ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

মাদানী নিয়মিত পর্নোগ্রাফি দেখতেন: পুলিশ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২১, ১৩:৫৫

মাদানী নিয়মিত পর্নোগ্রাফি দেখতেন: পুলিশ
রফিকুল ইসলাম মাদানী

‘শিশু বক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। বক্তা হিসেবে আলোচিত এই ব্যক্তির ব্যক্তিজীবনও বেশ আলোচিত। তার থেকে জব্দ করা মোবাইল ফোনে বেশ কিছু আপত্তিকর অশ্লীল ভিডিও পেয়েছে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।

মঙ্গলবার (১৩ এপিল) গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার ইলতুৎ মিশ।

তিনি জানান, মাদানী নিয়মিত নীল ছবি দেখাসহ রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তার বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(৫) (ক) ধারা যুক্ত করা হবে।

এর আগে গত ৭ এপ্রিল নেত্রকোনার নিজ বাড়ি থেকে মাদানীকে আটক করে র‍্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে গাজীপুরের গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে র‍্যাব। এরপর থেকে তিনি গাজীপুর জেলা হাজতে রয়েছেন।

৭ এপ্রিল গ্রেপ্তারের পর র‌্যাবের একটি সূত্র জানিয়েছিলো, আসমা বেগম নামের এক নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন বলে যে দাবি করেছেন তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। ওই নারীর সঙ্গে রফিকুলের সামাজিকভাবে বিয়ে হয়নি।

‘শিশু বক্তা’ হিসেবে হঠাৎ পরিচিত হয়ে ওঠা রফিকুল ইসলাম কিছুটা অস্বাভাবিক খর্বকায়, বালকসুলভ চেহারা ও কোমল কণ্ঠস্বরের অধিকারী। তার নিজের ভাষ্যমতে, ‘১৯৯৫ সালে আমার জন্ম। কে বলছে আমি শিশু? আমার বয়স ২৬ বছর।’

রফিকুল ইসলামের বাড়ি নেত্রকোনায়। স্থানীয় স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু হলেও পরে তিনি মাদ্রাসায় ভর্তি হন ও নূরানি, হেফজ পড়েন। এরপর আট বছর কিতাবখানায় পড়েন।

মাদ্রাসার ছাত্র থাকার সময় বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে ওয়াজ করতেন রফিকুল। তিনি দাওরায়ে হাদিস পড়েছেন রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসায়। একই সঙ্গে তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের অঙ্গসংগঠন যুব জমিয়তের নেত্রকোনা জেলার সহ-সভাপতি। নেত্রকোনার পশ্চিম বিলাশপুর সাওতুল হেরা মাদ্রাসার পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে আসছেন রফিকুল।

রফিকুলের নামের শেষে ‘মাদানী’ শব্দ যুক্ত করা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। সাধারণত সৌদি আরবের মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করেন, তাদের নামের সঙ্গে ‘মাদানী’ যুক্ত করা হয়। অভিযোগ, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা না করেই নিজের নামের সঙ্গে ‘মাদানী’ শব্দ যুক্ত করেছেন তিনি।

এরই মধ্যে ‘মাদানী’ শব্দ প্রত্যাহার করতে রফিকুলকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী। তার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শরীফুল হাসান খান গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই নোটিশ পাঠান।

বিতর্কিত বক্তা হওয়ায় রফিকুল ইসলামকে ওয়াজকারী বক্তাদের সংগঠন রাবেতাতুল ওয়ায়েজিন বাংলাদেশের সদস্য করা হয়নি। বরং সংগঠনটির পক্ষ থেকে তাকে বিভিন্ন সময় অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য না দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গত ২৫ মার্চ যুব অধিকার পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ করার সময় ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে রফিকুলকে আটক করেছিল পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। ওই ঘটনার মামলায়ও তাকে আসামি করা হয়নি।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত