পারেন, নিচের দিকের গ্রেডগুলোতে জনবল বেশি। তাই তাদেরকে বেশি বেতন দিতে গেলে দেশের অর্থনীতির উপর চাপ পড়তে পারে।
যদি দেশের প্রতি আমলাদের এতোই মায়া থাকে, তাহলে নিজেরা এতো বেতন নিচ্ছেন কেন? এমনিতেই উপরের দিকের গ্রেডে চাকরি করছেন, এরপর বেতন বৃদ্ধিটা যদি নিচের দিকের গ্রেডগুলোর চেয়ে দু’তিন গুণ বেশি হতো, তবু কম হতো না। কিন্তু এদের বেতন বাড়ে নিচের দিকের গ্রেডগুলোর চেয়ে ২০/২৫ গুণ বেশি করে। তাদেরকে এতো বেতন দিতে গেলে দেশের অর্থনীতির উপর কি চাপ পড়ে না? আসলে এসব হচ্ছে বাহানা। নিজেরা বেতন কম নিয়ে দেশপ্রেমের কথা বললে তা সত্যিকার দেশপ্রেম হতো।
বর্তমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী মাসশেষে সরকারের যে টাকা খরচ হয়, আনুপাতিকহারে সবার বেতন সমান হারে বৃদ্ধি করলেও সরকারের খরচ বেশ একটা বাড়বে না। তাছাড়া দেশের সব নাগরিকের প্রতি সুবিচার করতে গেলে যদি দেশের কিছু টাকা বাড়তি খরচ হয়, তা তো আর আমলাদের পকেট থেকে যাবে না! এদেশে সরকার যতো রাজস্ব পায়, তার বেশির ভাগ পায় সাধারণ মানুষ থেকে। অল্প সংখ্যক আমলা মুঠোফোনে কথা বলে প্রতি মাসে সরকারকে যা রাজস্ব দেয়, কোটি কোটি সাধারণ মানুষ মুঠোফোনে কথা বলে সরকারকে তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি রাজস্ব দেয়। দেশের অর্থনীতির বড় চালিকা শক্তি হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স। সেক্ষেত্রে আমলারা সাধারণ মানুষের চেয়ে যোজন যোজন পেছনে। দেশের অর্থনীতিতে আমলাদের চেয়ে সাধারণ মানুষের অবদানই বেশি। তাই সকল গ্রেডে সমান হারে বেতন বৃদ্ধি করলে তা দেশের সামগ্রিক মানুষের অর্থ থেকেই যাবে, আমলারা এ নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই।
আমলাদের স্বার্থপরতার কাছেই জিম্মি হয়ে আছে দেশের উন্নতি। সরকার বিষয়টা যতদিন বিবেচনায় না নেবে, ততদিন দেশ সত্যিকার উন্নতির পথ খুঁজে পাবে না।
পরবর্তী পে স্কেল যখনই দেয়া হয়, কিছু প্রস্তাব বিবেচনায় নেয়ার অনুরোধ থাকবে:
১. প্রতি গ্রেডে ব্যবধান যেন সমান করে দেয়া হয়। এতে উপরের দিকের গ্রেডে যারা চাকরি করে, তাদের কোনো ক্ষতি হবার কথা নয়। কারণ তারা তো বড় স্কেলেই চাকরি শুরু করেছে।
২. প্রতি ৮ বছর পর পর যেন সকল চাকরিজীবির বেতন গ্রেড পরিবর্তন করা হয়, যতদিন চাকরি করে ততদিন। এতে যেসব পদে প্রমোশনের সুযোগ নেই, সেসব পদে চাকরিজীবিদের মনে হতাশা কমবে।
৩. সরকারি চাকরি যেহেতু চার শ্রেণির আর মোট গ্রেড ২০টি, তাই নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০টি গ্রেডকে ৪ শ্রেণি দিয়ে ভাগ করে প্রতি শ্রেণির প্রান্তিক গ্রেডকে সেই শ্রেণিতে নিয়োগের প্রারম্ভিক গ্রেড হিসেবে নির্ধারণ করা হোক। যেমন: প্রথম শ্রেণির চাকরিজীবিদের নিয়োগ হবে ৫ম গ্রেডে, দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিজীবিদের নিয়োগ হবে ১০ম গ্রেডে। তাহলে সব শ্রেণির চাকরিজীবিই নিজের পদ, সম্মান ও বেতন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে; বর্তমান কাঠামোর অনেক জটিলতা এবং অসঙ্গতিও দূর হবে।
৪. সবার জন্য সর্বোচ্চ ৪ বার নতুন গ্রেডে যাবার সুযোগ রাখা হোক। যেমন: তৃতীয় শ্রেণির চাকরিজীবি যারা, তারা ১৫ তম গ্রেডে চাকরি শুরু করবে, এরপর প্রতি ৮ বছর পর পর নতুন গ্রেডে যেতে যেতে শেষে ১১ তম গ্রেড পর্যন্ত পৌঁছবে, এভাবে ১ম শ্রেণির চাকরিজীবিরা ৫ম গ্রেডে চাকরি শুরু করবে, এরপর প্রতি ৮ বছর পর পর নতুন গ্রেডে যেতে যেতে ১ম গ্রেড পর্যন্ত পৌঁছবে। এতে কোনো শ্রেণির চাকরিজীবি নিজের শ্রেণি অতিক্রম করার সম্ভাবনাও থাকবে না, যা বর্তমান কাঠামোয় আছে এবং অযৌক্তিক।
৫. ন্যূনতম দু’টি গ্রেড পরিবর্তন না হলে যেন বাড়ি ভাড়া কমানো না হয়।