ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

বিখ্যাত এক ‘গাছ বাড়ি’র গল্প

  নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:১৯  
আপডেট :
 ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:৩৮

বিখ্যাত এক ‘গাছ বাড়ি’র গল্প

ঝিনাইদহের শৈলকূপায় রয়েছে বিখ্যাত এক গাছ বাড়ি। এ যেন প্রকৃতির সাথে এক অন্যরকম ভালোবাসা। দুইতলা ভবনের দেয়ালগুলো সব গাছ দিয়ে মোড়ানো। ছাদেও আছে বড় বড় আম-কাঁঠালের গাছ। সামনের বিশাল আঙ্গিনায় মূল্যবান দুর্লভ সব গাছ। রাস্তার ধার দিয়ে লাগানো হয়েছে বনজ গাছ। বাড়ির সেফটি ট্যাংটিও গাছ দিয়ে সাজানো। কেটে-ছেটে নান্দনিক করে তোলা হয়েছে ফুল-ফলের গাছগুলো। যা সকলের নজর কেড়েছে। বাড়িটির নাম হয়েছে গাছবাড়ি।

এই গাছবাড়ি ঝিনাইদহ শৈলকুপা উপজেলার লক্ষ্মনদিয়া গ্রামে অবস্থিত। শখের বসে যিনি বাড়িটি করেছেন তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. আমিনুল ইসলাম। বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করেন। ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের শৈলকূপার চাঁদপুর নামক স্থান থেকে আনুমানিক ৪ কিলোমিটার পূর্বে গেলেই চোখে পড়বে প্রত্যন্ত অঞ্চলের লক্ষ্মনদিয়া গ্রামটি। যে গ্রামের দক্ষিণপ্রান্তের প্রথম বাড়িটি হচ্ছে গাছবাড়ি।

লক্ষ্মনদিয়া গ্রামের ওই বাড়ির মালিক জানালেন এই বাড়ি তৈরির ইতিকথা। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। গ্রামের নারীদের দিয়ে সূচি শিল্পের (কাপড়ে নকশা তোলা) কাজ করান। প্রথমে নিজ গ্রামের নারীদের দিয়ে কাজটি করালেও বর্তমানে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই কাজ ভালো ভাবে করতে ২০১৪ সাল গ্রামের বাড়িতে একটি ভবন নির্মাণ করেন। কিন্তু গ্রামের নারীরা সেই ভবনে বসতে চান না, তারা নিজেদের বাড়িতে কাজ নিয়ে যান আবার কাজ শেষে তৈরি পণ্যটা দিয়ে যান। এতে তার নির্মাণ করা বাড়িটি অনেকটা অকেজো হয়ে যায়। আর তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন এই বাড়িটিতে গাছের সংগ্রহশালা তৈরি করবেন।

গাছের সংগ্রহশালা করতে বাবার দেয়া জমির সঙ্গে তিনিও কিছু জমি ক্রয় করেন। এভাবে ১৪ বিঘা জমির উপর এই গাছের সংগ্রহশালা তৈরি করেছেন। দেশ-বিদেশ থেকে গাছ পছন্দ করে নিয়ে আসেন তিনি। এরপর এই সংগ্রহশালায় লাগিয়ে বড় করে তোলেন।

পরে বেলজিয়াম, পর্তুগাল, মালয়েশিয়া, ভারত, দুবাইসহ একাধিক দেশ থেকে গাছ নিয়ে সেখানে লাগান তিনি।

আমিনুল ইসলামের ভাষায় বর্তমানে তার এই সংগ্রহশালায় নানা প্রজাতির প্রায় ৫ হাজার গাছ রয়েছে। প্রতি মাসেই এই গাছের সংখ্যা আরো বাড়ছে। তিনি ঢাকা থেকে প্রতি মাসে বাড়িতে আসেন। আসার সময় সঙ্গে নিয়ে আসেন নানান ধরনের গাছ।

গাছ বাড়িতে রিটা, নাগলিংগম, এ্যামাজিন, লিলি’র মতো মূল্যবান গাছ রয়েছে। আবার রয়েছে দেশিয় ষড়াসহ নানান গাছ। যে গাছটি জঙ্গলে হয়ে থাকে, সেটা তিনি এই বাড়িতে লাগিয়ে সুন্দর করে রেখেছেন। এছাড়া বাড়িটির দেয়ালে ‘ওয়াল কার্পেট’ নামের গাছ দিয়ে মোড়ানো রয়েছে। গোটা বাড়ির চারিপাশে ৫ শত চারা রোপণ করেন। যা পরবর্তীতে গোটা দেয়াল ঘিরে রেখেছে। ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া অনেক গাছও লাগিয়েছেন আমিনুল ইসলাম।

ছোট বেলা থেকেই গাছের প্রতি তার একটা আগ্রহ ছিল। এরপর কর্মজীবনে যাওয়ার পর নানা ভাবে গাছ সংগ্রহ করেন। ঢাকার বাসায় তিনি ছাদ বাগান করেছেন। আর গ্রামের বাড়িতে গাছের সংগ্রহশালা করেছেন। স্থানীয়রা বাড়িটিকে গাছবাড়ি হিসেবে নাম দিয়েছেন।

আরো পড়ুন

ডাইনোসরের পালকে ছিল ডানাওয়ালা উকুন!​

আসছে ডানাওয়ালা জাহাজ, বদলে যাবে ইতিহাস!​

মাল্টা চাষে দিনাজপুরের রাসেলের সাফল্য

বাংলাদেশ জার্নাল/এনকে/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত