ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

এলএসডি সেবনের পর নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সরবরাহ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২২, ২০:৫১

এলএসডি সেবনের পর নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সরবরাহ

রাজধানীর ভাটারা এলাকার জামিয়া মাদানি মসজিদ রোড থেকে ১৩৮ পিস ভয়ংকর মাদক এলএসডিসহ নাজমুল ইসলাম বিশ্বাস (২৬) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিপার্টমেন্ট অব নার্কোটিকস কন্ট্রোল বা ডিএনসি) ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (দক্ষিণ)।

গ্রেপ্তারের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছে, ২০১৭ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে পরিবেশ বিজ্ঞানে স্নাতকে অধ্যয়নের সময় বন্ধুদের মাধ্যমে এই মাদকের সংস্পর্শে আসে নাজমুল। এরপর এই মাদকে আসক্ত হয়ে পরে নাজমুল। আসক্ত হয়ে নিজেই বিদেশ থেকে এলএসডি নিয়ে আসতে শুরু করে। তারপর থেকে মাদক সেবনের সাথে হয়ে যায় বিক্রেতাও। আর অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে এই ভয়ংকর মাদক বিক্রি করে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে। এই মাদক সেবন ও বিক্রির দায়ে ২০২১ সালে প্রথমবার নাজমুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে গ্রেপ্তারের ৪ মাস পর জামিনে বের হয়ে আবারও এলএসডি সেবন ও কারবারের সঙ্গে জড়িয়ে যায় নাজমুল।

বুধবার ডিএনসির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ কার্যালয় আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএনসির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল।

তিনি বলেন, গতকাল রাতে ভাটারা এলাকার জামিয়া মাদানি মসজিদ রোড থেকে ডিএনসির এক অফিসার ক্রেতা সেজে ২৫ পিস রঙ্গিন প্রিন্টেড ব্লট পেপার স্ট্রিপ এলএসডিসহ নাজমুল ইসলাম বিশ্বাসকে (২৬) হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেন। পরে তার দেয়া তথ্যমতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি ব্লকের ৭ নম্বর রোডের তার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানো হয়। সেই ফ্ল্যাটের কাঠের টেবিলের ড্রয়ার থেকে আরও ৭১ পিস রঙিন প্রিন্টেড ব্লট পেপার এলএসডি এবং ৪২ পিস হোয়াইট ব্লট পেপার স্ট্রিপ এলএসডি জব্দ করা হয়। এ সময় অনুসন্ধানের স্বার্থে তার ব্যবহৃত ১টি ল্যাপটপ এবং ১টি মোবাইল সেট জব্দ করা হয়।

জাফরুল্ল্যাহ কাজল বলেন, নাজমুল ইসলাম বিশ্বাসের গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়া থানার নগরবাড়িতে। সে ঢাকায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি ব্লকের ৭ নাম্বার রোডে একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে।

নাজমুলকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের এই কর্মকর্তা বলেন, নাজমুল ২০১৭ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে পরিবেশ বিজ্ঞানে স্নাতকে অধ্যয়নের সময় এই মাদকের সংস্পর্শে আসে। তখন বিদেশে অধ্যয়নরত তার বন্ধুদের থেকে সে এই মাদক সংগ্রহ করতো বলে জানায়। পরবর্তীতে সে ডার্ক ওয়েব ও বিটকয়েন ব্যবহার করে এই মাদক বিদেশ থেকে বাংলাদেশে নিয়ে এসে এর বাজার সৃষ্টির প্রয়াস চালায়।

তিনি আরও বলেন, এর আগে নাজমুল ২০১৭ সালে পুলিশের হাতে ১০ পিস এলএসডিসহ গ্রেপ্তার হয়। গ্রেপ্তারের ৪ মাস পর জামিনে বের হয়ে আবারও এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ সে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৪০ পিস এলএসডি দেশে নিয়ে আসে। যার মধ্যে ১৩৮ পিস সহকারে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল বলেন, অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে নাজমুল এলএসডির অর্ডার করে যুক্তরাষ্ট্রে। পরে সে ইন্টার কারেন্সি বিটকয়েনের মাধ্যমে অর্ডারে মূল্য পরিশোধ করে। সর্বশেষ পর্যায়ে এই মাদক আন্তর্জাতিক কুরিয়ারের মাধ্যমে তার কাছে দেশে পৌঁছায় বলে আমাদের জানায়। তবে এসব তথ্য আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি সঠিক কিনা।

এলএসডি দেশে ছড়িয়ে দিতে আন্তর্জাতিক কোনও চক্র কাজ করছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা সব সময় চেষ্টা করে সারা বিশ্বে মাদক ছড়িয়ে দিতে। আমাদের দেশের যুবসমাজ মাদক ব্যবসায়ীদের টার্গেটে রয়েছে। তবে আমরা মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতিহত করার জন্য সচেষ্ট রয়েছি এবং গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছি।

বিদেশে কার কাছ থেকে নাজমুল এলএসডি দেশে নিয়ে আসতো এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএনসির এই কর্মকর্তা বলেন, কোনও ব্যক্তি বিশেষের কাছ থেকে নাজমুল এলএসডি দেশে নিয়ে আসতো না। সে বিভিন্ন বিদেশি অনলাইন সাইট ব্যবহার করে এলএসডির অর্ডার দিতো। পরে সে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কুরিয়ার ব্যবহার করে দেশে এ মাদক নিয়ে আসতো।

বাংলাদেশ জার্নাল/ এফজেড/এমএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত