ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘বিএনপিতে গণতন্ত্র নেই, আওয়ামী লীগে গণতন্ত্র আছে’

‘বিএনপিতে গণতন্ত্র নেই, আওয়ামী লীগে গণতন্ত্র আছে’
ফাইল ছবি

দীর্ঘদিন বিএনপির উচ্চ পদে থেকেও দলে ‘উপেক্ষিত’ ইনাম আহমেদ চৌধুরী সদ্য দায়িত্ব পেয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে। পুরোনো দল বিএনপি সম্পর্কে তার পর্বেক্ষণ হলো- দলটিতে গণতন্ত্র নেই। যে সব সিদ্ধান্ত হয় সেগুলো এককভাবে নেয়া হয়। দলের নীতি নির্ধারনী ফোরাম স্থায়ী কমিটিও সেসব সিদ্ধান্তের কথা জানে না। নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতার চেয়ে বাণিজ্যকে প্রধান্য দেয়া হয়।

একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ইনাম আহমেদ চৌধুরী। বাংলাদেশ জার্নাল পাঠকদের সাক্ষাৎকারের চুম্বুক অংশগুলো নিচে দেওয়া হলো...

ইনাম আহমেদ চৌধুরী বলেন, পার্থক্য আমার কাছে যেটা মনে হয়, এটা গণ সম্পৃক্ত ভিত্তিক একটা আন্দোলন গড়ে তোলা। আমরা দেখেছি বিএনপির পক্ষ থেকে ওই ধরনের গণভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। সম্ভব হয়নি বলেই হয়নি। এর বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তবে আমি নিজে দেখেছি, মনোনয়ন বাণিজ্য আওয়ামী লীগ আর বিএনপির মুল পার্থক্য। আরেকটি হচ্ছে অন্তর্দ্বন্দ্ব। দলে হঠাৎ একটি ঘটনা ঘটছে কিন্তু কি জন্য ঘটছে তা কেউ বলতে পারে না বা একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কিন্তু স্থায়ী কমিটি বলছে জানি না, মহাসচিব বলছেন জানি না, এই ব্যাপারে আমার সঙ্গে আলোচনা হয়নি। এটা কিন্তু গণতান্ত্রিক চর্চার ব্যাপার।

অপরদিকে আওয়ামী লীগে জনসম্পৃক্ততা অনেক বেশি। আরেকটি বিষয় আওয়ামী লীগ সফলভাবে করতে পেরেছে সেটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং তার বাণী আন্তরিকভাবে সঞ্চারিত করতে পেরেছে দলের মধ্যে।

চৌধুরী সাক্ষাৎকারে আরো বলেন, আমি সব সময়, গণতন্ত্রের চর্চা করতে চেয়েছি। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যখন আমি দেখলাম, মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য করতে তখন আমার কাছে এটা অদ্ভুত ব্যাপার বলে মনে হলো। গণতন্ত্রের চর্চার নামে যেখানে মনোনয়ন বাণিজ্য হয়, সেখানে কি গণতন্ত্রের চর্চা হতে পারে? এটা আমাকে গভীরভাবে আঘাত করলো। তখন আমার মনে হলো, আমি কিসের পেছনে থাকবো?

ইনাম আহমেদ চৌধুরী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা চেষ্টা করে যাচ্ছেন দেশকে উন্নত স্তরে এগিয়ে নিয়ে যেতে, কিছু ভুল-ত্রুটি হয়তো থাকতে পারে। তবে তিনি আজ দেশকে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যেহেতু আমি ত্যাগ (বিএনপি) করলাম, তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম তাকে (শেখ হাসিনা) সমর্থন জানাতে চাই। তার পেছনে থাকতে চাই, তার এই অগ্রযাত্রায় সামিল হতে চাই। এ জন্য কোনও শর্ত নেই, কিছু নেই। আমার কথা হচ্ছে এই যে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শামিল হওয়ার একটি সুযোগ পাওয়া, সমর্থন জানানো, এটা আমার সৌভাগ্য। এজন্যই আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি।

জনগণের সঙ্গে দলটির সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা- এটা খুবই ভালো। সবক্ষেত্রে হয়তো যে সফল হয়েছে তা কিন্তু নয়। আওয়ামী লীগ হঠাৎ করে তৈরি হয়নি বা ফরমায়েশি দল নয়। ইতিহাস থেকে একটি সত্য ভাষন করতে চাই, যখন যুক্তফ্রন্টের জন্ম হয়েছিলো তখন শেরে বাংলা ফজলুল হক সাহেব ছিলেন, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন; এই সব গণনায়কদের আশির্বাদ ছিলো, সহযোগিতা ছিলো। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এলেন। তিনি কিন্তু মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করলেন দলকে গঠন করার জন্য। আমাদের কাছে এই ব্যাপারটি এখন অকল্পনীয় মনে হয়। অনেকে সবকিছু করে মন্ত্রী হওয়ার আশায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী তিনি ছিলেন। তিনি জানতেন জনসম্পৃক্ত একটি দল গঠন করতে না পারলে জনসম্পৃক্ত আন্দোলন কিছুতেই সফল হবে না। এই চিন্তাটি তার মনে এসেছিলো। এটিই আওয়ামী লীগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাপার।

এনএইচ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত