নীলা হারুন-এর কবিতা ‘কৈশোরের স্বপন’
কবিতা ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২০, ১৩:৫৬ আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২০, ১৪:০১
শেষ বিকেলে কাঞ্চনপুঁটি মাছ ভাজার সুবাস ভেসে আসে।
হাঁসেরা তালের খোলের মত ঠোঁট মেলে ডাকে গ্রামের আনন্দ,
তাদের চ্যাপ্টা পায়ে কাদামাখা স্যান্ডেলের শব্দ শোনা যায় ছপাছপ।
মুড়িডোবা চা অত মিষ্টি হয় কেন কে জানে?
আমার মন চায় সদ্য শুকিয়ে আনা মায়ের শাড়ি আর বাবার লুঙ্গিটা মাথার নিচে পাগড়ি বানিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকি।
ভাইবোনেরা আবার শিশু হয়ে যাক, তাদের ভেজা কাঁথা দুলুক বারান্দা জুড়ে।
চেরাগ বাতিতে দাদীর মুখ যেন সোনালী পুতুল।
আমার ধারণা বিরাট সবুজ ওই কাঠের বাক্সে একসময় রাজার মুকুট লুকিয়ে রাখা হত।
পাশের ঘরে দাদাজানের সালিশী কণ্ঠ টের পাওয়া যায়।
শহরের ক্লান্ত অংক কষতে কষতে - আমি গ্রামে যাবার এইসব স্বপ্ন দেখি।
নানী যেন অনেকদিন বাঁচে, তা নাহলে আমাদের মুড়কি বানিয়ে খাওয়াবে কে? নানী ছাড়া জগতে আর কেউ মিঠা আমসত্ত্ব বানায় না।
নানাজানের লাঠিটায় আমার বড় লোভ, ওটাকে দেখলে মুসা নবীর লাঠির কথা মনে পড়ে।
লাঠি রেখে নানাজান ঘুমিয়ে গেছে কবরে।
দাদীও মিলিয়ে গেছে পূর্বনারীর তালিকা ধরে।
গাঁয়ের বাজারে আর কবে সমাদরের চা খেতে যাব?
লোকেরা আবার আগের মত সুখী সরল হয়ে যাক।
আমি গ্রামে যেতে চাই। শিশুকালের মত। যখন সারা গ্রামকে ঘুমে রেখে আমি বৃষ্টি দেখতে বেরোতাম চুপিচুপি।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ